চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বয়স নয়, কাজে পরিচয়!

ঢাকার পাশাপাশি স্টার, সুপারস্টারদের ভিড়ে কলকাতার সিনেমাতেও আলাদা উজ্জ্বলতায় নিজের স্বকীয় অবস্থান তৈরী করেন জয়া

সৃজনশীলতা, সৃষ্টিশীলতার চর্চা যারা করেন- তাদের কাছে বয়স শুধুমাত্র কেবল একটি সংখ্যা! যে সংখ্যা নিয়ে তারা মোটেও বিচলিত হন না, সেটা হোক নয় কিংবা নব্বই! উল্টো বয়সের মুখে ছাই দিয়ে নিমগ্নচিত্তে নতুন কাজের তেষ্টায় মাতেন। তেমনই একজন কাজ পাগল অভিনেত্রী জয়া আহসান।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন বাংলাদেশ, ভারতের তারকা নির্মাতা, অভিনেতা থেকে শুরু করে সাধারণ ভক্ত অনুরাগীরাও। আলোচনায় উঠে আসছে জয়া অভিনীত টেলিভিশন-সিনেমার অতীত কাজগুলোর কথাও, যে কাজগুলো নিয়ে দর্শকের আছে মুগ্ধতা।

কেউ কেউ সমালোচনা করতেও ছাড় দিচ্ছেন না। প্রিয় অভিনেত্রীর উদ্দেশ্যে অভিযোগের সুরে কেউ কেউ বলছেন, কলকাতার সিনেমাগুলোতে একঘুয়েমি ঠেকছে তার অভিনয়! তবে এটা মানতে নারাজ আরেক অংশ। যারা একঘুয়েমির অভিযোগ তুলছেন, তাদের চোখে আঙুল দিয়ে ‘বিজয়া’ এবং ‘কণ্ঠ’ দেখারও পরামর্শ দিয়েছেন।

শিল্পীর কাজ নিয়ে আলোচনা হবে, সমালোচনাও হবে। এগুলো একজন শিল্পীকে আরো পোক্ত করে। প্রকৃত শিল্পী সমালোচনার মুখোমুখি হতে ভয় পান না। বরাবরই সমালোচনাকে সাবলীলভাবে মোকাবেলা করেন জয়া আহসান।

তবে বরাবরই জয়া আহসানের জন্মদিবসকে কেন্দ্র করে একটি অন্য বিতর্ক উস্কে উঠে। মজারচ্ছলেই কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, ‘জয়ার বয়স কতো?’

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইন্টারনেটভিত্তিক বহুভাষী উন্মুক্ত বিশ্বকোষ ‘উইকিপিডিয়া’র তথ্যমতে জয়ার ৩৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। বছর তিনেক আগে এই মুক্ত তথ্য ভাণ্ডার থেকে জয়ার বয়স নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া হয়েছিলো। তখন বলা হয়েছিলো জয়ার বয়স ৪৬! এমন তথ্যে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় জয়া আহসানকেও।

পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বয়স নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করেন জয়া। সেসময় জানিয়েছিলেন,‘আমি প্রথম ও শেষবারের মতো সবার উদ্দেশ্যে বলতে চাই: বয়স নয়। একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তার কাজে।’

তিনি আরো বলেছিলেন, ‘৪৬ কিংবা ৫৬ কিংবা তার চেয়েও বেশি বয়স হলেই অভিনেত্রীরা কাজের অযোগ্য কিংবা তারুণ্যদীপ্ত চরিত্রে অভিনয় করতে পারবেন না-এমন ধারণা বিশ্বের কোনো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিই পোষণ করে না। তাই ব্যক্তি জয়া আহসানের যে বয়স, তা নিয়ে আমি এতটুকু বিচলিত নই।’

‘একজন শিল্পীর প্রকৃত পরিচয় হওয়া উচিত তার কাজে’- সত্যিই, জয়া তার উচ্চারিত কথার মতোই নিজেকে পরিচালিত করেছেন। অন্তত তার ক্যারিয়ার গ্রাফ সেটাই বলে। তার ধারাবাহিক অসাধারণ সব কাজের কাছে নত হয়েছে সব কিছু।

২০০৪ সালে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘ব্যাচেলর’ দিয়ে সিনেমায় অভিষিক্ত হন জয়া আহসান। প্রায় দেড় যুগের সিনেমা ক্যারিয়ারে অসংখ্য কাজের জন্য দেশ-বিদেশে আলোচিত ও প্রশংসিত হয়েছেন তিনি।

নূরুল আলম আতিকের ‘ডুব সাঁতার’ যেমন তার প্রশংসা এনে দিয়েছে, তেমনি নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর ‘গেরিলা’ এনে দিয়েছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। অরিন্দম শীলের ‘আবর্ত’ ছবির মাধ্যমে ২০১৩ সালের দিকে পশ্চিম বঙ্গের সিনেমায় পা রাখার পর জয়া আহসান অংশ হয়ে উঠেন টলিউডেরও! ঢাকার পাশাপাশি স্টার, সুপারস্টারদের ভিড়ে কলকাতার সিনেমাতেও আলাদা উজ্জ্বলতায় নিজের স্বকীয় অবস্থান তৈরী করেন।

অরিন্দম ছাড়াও কাজ করেছেন কলকাতার সেরা নির্মাতা সৃজিত মুখার্জী, কৌশিক গাঙ্গুলী, নন্দিতা-শিবপ্রসাদদের সাথে।

ঢাকার সিনেমাতেও রেখেছেন সমান ব্যস্ততা। নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সি-তে সিনেমার প্রথম প্রযোজনা ‘দেবী’ দিয়ে যেমন তুমুল আলোচনা তৈরী করেছেন, তেমনি ছবিটিকে ব্যবসায়িকভাবে সফলতাও এনে দিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে তার অভিনীত একাধিক ছবি। এরইমধ্যে একটি সিনেমার জন্য প্রযোজক হিসেবে ২০২০-২১ অর্থ বছরে সরকারি অনুদানও পেয়েছেন জয়া। ‘দেবী’ অনম বিশ্বাসকে দিয়ে নির্মাণ করলেও তার প্রযোজনায় এই সিনেমাটি পরিচালনা করবেন মেজবাউর রহমান সুমন।