আর্লিং হালান্ডকে থামাবেন কিভাবে? —নরওয়েজিয়ান ‘বিস্ময়’ তারকার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের প্রেক্ষাপটে প্রশ্নটা যেকোনো প্রতিপক্ষের সামনে এসেই যায়! জানতে চাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারলেন না বরুশিয়া ডর্টমুন্ড অধিনায়ক মার্কো রিউস। অকপটে স্বীকার করলেন, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তাদের প্রথম এবং প্রধান ভয় ডর্টমুন্ডের সাবেক স্ট্রাইকার হালান্ডই!
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কয়েকঘণ্টা বাদে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ডর্টমুন্ডের সাথে ফের দেখা হবে হালান্ডের। গত মৌসুমেও যে ক্লাবের আক্রমণে শক্তি যোগাতেন তিনি। এবার তাকে নিয়ে চিন্তায় জার্মান ক্লাবটি। প্রতিপক্ষ বনে যাওয়া গোলমেশিনকে চোখে চোখে রাখতে হবে এডিন টার্জিকের দলের। সফরকারীরা আশা করছে, অন্তত এই দিনটি যেন হালান্ডের না হয়!
বুন্দেসলিগায় খেলা দলটির অধিনায়ক রিউস কোনো রাখঢাক না রেখেই জানিয়ে দিয়েছেন, ২২ বর্ষী স্ট্রাইকারকে থামানো ‘অসম্ভব’। জার্মান তারকার মতে, শুধু থামালেই হবে না, রীতিমতো দোয়া পড়তে হবে, হালান্ড যেন নিজের সেরা ছন্দে না থাকেন। এতশত পরিকল্পনা কারণ ডর্টমুন্ড অধিনায়কের বিশ্বাস, সাবেক ক্লাবের প্রতি মাঠে একটুও দয়া দেখাবেন না হালান্ড।
জার্মান ক্লাব ছেড়ে বাবার সাবেক ক্লাব ম্যানসিটিতে এ মৌসুমেই এসেছেন হালান্ড। প্রিমিয়ার লিগে নেমে টানা দুই হ্যাটট্রিকে ৬ ম্যাচে পেয়ে গেছেন রেকর্ড ১০ গোল। সিটিজেন জার্সিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ফুলকি ছোটাচ্ছে তার পা, সেভিয়ার বিপক্ষে জালে বল জড়িয়েছেন দুবার। এমন উড়ন্ত ফর্মে থাকা খেলোয়াড়কে নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়তি পরিকল্পনা থাকাটা অস্বাভাবিকও নয়।
রিউসকে এক সাংবাদিক বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, হালান্ডকে থামাবেন কিভাবে? এমন প্রশ্ন আসবে বলে নিশ্চিতই ছিলেন তিনি। বলেছেন, ‘হালান্ডকে থামানো কঠিন।’
সঙ্গে পরিকল্পনাও ফাঁস করেছেন রিউস, ‘অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে, যা ঘটতে চলেছে সেটা যতটা সম্ভব অনুমান করে সেভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়া। পুরো ৯০ মিনিটে যতটা সম্ভব তার কাছাকাছি থাকা এবং থামানোর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। সবশেষে আশায় বুক বাধতে পারেন, দিনটি হালান্ডের সেরা দিন যেন না হয়।’
প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে জয়ের চিন্তা তো বহুদূরে, ড্র করার কথাও ভাবছে না জার্মান ক্লাবটি। প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে অন্তত সম্মান নিয়ে ফেরাই তাদের লক্ষ্য। ডর্টমুন্ড সমর্থকদের জন্য অস্বস্তিকর তথ্য হচ্ছে, ইংলিশ কোনো ক্লাবের বিপক্ষে ২০১৩ সালের পর জয়ের স্বাদ নেই ডর্টমুন্ডের।
বুন্দেসলিগার ক্লাবটির চিন্তার কারণ যেমন পেপ গার্দিওলার স্ট্রাইকার-ফরোয়ার্ডদের ফর্মের তুঙ্গে থাকা, তেমনি ক্লাবটির বিপক্ষে ইতিহাসও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবশেষ ৮ ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছে ডর্টমুন্ড। গোল ব্যবধান সেখানে চোখ কপালে ওঠার মতো, এসময়ে ৩০ গোলের বিপরীতে ৯ বার বল জালে জড়িয়েছে তারা।
ইতিহাদে বুধবার রাত ১টায় সিটির তোপে বিধ্বস্ত হতে পারে ডর্টমুন্ড, বিষয়টি মানছেন রিউসও। তবে নিজ দলের খেলোয়াড়ের প্রতি বিশ্বাসটা আছে তার। এতে ফলাফল কিছুটা ঠিকঠাক হবে আশা জার্মান মিডফিল্ডারের, ‘ম্যানচেস্টারে এই মুহূর্তে হালান্ড যেভাবে পারফর্ম করছেন এটা সত্যিই ভাববার।’