পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বেই হারিয়েছিল শক্তিশালী ভারতকে। শিরোপার লড়াইয়েও যুবাদের খেলায় ছিল সেই ধার। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলে তানভীর হোসেনের দল। শেষদিকে গুরকিরাত সিংয়ের অনবদ্য পারফর্ম্যান্স ম্যাচে ফিরতেই দিল না নোভা-মিরাজুলদের। আর তাতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হল বাংলাদেশের।
সাফ অনুর্ধ-২০ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে ৫-২ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের হয়ে একাই চারটি গোল করেছেন গুরকিরাত।
ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে ৩০ সেকেন্ডের মাথায় হোচট খায় বাংলাদেশ। লাল-সবুজদের গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় ভারত। স্পট কিক থেকে গোল করে শুরুতেই স্বাগতিকদের লিড এনে দেন গুরকিরাত সিং।
১ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরের বিশ মিনিট প্রতিপক্ষের রক্ষণে হামলে পড়েন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা। তবে জালের দেখা পাননি কেউই। দশম মিনিটে রফিকুল ইসলামের শট একটুর জন্য জালে জড়ায়নি।
সময় গড়াতে থাকলে আক্রমণে ধার বাড়ায় স্বাগতিকরাও। তবে বেশকিছু সহজ সুযোগ পেয়েও স্কোরশিটে নাম লেখাতে পারেননি কেউই। ৩২তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত গুরকিরাতের নেয়া শট চলে যায় বারপোস্টের উপর দিয়ে।
২ মিনিট পরে আবারও সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে এবারও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি গুরকিরাত। ৩৯তম মিনিটে হিমাংশুর দুর্দান্ত শট ফিরিয়ে দেন বাংলোদেশের গোলরক্ষক। ৪৪ তম মিনিটে গোলপোস্টের কাছে বল পেয়েও লক্ষ্যভেদ করতে ব্যর্থ হন তাইসন।
প্রথমার্ধের বাকি তখন মাত্র এক মিনিট, এমন সময় রফিকুলের বাড়ানো বলে দুর্দান্ত এক গোল করে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান রাজন হাওলাদার। ১-১ গোলের সমতা নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে দু’দল।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় বাংলাদেশ। এ অর্ধের মাত্র তিন মিনিটের মাথায় শাহিন মিয়ার গোলে এগিয়ে যায় লাল-সবুজের দল। তবে লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি তানভির হোসেনের দল।
৬০ তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে এক দুর্দান্ত শটে লক্ষ্যভেদ করেন গুরকিরাত। সমতায় ফেরার পর আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। পাল্টা আক্রমণে পিছিয়ে ছিল না বাংলাদেশও।
৬৭ তম মিনিটে একটুর জন্য বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সের ভেতর থেকে নেয়া হিমানশুর শট গোলরক্ষকের হাতে লাগলেও বল এগোচ্ছিল গোলের দিকে। গোল লাইনের সামনে থেকে বল ক্লিয়ার করে সে যাত্রা বাঁচিয়ে দেন শাহিন মিয়া।
৬৯ তম মিনিটে সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। গোলের সোমনে থেকে নেয়া মোহাম্মদ নাহিয়ানের শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
নির্ধারিত সময়ের মতোই অতিরিক্ত সময়েরও শুরুতেই হোচট খায় বাংলাদেশ। তবে এবার আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেন তানভীর হোসেনের দল। ৯২ তম মিনিটে হিমানশুর গোলে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। বটম কর্ণার থেকে দুর্দান্ত শট নিয়ে পরের মিনিটেই লিড দ্বিগুণ করেন গুরকিরাত। এ গোলে হ্যাটট্রিকও পূরণ হয় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার।
৯৯ তম মিনিটে আবারও গোল করেন গুরকিরাত। সেই সাথে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গও। ৫-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারতের যুবারা।