নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকমের তহবিল অন্য কোম্পানিতে সরিয়ে নেওয়া এবং ট্রেড ইউনিয়ন ও আইনজীবীর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর অভিযোগের সত্যতা খুঁজে বের করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রয়োজনীয় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া যথাযথ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার গ্রামীণ টেলিকম সংক্রান্ত বিষয়টি নিষ্পত্তির আদেশে এই পর্যবেক্ষণ দেন। আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক–কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু, অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক। গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
আইনজীবীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী লভ্যাংশের বকেয়া পাওনাকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক–কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে গত বছর হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়।
একপর্যায়ে লভ্যাংশের অর্থ প্রদানের বিষয়ে সমঝোতার পর গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করা ১১০টি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। যেখানে ১৭৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সর্বমোট পাওনা টাকার পরিমাণ বলা হয় আনুমানিক ৪৩৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে ১৬৮ জনের পাওনা পরিশোধ করা হয়েছে জানিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষের আইনজীবী বলেন, এর বাইরে চারজন মারা গেছেন ও চারজন বিদেশে থাকায় তাদের পাওনা পরিশোধ বিলম্বিত হচ্ছে।
অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুতদের কাছ থেকে নেয়া আইনজীবীর ফি’ নিয়ে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। পরবর্তীতে আদালত গ্রামীণ টেলিকমের লভ্যাংশের অর্থ প্রদানের বিষয়ে সমঝোতা চুক্তি ও পাওনা পরিশোধের বিবরণী হলফনামা আকারে দাখিল করতে বলেন।
সে অনুযায়ী অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী হলফনামা আকারে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন যে ১৬ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন। এছাড়া ১০ কোটি টাকা ছিল অন্যান্য ফি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে জমা দিয়েছেন। সে অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।