বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন চক্ষু চিকিৎসকদের চোখের চিকিৎসার সময় অনেক সচেতন নিয়ে সেবা দিতে হবে। শুধু চশমা দিয়ে সেবা দিলে হবে না। চোখের রোগীর ফান্ডাস পরীক্ষা না করে সেবা দেয়া যাবে না। অর্থাৎ গ্লুকোমা স্ক্রিনিং করেই সেবা দিতে হবে।
মঙ্গলবার ১২ মার্চ বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ-২০২৪ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এবারের বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ-২০২৪ এর প্রতিপাদ্য ‘এক সাথে হাত ধরি/ গ্লুকোমা মুক্ত বিশ্ব গড়ি’।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যে কোন রোগী আসলে সকল ধরণের চিকিৎসা দিতে হবে। চোখের সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সেবা দিতে হবে। কারণ চোখের রোগগুলো বেশী জটিল। তাই সচেতনভাবে সেবা দিতে হবে। রোগীদের চক্ষু রোগের স্ক্রিনিং বিশেষ করে গ্লুকোমা রোগী বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবির মুখে কৃষকরা চশমা পড়ে ফসল তোলার ফলে চোখের আলসার অনেক কমে গেছে। চক্ষু রোগ প্রতিরোধে গবেষণা করতে হবে। আমাদের কাছে ময়মনসিংহ বিভাগের গ্লোকোমা রোগী বেশী আসছে। কেন এ অঞ্চলে গ্লুকোমা বেশী হয়, তা নিয়ে গবেষণা করতে হবে।
উপাচার্য বলেন: গ্লকোমা চোখের নিরব ঘাতক। এটা চোখের এমন একটি রোগ, যাতে চোখের চাপ বেড়ে গিয়ে, চোখের পেছনের স্নায়ু অকার্যকর হয়ে ধীরে ধীরে চোখের দৃষ্টি চলে যায়। গ্লকোমা হল বাংলাদেশ তথা পৃথিবীতে অনিবারণ যোগ্য অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। যে কোন বয়সে এ রোগ হতে পারে। জন্মের সময় বেশ বড় চোখ এবং চোখের চাপ নিয়ে জন্মালে, একে কনজেনিটাল গ্লকোমা বলে। তরুন বয়সেও হতে পারে, এক বলে জুভেনাইল গ্লকোমা। বেশীর ভাগ গ্লকোমা রোগ ৪০ বছরের পরে হয়। এদের প্রাথমিক গ্লকোমা বলে। এছাড়াও, পারিবারিকভাবে যাদের এ রোগ আছে, যারা মাইনাস পাওয়ার চশমা পড়েন, যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে, তাদের মধ্যে এ রোগ হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ কোন হাসপাতালে অভিজ্ঞ চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে চোখের ছানি অপারেশন সহ বিভিন্ন অপারেশন করালে অপারেশন পরবর্তী গ্লকোমা রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করা যায়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল ওয়াদুদ, কমিউনিটি অফথালমোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ শওকত কবীর, বাংলাদেশ গ্লুকোমা সোসাইটির সভাপতি (ইলেক্ট) অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহ্ নূর হাসান বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল খালেক প্রমুখসহ বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টগণ উপস্থিত ছিলেন।