সিটি করপোরেশনের বাইরে গার্মেন্টসে চাকরি করেন হাওয়া বেগম। তাই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে সাধারণ ছুটির দিনেও অফিস তার! কারণ তার গার্মেন্টসটি পড়েছে সিটি করপোরেশনের বাইরে।
নান্দুয়াইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থিত ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বললেন: সকালে এসে দু’ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু মেশিন খারাপ থাকায় ভোট দিতে পারিনি। অফিস সিটির বাইরে তাই মালিকও ছুটি দেয়নি। লাঞ্চে এখন জোর করে এলাম। ভোট দেবো না এসে তো আর পারি না।
এই গল্প শুধু হাওয়া বেগমের না। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরও অনেকে জানালেন সকালে এসে ভোট দিতে না পারার কথা। ফিরে গিয়ে বাধ্য হয়ে আবার এসেছেন ভোট দিতে। কিন্তু তাতেও বিপত্তি। ইভিএম জটিলতায় আবার ঘণ্টা পার হবার উপক্রম।
নান্দুয়াইন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো: শাহিনুর ইসলাম বলেন: পাঁচ নম্বর বুথের ইভিএম মেশিনটায় সমস্যা হয়েছিল। পরে তৎক্ষণাৎ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। রোদের কারণে হয়তো অনেকে সকালে লাইনে দাঁড়িয়েও চলে গেছেন। এখন আবার ফিরে আসছেন।
ভোটগ্রহণ চলবে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত৷ এবারের পুরো ভোট গ্রহণ হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।
সকাল ৬টায় ভোট দেওয়ার জন্য দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে ভোটাররা জানিয়েছেন: তাদের কাজ থাকায় সকাল সকাল ভোট দিতে এসেছেন। পরে যেন ভোগান্তিতে পড়তে না হয়, সে বিষয়টি এড়াতেই সকাল সকাল এ উপস্থিতি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আসনে ৭৮ জন এবং ৫৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদের ২৪৩ জন সহ মোট ৩২৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার সদস্য নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত রয়েছে। নির্বাচনে একজন মেয়র, ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৫৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৯ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হবে। অবশ্য এদের মধ্যে একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনী এলাকার ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে তিন হাজার ৪শ ৯৭টি ভোট কক্ষ থাকবে। সিটি করপোরেশনের ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪শ ৬৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এদের মধ্যে পুরুষ পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭শ ৪৭ জন, নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬শ ৯৮ এবং ১৮ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। নির্বাচনে ১০ হাজার ৯শ ৭১ জন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে ৪শ ৮০ জন প্রিসাইডিং অফিসার, তিন হাজার ৪শ ৯৭ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এবং ছয় হাজার ৯শ ৯৪ জন পোলিং অফিসার। সিটি এলাকার ৩শ ৩৩টি প্রতিষ্ঠানে ৪শ ৮০টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪টি প্রতিষ্ঠানে ২টি করে ভোটকেন্দ্র, ১৬টি প্রতিষ্ঠানে তিনটি করে ভোটকেন্দ্র, ৯টি প্রতিষ্ঠানে চারটি করে ভোটকেন্দ্র এবং একটি প্রতিষ্ঠানে ভোটকেন্দ্র আছে।