ভোটকক্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর প্রবেশ এবং ভোট কারচুপির অভিযোগে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচন স্থগিতের পর সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিতর্ক। দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন প্রিজাইডিং অফিসার বলেছেন, সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলেও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশে তারা ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন।
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন ভোটার ইভিএমের মাধ্যমে ১৪৫টি কেন্দ্রে ৯৫২টি বুথে ভোট প্রদান করছিলেন। এরমধ্যে অনিয়মের অভিযোগে ৪৪টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। যার মধ্যে মথরপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, যাদুরতাইড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কচুয়াহাট সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্র। যদিও এই সকল কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা বলছেন ভিন্ন কথা।
তারা লিখিত বক্তব্যে বলছেন: নির্বাচনী কর্মকর্তা সহকারী রিটার্নিং অফিসার জনাব মো: কামরুল ইসলামের নির্দেশে আমি (নাম) ভোট গ্রহণ বন্ধ করিলাম। ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমরা বেলা ৩.০০ ঘটিকায় ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করিলাম।
সাক্ষর করা মথরপাড়া দাখিল মাদ্রাসা, যাদুরতাইড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কচুয়াহাট সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসাররা তাদের লিখিত বক্তব্যে সাক্ষর করেছেন। তারা হলেন: মোঃ মশিউর রহমান (প্রভাষক- বোনার পাড়া সরকারি কলেজ, সাঘাট-গাইবান্ধা), মোঃ আব্দুল লতিফ (সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, সাঘাট-গাইবান্ধা), মোঃ রাসেল মিয়া (ব্যবস্থাপক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, জুমারবাড়ী শাখা- গাইবান্ধা)।
এর মধ্যে মথরপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় ৯০১ , যাদুরতাইড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮৯৫ ও কচুয়াহাট সরকারি বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট পড়েছিল ৫৪৯টি করে।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন দাবি করেছেন, তার কোনো কর্মী-সমর্থক অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেননি, বাধাও দেননি। ভোটের আগের রাতেও কেউ হুমকি দেননি। উপনির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ভোট স্থগিত প্রসঙ্গে বলেছেন: আমরা সিসিটিভির ফুটেজে দেখেছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। গোপন কক্ষে অন্যরা ঢুকছে, ভোট সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। আমরা প্রথম থেকেই লক্ষ্য করেছি- ভোটগ্রহণে অনিয়ম হচ্ছে এবং অনেক কক্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশ লক্ষ্য করেছি। অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোটারকে ভোট প্রদানে সহায়তা বা বাধ্য করছে- এটা সুস্পষ্ট লক্ষ্য করেছি। যেটি নিয়ম নয়।
বেলা ২টার দিকে সিইসি নির্বাচন বন্ধের ঘোষণা দেন।
এর আগে বেলা এগারোটার দিকে উপনির্বাচনে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়া সবাই নানা অনিয়মের অভিযোগ করে একযোগে চার প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।