চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, আধিপত্য বিস্তার ও নাশকতার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১০টি সুপারিশ দেওয়ার পাশাপাশি মামলার মাধ্যমে বিষয়টি অধিকতর তদন্তের পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। ঘটনার সাত দিন পর তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

রোববার বিকেল ৪টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেসব্রিফিংকালে তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, ৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণপত্র হিসেবে আরও ৭৪ পৃষ্ঠা সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তকালে তদন্ত কমিটি অন্তত ৫০ জন রোহিঙ্গাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। এসব রোহিঙ্গারা বলেন, এটা পরিকল্পিত ও নাশকতা।

রোহিঙ্গারা যেসব তথ্য দিয়েছে এবং যে নাম পাওয়া গেছে তাতে ভিন্ন ভিন্ন নাম বলেছে। কিন্তু এদের শনাক্ত করা কঠিন। তাই মামলার পর তদন্ত করে তাদের শনাক্ত করার পক্ষে তদন্ত কমিটি।

উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত ৫ মার্চ দুপুরে আগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। যা পরিকল্পিত নাশকতা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।

তিনি জানান, দুপুর ২টা ৩০ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়, যা নিয়ন্ত্রণ নিতে সন্ধ্যা ৬ টা বেজে যায়। এসময়ের মধ্যে এক স্থানে না, একাধিক স্থানে আগুন লেগেছে, যা নাশকতার প্রমাণ করে। একইসাথে অগ্নিকাণ্ডের আগের দিন ওই ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এটাও নাশকতা প্রমাণ করছে। আগুন রোহিঙ্গারা নেভাতে গেলে অনেকেই নিষেধ করেছে এটা সত্য। তবে এটা কৌশলে হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বলা হয়েছে, ‘আগুন নেভানোর চেয়ে জীবন বাঁচানো জরুরী’।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে মামলা দায়েরসহ নিয়মিতভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান এবং গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোসহ ১০টি সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে করা অন্য ৯ সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রতিটি ব্লকের রাস্তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি চলাচল করতে পারার মতো প্রশস্ত করা যেতে পারে। ব্লকের রাস্তার পাশে পানির চৌবাচ্চা তৈরী। শেল্টারে ত্রেপলের পরিবর্তে ভিন্ন কিছু যা অপেক্ষাকৃত কম দাহ্য পদার্থের তৈরি এমন কিছুর ব্যবহার। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য পৃথক ফায়ার সার্ভিস ইউনিট গঠন। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে যত্রতত্র মার্কেট করা থেকে বিরত এবং বড় রাস্তার ধারব্যতীত অন্যস্থানে দাহ্য পদার্থ আউটলেট করা থেকে বিরত, ঘনবসতিপূর্ণ ও অনেক স্থানে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে অগম্য বিবেচনায় ক্যাম্পের প্রবেশ মুখে লে-আউট স্থাপন। আগুন লাগলে
নেভানোর কাজে রোহিঙ্গাদের স্বতস্ফুর্ত অংশ গ্রহণের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা তৈরি। ক্যাম্পের ব্লকে ব্লকে ওয়ারলেস টাওয়ার স্থাপন ও ৩৬০ ডিগ্রি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন। এক ক্যাম্প থেকে অন্য ক্যাম্পের পালানো রোধে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন করা।

প্রেসব্রিফিং এ তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ মার্চ দুপুরে উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডে ঘরসহ দু’হাজার ৮০৫টি নানা স্থাপনা এবং ১৫ হাজার ৯২৫ জন রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের ২২ মার্চ একই ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা হয়ে ছিল। ওই সময় ১১ জনের মৃত্যু, পাঁচ শতাধিক আহত হয়। পুঁড়ে গিয়ে ছিল ৯ হাজারের বেশি ঘর।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View