এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
২০০১ থেকে ২০২৫—এই পঁচিশ বছরে বাংলা ভাষায় নির্মিত হয়েছে নানা ঘরানার অসংখ্য চলচ্চিত্র। এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবির সংখ্যাও একেবারে কম নয়। কিন্তু সংখ্যার তুলনায় মানসম্পন্ন ও স্মরণযোগ্য মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর চলচ্চিত্রের সংখ্যা অত্যন্ত সীমিত—এটাই বাস্তবতা।
সাধারণভাবে বলা হয়, নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পৌঁছে দিতে শিল্প, সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধকে গুরুত্ব দেওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু বাস্তবে, বিশেষ করে চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে, এই কথার প্রতিফলন খুব একটা দেখা যায় না।
পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতি বছর গড়ে ৪০–৫০টি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। সে হিসাবে গত পঁচিশ বছরে অন্তত হাজার সিনেমা তৈরি হয়েছে! অথচ এই বিশাল সংখ্যার ভেতর থেকে উল্লেখযোগ্য মানের মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর ২৫টি চলচ্চিত্র খুঁজে পাওয়া দুস্কর! আরও বিস্ময়কর হলো—স্বাধীনতার ৫৪ বছরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মোট চলচ্চিত্রের সংখ্যা এখনো ৭০-এর আশপাশে।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে—মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে নির্মাতাদের আগ্রহ কেন তুলনামূলকভাবে কম?
এই প্রশ্নের উত্তর বিভিন্ন সময়ে দিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতারাই। অনেকের মতে, যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে যে বড় বাজেট প্রয়োজন, তা জোগাড় করা কঠিন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধের নানা বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক মতভেদ ও সংবেদনশীলতা সৃজনশীল স্বাধীনতাকে সীমিত করে, যা নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তবে এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও আশার কথা আছে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন, ভবিষ্যতে এই সীমাবদ্ধতাগুলো কাটিয়ে অন্যান্য ঘরানার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের বীরগাথা আরও বড় আয়োজনে আন্তর্জাতিক মানের করে নির্মিত হবে। কারণ মুক্তিযুদ্ধ কেবল ইতিহাস নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের ভিত্তি—যা নতুন প্রজন্মের পাশাপাশি পৃথিবীর কাছে পৌঁছে দেওয়া সময়ের দাবি!
এই প্রেক্ষাপটে গত ২৫ বছরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যে চলচ্চিত্রগুলো দর্শক ও সমালোচকদের দৃষ্টি কেড়েছে, সেগুলো নতুন করে আলোচনায় আনা জরুরি। সেই উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর দিকেই এবার নজর দেওয়া যাক:
মাটির ময়না, তারেক মাসুদ
২০০২ সালে নির্মিত কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের আলোচিত সিনেমা ‘মাটির ময়না’। চলচ্চিত্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে নির্মাতার ছেলেবেলার অভিজ্ঞতা ফুটে উঠেছে। চলচ্চিত্রের মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নুরুল ইসলাম বাবলু, রাসেল ফরাজী, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, রোকেয়া প্রাচী, শোয়েব ইসলাম এবং লামিসা আর রিমঝিম। চলচ্চিত্র জুড়ে ঐতিহাসিক ঘটনার উদ্ধৃতি থাকলেও সেগুলো একটি কিশোরের মানবিক অভিজ্ঞতায় প্রকাশিত হয়েছে। মাদ্রাসায় তার শিক্ষক, সহপাঠীদের আচরণ আর পরিবারের সদস্যদের সাথে তার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রটির কাহিনি এগিয়ে যায়। মূল কথা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান থেকে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বের অশান্ত সময়ের পটভূমিতে যুদ্ধ ও ধর্মের কারণে বিচ্ছিন্ন একটি পরিবারের গল্প ‘মাটির ময়না’। ২০০২ সালে প্রথম বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে সিনেমাটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘ডিরেক্টর্স ফোর্টনাইট’ আয়োজনে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে ফিপরেস্কি আন্তর্জাতিক সমালোচকদের পুরস্কার লাভ করে।
জয়যাত্রা, তৌকীর আহমেদ
২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জয়যাত্রা ছবিটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন একদল মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, মৃত্যু ও বেঁচে থাকার সংগ্রামের গল্প নিয়ে তৈরি। ছবিটি পরিচালনা করেছেন তৌকির আহমেদ। আমজাদ হোসেন এর কাহিনী নিয়ে নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করেছে মাহফুজ আহমেদ, বিপাশা হায়াত, রোমানা, তারিক আনাম খান,আজিজুল হাকিম, চাঁদনী, শাহেদ সহ আরও অনেকে। ছবিটি ২৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার, শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক, শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেত্রী ও শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
শ্যামল ছায়া, হুমায়ূন আহমেদ
২০০৪ সালে মুক্তি প্রাপ্ত ‘শ্যামল ছায়া’ ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে তৈরি এই ছবিতে সরাসরি যুদ্ধের দৃশ্য না দেখিয়েও যুদ্ধের আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুনিপুণ ভাবে। ছবিটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে একাডেমি পুরস্কার এর জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। ছবিতে অভিনয় করেছেন হুমায়ুন ফরীদি, শাওন, শিমুল, রিয়াজ, স্বাধীন খসরু, সৈয়দ আখতার আলী, তানিয়া আহমেদ, রাত্রি, আহমেদ রুবেল, এজাজুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, শামীমা নাজনীন, জেসমিন পারভেজসহ আরও অনেকে।
মেহেরজান, রুবাইয়াত হোসেন
রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত ‘মেহেরজান’ ২০১১ সালের ২১ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। মুক্তির পর থেকে ছবিটি ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ আর ভালবাসার চিরন্তন গল্প নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করছেন পরিচালক। এরা মোশন পিকচার্স এর ব্যানারে নির্মিত ছবিটির বাংলাদেশের পরিবেশক আশীর্বাদ চলচ্চিত্র । ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ভারতীয় অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জী। এছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন ওমর রহিম (পাকিস্তান), শায়না আমিন, হুমায়ুন ফরীদি, খায়রুল আলম সবুজ, আজাদ আবুল কালাম, রীতু আব্দুস সাত্তার, রুবাইয়াত হোসেন ও নাসিমা সেলিম।
গেরিলা, নাসির উদ্দিন ইউসুফ
সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চলতি দশকের মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর সবচেয়ে সাড়া জাগানো ছবি ‘গেরিলা’। ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত এই সিনেমা পরিচালনা করেছেন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। ছবিতে অভিনয় করেছে এটিএম শামসুজ্জামান, জয়া আহসান, ফেরদৌস, শতাব্দী ওয়াদুদ, শম্পা রেজা সহ আরও অনেকে। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত গেরিলা ছবিটি বাণিজ্যিক ভাবেও দারুণ সফলতা পায়। ছবিটি ২০১১ সালে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অংশগ্রহণ করে এবং ১৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০১১-এ নেটপ্যাক পুরস্কার জিতে নেয়।
আমার বন্ধু রাশেদ, মোরশেদুল ইসলাম
২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ ছবিটি মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত শিশুতোষ উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। ১৯৭১ সালে মফস্বল শহরের কয়েকজন কিশোর কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে, তারই কিছু চিত্র ফুটে উঠেছে গল্পে। ছবিতে অভিনয় করেছে চৌধুরী জাওয়াতা আফনান। অন্যান্য চরিত্রে ছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইনামুল হক, হুমায়রা হিমু, ওয়াহিদা মল্লিক জলি, আরমান পারভেজ মুরাদ। এছাড়াও শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছে রায়ান ইবতেশাম চৌধুরী, কাজী রায়হান রাব্বি, লিখন রাহি, ফাইয়াজ বিন জিয়া, রাফায়েত জিন্নাত কাওসার আবেদীন।
জীবনঢুলী, তানভীর মোকাম্মেল
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা যে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তারই এক চলমান দলিল ‘জীবনঢুলী’। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি নির্মাণ করেন গুণী নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল। ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ।
মেঘমল্লার, জাহিদুর রহিম অঞ্জন
কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছোট গল্প ‘রেইনকোট’ অবলম্বনে ‘মেঘমল্লার’ নামের ছবিটি মুক্তি পায় ২০১৪ সালে। যার চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বর্ষার টানা তিন দিনের কাহিনি নিয়ে ‘মেঘমল্লার’ ছবির বিয়োগান্ত আখ্যান গড়ে উঠেছে। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন শহীদুজ্জামান সেলিম। সরকারি অনুদানে নির্মিত এবং বেঙ্গল এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের প্রযোজনায় চলচ্চিত্রটি পরিবেশনা করে বেঙ্গল ক্রিয়েশন্স।
অনিল বাগচীর একদিন, মোরশেদুল ইসলাম
মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলোর অনিশ্চয়তা, মানবিকতা, স্বপ্ন, সম্প্রীতি প্রভৃতি অণুষঙ্গগুলো সার্থকভাবে ফুটে উঠেছে ‘অনিল বাগচীর একদিন’ নামের এই চলচ্চিত্রটির মধ্য দিয়ে। একই নামে কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেছেন মোরশেদুল ইসলাম। ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি প্রযোজনা করেছে বেঙ্গল ক্রিয়েশনস। ছবিতে অনিল বাগচীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরেফ সৈয়দ। এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন গাজী রাকায়েত, তৌফিক ইমন, জ্যোতিকা জ্যোতি, ফারহানা মিঠু, এবং মিশা সওদাগর।
বাপজানের বায়োস্কোপ, রিয়াজুল রিজু
তরুণ নির্মাতা রিয়াজুল রিজু পরিচালিত ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলোচিত ছবি ‘বাপজানের বায়োস্কোপ’। কারুকাজ ফিল্মস-এর ব্যানারে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে গাঁথা এই সময়ের এক বাস্তব গল্পে নির্মিত একটি ছবি। যার কাহিনী লিখেছেন মাসুম রেজা এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন মাসুম রেজা ও রিয়াজুল রিজু। ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, শতাব্দী ওয়াদুদ ও সানজিদা তন্ময়। ৪০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রসহ মোট আটটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
ভুবন মাঝি, ফাখরুল আরেফিন খান
একজন সাধারণ মানুষের জীবনে বিদ্রোহী হয়ে ওঠার গল্প ‘ভুবন মাঝি’। গল্পের শুরু ১৯৭০ সাল, শেষ ২০১৩। ১৯৭১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত ইতিহাস ও প্রেম, বিদ্রোহ ও মানবিকতা, স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি এসব নিয়ে গড়ে উঠেছে ছবির গল্পে। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি রচনা ও পরিচালনা করছেন ফাখরুল আরেফিন খান। ছবির তিন কেন্দ্রীয় চরিত্র কলকাতার পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের অপর্ণা ঘোষ ও মাজনুন মিজান।
রীনা ব্রাউন, শামীম আকতার
প্রেম, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, বিচ্ছেদ এবং এই সময়ের বাংলাদেশ নিয়েই নির্মিত হয়েছে শামীম আকতারের ‘রীনা ব্রাউন’। যদিও পরিচালক এটিকে শুধু মুক্তিযুদ্ধের একটা গল্প হিসেবে দর্শকের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে রাজি নন। বরং ‘রীনা ব্রাউন’ এমন একটি সময়ের প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত যেখানে দুজন মানুষের ভালোবাসা, প্রেম আর বিরহগুলোও সুঁচালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘রীনা ব্রাউন’ ছবির সহ–প্রযোজক ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। ‘রীনা ব্রাউন’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রমা পাবনী। আরও অভিনয় করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বরুণ চন্দ, সাবেরি আলম, আতাউর রহমান, শম্পা রেজা, মানস চৌধুরী, তানভীর হোসেন প্রবাল, মাহফুজ রিজভী প্রমুখ।
লাল মোরগের ঝুঁটি, নূরুল আলম আতিক
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের আগস্টে সৈয়দপুরের পটভূমিতে নির্মিত নূরুল আলম আতিকের সিনেমা ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এটি মুক্তি পায়। পরিচালনার পাশাপাশি এর কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও করেছেন নুরুল আলম আতিক। মতিয়া বানু শুকুর প্রযোজনায় এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন আহমেদ রুবেল, আশনা হাবিব ভাবনা, দীপক সুমন, জ্যোতিকা জ্যোতি, আশীষ খন্দকার, জিনাত শানু স্বাগতা, লায়লা হাসান প্রমুখ।
জেকে ১৯৭১, ফাখরুল আরেফিন
৩ ডিসেম্বর ১৯৭১। জ্যঁ ইউজিন পল ক্যুয়ে নামক একজন ফরাসি নাগরিক অর্লি বিমানবন্দরে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন একটি বোয়িং ৭২০ হাইজ্যাক করে। সে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমর্থনে ভারতে অবস্থিত পূর্ব বাঙালি শরণার্থীদের ক্যাম্পে ও পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের নিকট ফ্রান্স সরকারকে ২০ টন ত্রাণ ও ওষুধ পাঠাতে হবে বলে দাবি করে। এই নাটকীয় বাস্তব কাহিনীই সিনেমায় তুলে ধরেন ফাখরুল আরেফিন খান। সিনেমায় ফরাসি যুবক জ্যঁ ইউজিন পল ক্যুয়ে চরিত্রে অভিনয় করেন শুভ্র সৌরভ দাস।
১৯৭১ সেই সব দিন, হৃদি হক
সাম্প্রতিক মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যতো সিনেমা নির্মিত হয়েছে, তারমধ্যে দর্শকপ্রিয়তার দিক থেকে ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ বেশ আলোচিত। শুধু তাই নয়, সিনেমাটির নির্মাণশৈলীতেও সমালোচকদের মুগ্ধতা দেখা গেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হলেও ২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমায় আছে রোমান্টিক মেজাজ! ইনামুল হকের গল্প অবলম্বনে পরিচালনা করেছেন তার মেয়ে হৃদি হক। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফেরদৌস আহমেদ, সজল নূর, লিটু আনাম, তারিন, সানজিদা প্রীতি, হৃদি হক প্রমুখ।
নকশী কাঁথার জমিন, আকরাম খান
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সবশেষ মুক্তি পাওয়া সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা আকরাম খানের ‘নকশী কাঁথার জমিন’ গেল বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের গল্প ‘বিধবাদের কথা’ অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন আকরাম খান। এর চিত্রনাট্য ও সংলাপও রচনা করেছেন তিনি। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান ও ফারিয়া শামস সেঁওতি। গেল বছরে বড়পর্দায় মুক্তির পর চলতি বছরে সিনেমাটি দেশের জনপ্রিয় ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে।
এছাড়াও গত ২৫ বছরে আলোচনায় ছিলো শামীম আকতারের শিলালিপি, চাষী নজরুলের মেঘের পরে মেঘ, তানভীর মোকাম্মেলের রাবেয়া, আনোয়ার হোসেনের কারিগর, গোলাম মোস্তফা শিমুলের অনুক্রোশ, হাবিবুর রহমানের অলাতচক্র, খিজির হায়াতের ওরা ৭ জন।








