ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপপর্বের প্রথম ম্যাচে খেলা শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীত গাননি ইরানের খেলোয়াড়রা। সেটা নিয়ে কথা গড়িয়েছে বহুদূর। খবর হয়েছিল, দেশে ফিরলে তাদের মৃত্যুদণ্ড কিংবা দীর্ঘ কারাবাসের শাস্তিও হতে পারে। সামনে যা-ই ঘটুক, নারী অধিকার ও সরকার বিরোধী আন্দোলনে সমর্থনের রূপ ধরে সেই ঘটনায় প্রশংসার জোয়ারই এসেছিল বেশি। এক ম্যাচ পর অবশ্য বিতর্ক থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছে আলীরেজা জাহানবখশের দল। তাতে আবার উল্টো প্রতিক্রিয়া। বেজায় চটেছেন ইরানি দর্শক-সমর্থককুল।
শুক্রবার আহমাদ বিন আলী স্টেডিয়ামে ওয়েলসের বিপক্ষে দলকে সমর্থন দিতে আসা ইরানিরা ধরে রেখেছিলেন মাশা আমিনির ছবি। কারও হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড, কারও জার্সিতে ফুটিয়ে তোলা ছিল নৈতিক পুলিশের নির্যাতনে মারা যাওয়া মাশাকে। কিন্তু মাঠে প্রিয় দলকে প্রতিবাদ থেকে সরে আসতে দেখে ‘দুয়োধ্বনি’ শুনিয়েছেন সকলে।
ইরানের খেলোয়াড়রা মাঠে যখন জাতীয় সঙ্গীত গাইছিলেন, নারী অধিকারের পক্ষে গ্যালারিতে গলা ফাটাচ্ছিলেন সমর্থক দল। প্রতিবাদ থেকে সরে আসায় কার্লোস কুইরোজের শিষ্যদের বাজে ভাষায় আক্রমণও করেছেন তারা।
দোহায় স্টেডিয়ামের বাইরেও নারী অধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল ইরানি সমর্থকগোষ্ঠী। সকাল থেকেই আমিনির ছবি ও নাম লেখা জার্সি পরে জড়ো হতে থাকে। জাতীয় পতাকায় লিখে আনা হয়, ‘ওমেন লাইফ ফ্রিডম’। ‘ফ্রিডম ফর ইরান’, ‘নো ইসলামিক রিপাবলিক’ স্লোগানেও স্টেডিয়ামপাড়া মাতান সমর্থকরা।
নৈতিক পুলিশের হেফাজতে ইরানে মাশা আমিনি নামের এক যুবতীর মৃত্যুর কারণে ইরানে দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের সমর্থনের অংশ হিসেবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া থেকে বিরত থাকেন ইরানি ফুটবলাররা, সেটি প্রথম ম্যাচের ঘটনা। খালিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়রা জাতীয় সঙ্গীত না গাওয়ায় দেশটির বিচার বিভাগের মুখপাত্র বলেছিলেন, যারা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া থেকে বিরত থাকবেন, তাদের শাস্তি দেয়া যেতে পারে।
ওয়েলসের বিপক্ষে হয়ত সে কারণেই জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছে আলীরেজা বেইরাভান্দের দল। তবে এক পক্ষের মন জোগাতে কিংবা শাস্তি থেকে বাঁচতে গিয়ে শেষে সমর্থকদের বিরাগভাজন হলেন মেহদী তারেমি-আলী তারেমিরা।