ইংল্যান্ডের চোখে চোখ রেখে লড়ল যুক্তরাষ্ট্র। বল দখল, গোলে শট, পাসিংসহ প্রায় সব বিভাগে সমানে সমান লড়েও অবশ্য ফল নিজেদের পক্ষে আনতে পারেনি। তবে ইংলিশদের আটকে নিজেদের বিশ্বকাপে টিকিয়ে রেখেছে গ্রেগ বেরহাল্টারের দল। শেষ ষোলোর সমীকরণ জমে উঠেছে গ্রুপ বি-তেও।
শুক্রবার আল বাইত স্টেডিয়ামে গ্রুপ-বি এর ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। পয়েন্ট ভাগাভাগির রাতের পর ২ ম্যাচে ২ পয়েন্ট আমেরিকার। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট তুলে গ্রুপ টেবিলের শীর্ষে ইংল্যান্ড। শেষ ষোলোর দৌড়ে ৩ পয়েন্ট তুলে দারুণভাবে টিকে আছে এশিয়ার দেশ ইরান। তলানিতে ওয়েলসের সংগ্রহ ১ পয়েন্ট।
গ্রুপপর্বের শেষ রাউন্ডে আমেরিকার মোকাবেলা করবে ইরান। ওয়েলসের প্রতিপক্ষ হবে ইংল্যান্ড। নকআউটে যেতে সমীকরণের মাঝে এখন হটফেভারিট ইংল্যান্ডও। এই গ্রুপের প্রতিটি দলেরই সম্ভাবনা জেগে আছে। পয়েন্ট টেবিলের পাশাপাশি গোলপার্থক্য তাতে বড় নিয়ামক হয়ে উঠতে পারে।
আমেরিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জন্য সমীকরণ একেবারেই সহজ ছিল, জিতলেই নিশ্চিত হবে পরের রাউন্ড। সুযোগ পেয়েও কাজ লাগাতে পারেননি কেন-স্টার্লিংরা। দলও ভুগেছে গোলখরায়। ৫২ শতাংশ বল দখলে রেখে ইংলিশরা সাতবার গোলে শট নিয়েছে, লক্ষ্যে ছিল তিনটি। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রও কম যায়নি। ছয়টি শটের মাঝে একবার গোলমুখে বল রেখেছিল তারা।
ইরানকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে আসর শুরু করা ইংল্যান্ড এগিয়ে যেতে পারতো ম্যাচের দশম মিনিটে। ডি-বক্সে বুকায়ো সাকার পাস ফাঁকায় পেয়ে শট নেন হ্যারি কেন। কিন্তু সামনে ছুটে আসা ডিফেন্ডার ওয়াকার জিমেরম্যানের পায়ে প্রতিহত হয়। ২৫ মিনিটে আরেকটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে ইংলিশরা।
সাত মিনিট পর প্রতিপক্ষের দুর্ভাগ্যে স্কোরলাইন অক্ষত রাখে ইংল্যান্ড। ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের বুলেট গতির শট গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে ক্রসবার কাঁপায়। বিরতির ঠিক আগে পাল্টা আক্রমণে দলকে এগিয়ে নিতে পারতেন গত ম্যাচের জোড়া গোলদাতা সাকা। কিন্তু ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে শট নেয়ার যথেষ্ট জায়গা না পেয়ে উড়িয়ে মারেন তিনি। পরের মিনিটে ম্যাসন মাউন্টের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ফেরান যুক্তরাষ্ট্রের গোলরক্ষক ম্যাট টার্নার।
বিরতির পর নতুন উদ্যমে শুরু করে দুদল। বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনেন দুই কোচই। কিন্তু কাজের কাজ গোলটা কেউ করতে পারেননি। রাহিম স্টার্লিংয়ের বদলি নামা জ্যাক গ্রিলিশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করতে পারলেও জালে বল জড়াতে পারেননি। আমেরিকানদের দুর্দান্ত সব আক্রমণও ভেস্তে গেছে ইংলিশ রক্ষণের বাধায়।
বাকিটা সময়েও আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে ছিল অনুজ্জ্বল ধারা। গোলের জন্য মরিয়া দুটো দল সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছে এই যা। ৭০ মিনিটে গ্রিলিশ ও কয়েক মিনিটের ব্যবধানে বেলিংহাম সুযোগ তৈরি করেছিলেন। ইংলিশদের আক্ষেপ বাড়িয়ে দিয়েছে অধিনায়ক কেনের শেষের মিস। যোগ করা সময়ে সহজ সুযোগ দ্বিতীয়বারের মতো হাতছাড়া করেন তিনি।
লুক শ’য়ের বাড়ানো বলে মাথা ছুঁলেই যেখানে জালে জড়াতে পারত, সেখানে হেডটি লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা গোলস্কোরার। শেষ পর্যন্ত তাতে আমেরিকার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কেনকে।