বেতন না পেয়ে মানবেতন জীবনযাপন করছেন এফডিসির ২২৪ জন কর্মচারি। বারবার এমডির কাছে গিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। বেতন-ভাতার দাবীতে বৃহস্পতিবার সকালে এফডিসির এমডি বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তারা।
রবিবার আবার নায্য বেতনের দাবীতে এমডির কাছে যাবেন তারা। চ্যানেল আই অনলাইনকে এফডিসির কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক কলাকুশলী ও কর্মচারী শ্রমিকলীগের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বলেন, জানুয়ারি থেকে মার্চ কোনো মাসের বেতন হয়নি।
এমডি মহোদয় শুরু থেকে আশ্বাস দিয়ে আসছেন। কিন্তু কিছুতেই লাভ হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি নিয়ে এমডি বরাবর জমা দিয়েছি। তিনি পূর্বের মতো আশ্বাস দিয়েছেন আগামী সপ্তাহে সুখবর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। বারবার তার আশ্বাসে আমরা হতাশ হয়েছি। যদি আগামী সপ্তাহে আমাদের তিন মাসের বেতন সবমিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা না পাই তাহলে আমরা ২২৪ জন কর্মকর্তা কর্মচারি কর্ম বিরতিতে যাবো।
তিনি আরও জানান, এফডিসির কর্মকর্তা কর্মচারীরা বাসাভাড়া দিতে না পারায় অনেকেই বাসা ছাড়ার নোটিশ পেয়েছেন। রোজায় ঠিকমত খেতে পারছেন না। সেহরির খাবার যোগাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকেই স্থানীয় দোকানে ঋণে জর্জরিত। প্রত্যেকেই মানবেতর জীবন পার করছেন।
এই শ্রমিক নেতা জানান, এফডিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধিনস্ত, কিন্তু বেতন আসে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। এই পরিস্থিতে তাদের কাছে ‘কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা’ দেওয়া লেগেছে ২ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত এক চিঠি।
সেই চিঠিতে অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা, অর্থবিভাগ)-এর স্বাক্ষরে বলা আছে, বেশ ক’দিন আগে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে জানানো হয়, এফডিসিকে নিজস্ব ইনকাম দিয়ে চলতে।
এরপর আরও হতাশ পড়ে বেতন না পাওয়া এই কর্মীরা। তারা বলছেন, শুটিং না হওয়ায় এফডিসির আয় নেই। নিজস্ব আয়ের উৎস খুঁজে বাস্তবায়ন করে চলার আগেই তারা হয়তো মারা যাবেন। আমাদের পূর্বের বেতনের কী হবে? না হলে এই অবস্থা চললে কদিনের মধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মতো এফডিসির স্টাফদেরও রাস্তায় নেমে বেতনের জন্য আন্দোলন করা ছাড়া উপায় থাকবে না। তার আগে আমরা কর্ম বিরতিতে যাবো।
কর্মকর্তা কর্মচারীরা স্মারকলিপি প্রদানের আগে একাধিক মিডিয়া উপস্থিত থাকলেও তাদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমিন। সরাসরি গিয়ে দেখা করতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান এবং মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কোনো উত্তর দেননি।