নবাবগঞ্জের মাতাবপুরে মাদক সেবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়া মো.হাশিম (৬৫) নামে এক কৃষকে গলা গেটে হত্যার ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ঢাকা জেলা।
গ্রেপ্তাররা হলেন মো.কামাল (৩৬), মেছের আলী (৪২), মো.জাহাঙ্গীর আলম (৪৫), মো.নাছির উদ্দিন ওরফে নসু (৪৬), মো.পিন্টু চৌধুরী (৩০) ও মোজলেম (৫৫)।
সম্প্রতি রাজধানীতে ও নবাবগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় সোহেল নামে একজন আসামি পলাতক রয়েছেন। গ্রেপ্তারদের মধ্যে মো.পিন্টু চৌধুরী, মোজলেম, মেছের আলী ও মো.কামাল আদালতে স্বেচ্ছায় নিজেদের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমণ্ডিতে অবস্থিত পিবিআইয়ের সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।
তিনি বলেন, নবাবগঞ্জের মাতাবপুরে বাড়ি ভিকটিম মো.হাশিমের। তার বাড়ি ৫০০ গজ দূরে একটি জমিতে তিনি ঘাস ও সবজি চাষ করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল রাতে তিনি বাড়ি থেকে জমিতে যান তার চাষ করা ঘাস ও সবজি পাহাড়া দিতে। জমিতে পাহাড়া দিতে গিয়ে তিনি আর বাড়ি ফেরননি। পরের দিন সকালে হাশিমের গলাকাটা ও রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পরে এ ঘটনায় ভিকিটমের ছেলে মো. আরিফ বাদী হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা হলেও এই হত্যাকণ্ডের রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় গত ১৫ জুন মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, গত ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাতে জমি পাহাড়া দিচ্ছিলেন হাশিম। ঐ রাতে মো.কামাল, মেছের আলী, মো.জাহাঙ্গীর আলম, মো.নাছির উদ্দিন ওরফে নসু, মো.পিন্টু চৌধুরী, মোজলেম,সোহেল হাশিমের জমির সংলগ্ন সজুল মাঠে গাঁজা সেবন ও জুয়া খেলতেছিলেন। আসিমারা ঐ স্কুলের ভবনে মাদক সেবন, মাদক কেনা-বেচা, বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপন আদায়, চাঁদা আদায়, বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির পরিকল্পনা, পার্শ্ববর্তী নদীতে চলমান ট্রলার ও কার্গো থেকে চাঁদা আদায় সহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ইত্যাদি অপরাধ সংগঠনের পরিকল্পনাস্থল হিসেবে ব্যবহার করতেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার দিনে আসামিরা স্কুল মাঠে জুয়া খেলা, মাদক সেবন ও মাদক কেনা বেচা করছিলো। কিন্তু হাশিম জমি পাহাড়া দেওয়ায় আসামিদের এসব কাজ করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছিলো। তখন তারা হাশিমকে জমি থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলে। কিন্তু তাদের কথা মতো চলে না যাওয়ায় আসামিদের সঙ্গে হাশিমের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে নসু ও জাহাঙ্গীর বাকি আসামিদের সহযোগীতায় ঘাস কাটার কাচি দিয়ে ভিকটিম হাশিমকে গলা কেটে হত্যা করে। হাশিমকে হত্যার পর আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।