
পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার দাবি না পূরণ করলে রাশিয়া কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি নবায়ন করবেনা বলে জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল (৪ সেপ্টেম্বর) সোমবার রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় পর্যটন শহর সোচিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক শেষে একথা জানান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রাশিয়া থেকে কৃষ্ণসাগরের মাধ্যমে আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ায় ইউক্রেনীয় শস্য সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই শস্য চুক্তিটিকে নবায়ন করার উদ্দেশ্যে এই বৈঠকের আয়োজন করা হলেও নিজেদের দাবি পূরণের বিষয়ে আবারও পুতিন তার দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন।
ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত শুরুর পর থেকেই ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরের জাহাজ চলাচল পথ ও বন্দরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় রাশিয়া। এতে করে ইউক্রেনের উৎপাদিত শস্য বন্দরেই আটকে থাকে। এভাবে কৃষ্ণসাগর রাশিয়া অবরোধ করে রাখার কারণে ইউক্রেনের বন্দরে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করা কোটি কোটি টন খাদ্যশস্য আটকা পড়ে ছিল। এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে। বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য সঙ্কট দেখা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে কৃষ্ণসাগরের মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বছর ২২ জুলাই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি কার্যকর হয় ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। পরে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তাদের অবরোধ শিথিল করে ফলে ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে বাকি বিশ্বে নিরাপদে খাদ্যশস্য রপ্তানির পথ খুলে যায়।

তবে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য রাশিয়ার শর্ত উপেক্ষা করা হয়েছে এমন অভিযোগে তুলে চলতি বছর জুলাই মাসে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় রাশিয়া। তাদের দাবি, দেশটিকে খাদ্য ও সার রপ্তানির প্রতিবন্ধকতা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা পূরণ করা হয়নি। জাহাজ চলাচল ও বীমার ওপর আরোপিত বিধিনিষেধ দেশটির কৃষি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলেও দাবি করে রাশিয়া।
গতকাল সোমবার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে সেই অভিযোগগুলোই পুনর্ব্যক্ত করে পুতিন বলেন, কৃষ্ণসাগর করিডোরকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। যদি রাশিয়ার দাবি গুলো পূরণ করা হয় তবে রাশিয়া দ্রুত চুক্তিতে ফিরে আসতে পারে।
বিজ্ঞাপন