ঈদে প্রস্তুত কমান্ডো টিম, থাকছে সাইবার জগতে নজরদারি: র্যাব মহাপরিচালক
সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব সারা দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে যেকোন নাশকতা ও হামলা মোকাবিলায় র্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স ও কমান্ডো টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গোয়েন্দা ও সাইবার মনিটরিংয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে জঙ্গি হামলার ব্যাপারে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পায়নি র্যাব।
শুক্রবার ২১ এপ্রিল দুপুরে ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন ও সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে ব্রিফ্রিংকালে তিনি এ কথা বলেন।
র্যাব প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তৎপরতা ও সাইবার জগতে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে জঙ্গিদের যে কোনো নাশকতা পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব। ভার্চুয়াল জগতের প্রবৃত্তি ঈদুল ফিতকে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের গুজব, উসকানিমূলক তথ্য, মিথ্যা তথ্য ছাড়ানো প্রতিরোধে র্যাব সাইবার মনিটরিং টিম সার্বক্ষণিক অনলাইনে নজর ধরে রাখে।
তিনি বলেন, র্যাব হেডকোয়ার্টার্স সার্বিকভাবে নজরদারি রাখবে। আমরা আশা করছি অন্যান্য বছরের মত এ বছরও উৎসব উদ্দীপনের মধ্যে সারা দেশব্যাপী ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাব সারা দেশব্যাপী গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন রেখেছে।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী ঈদ উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য থাকবে র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল পেট্রল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং সিসিটিভি মনিটরিং। এ ছাড়াও যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাব বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও র্যাব এয়ার উইং হেলিকপ্টার সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী ঘরমুখী মানুষকে নিরাপত্তার পাশাপাশি র্যাবের সেবা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সব ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট এবং গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম স্থানে ঈদের দুই দিন আগে থেকে ঈদের পরের দিনের জন্য র্যাব কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি ‘র্যাব সাপোর্ট সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে।
র্যাব প্রধান বলেন, সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি, অজ্ঞান/মলম পার্টি, চাঁদাবাজি এবং ছিনতাই রোধকল্পে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও র্যাব সাপোর্ট সেন্টারে জরুরি চিকিৎসা সেবার জন্য মেডিক্যা ল টিম এবং ইফতার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
র্যাবের মহাপরিদর্শক বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনা ইত্যাদিতে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কি না তা যাচাই করা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন টার্মিনাল ও আশপাশের স্থানসমূহে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সড়ক ও নৌ পথে বাস/লঞ্চ চালকেরা যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাস/লঞ্চ চালনা না করে সেজন্য বাস ও লঞ্চ মালিক ও চালকদের সতর্কীকরণ ও সচেতন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিটনেসবিহীন লঞ্চ যেন চলাচল না করতে পারে সেজন্য চেকিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঈদগাহের নিরাপত্তার বিষয় র্যাব প্রধান বলেন, ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে (জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও দিনাজপুর বড় ঈদগাহ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুপূর্ণ ঈদগাহ সমূহে ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের মাধ্যমে নিরাপত্তা সুইপিং করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে। এছাড়াও পর্যাপ্ত ইউনিফর্ম ও সাদা পোশাকে টহল পরিচালনা করা হবে।
শপিং মলের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, বিপণী বিতান ও জন সমাগমপূর্ণ এলাকায় স্ট্যাটিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে; যাতে করে সাধারণ জনগণ উৎসব মুখর পরিবেশে এবং নিরাপদে কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারে।
ব্যাটালিয়নগুলো নিজ নিজ কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তাদের জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করবে। র্যাব সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুমের (কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নাম্বারঃ ০১৭৭৭৭২০০২৯) মাধ্যমে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ ও সমন্বয় করা হবে বলে জানান র্যাব প্রধান।