ওয়ানডে অভিষেক রাঙিয়ে টি-টুয়েন্টি দলে জায়গা করে নিয়েছেন ইবাদত হোসেন। এশিয়া কাপে গতির ঝড় তুলতে মুখিয়ে আছেন এ পেসার। বছরের শুরুতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে ঐতিহাসিক জয়ের নায়ক ইবাদত আছেন সুসময়ে। বাঁকবদলের ২০২২ সালটা কাটছে দারুণ। একান্ত সাক্ষাৎকারে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন বিমানবাহিনী থেকে খুব শিগগিরই আসতে যাচ্ছে সুখবর।
চাকরি কেমন চলছে?
ইবাদত: ভালো। বাংলাদেশ এয়ার ফোর্স আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করছে। আমি ধন্যবাদ জানাই বিমানবাহিনী প্রধানকে। স্যার আসলে অনেক করছে। কিছুদিন আগে দেখা হয়েছিল স্যারের সঙ্গে। তিনি আমার কাছে এটাই প্রত্যাশা করেন যে, ভালো খেলতে হবে। আমি তোমার কাছে ভালো খেলা চাই বাকিসব আমাদের হাতে ছেড়ে দাও।
উইকেট নেয়ার পর স্যালুট! এই উদযাপন কত দিন চলবে?
ইবাদত: এটা (স্যালুট) এয়ার ফোর্স আমাকে শিখিয়েছে। এই সেলিব্রেশন চলবে যত দিন ক্রিকেট খেলব।
বিমানবাহিনী থেকে প্রমোশনের কোনো সুখবর আছে কিনা?
ইবাদত: প্রমোশনের ব্যাপারে এখনো কিছু জানি না, এটা লং প্রসেস। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আপনারা ভালো কিছু শুনতে পারবেন।
এবার ক্রিকেটের কথা শুনব। কেমন যাচ্ছে?
ইবাদত: খুব ভালো। নেটে মুমিনুল ভাইকে বোলিং করলাম। সব ঠিকঠাক চলছে। গরমের মাঝেও পরিশ্রম করছি। সামনে তো বড় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
খুলনার ক্যাম্প থেকে হঠাৎ করে শেষ ওয়ানডে খেলতে জিম্বাবুয়ে গেলেন এবং দলকে জেতালেন…
ইবাদত: হঠাৎ করেই এসেছি আমি। এটা আসলে অপ্রত্যাশিত ছিল। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা। আমি শুধু সুযোগটা সামনে কাজে লাগাতে চাই।
পেসারদের জন্য দিন দিন কঠিন হচ্ছে জাতীয় দলে টিকে থাকা। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো হয়ে যাচ্ছে কিনা?
ইবাদত: এটা আমার কাছে ভালো লাগছে। এটা হচ্ছে হেলদি কম্পিটিশন। আপনারা কেমনভাবে নেবেন জানি না। আমরা যারা ফাস্ট বোলার গ্রুপ আছি সবাই বিশ্বাস করি এটা ভালো প্রতিযোগিতা। যে আমরা সবাই একজন আরেকজনের সঙ্গে লড়াই করছি। যার কারণে শেষ দুই বছরে আমাদের উন্নতির গ্রাফটা দেখেন…
সবাই উন্নতি করে যাচ্ছি। স্বাস্থকর প্রতিযোগিতার বহিঃপ্রকাশ হয়ত এটি।
সব পেসার কেন একসঙ্গে ফর্মে থাকে না?
ইবাদত: কেউ না কেউ তো দলের হাল ধরছেন। এটাই তো আমাদের জন্য সুখবর। যে আজকে তাসকিন ধরবে কাল মোস্তাফিজ ধরবে, পরদিন শরিফুল ধরবে তারপরে আমাকে ধরতে হবে এটাই তো আলহামদুলিল্লাহ, যে আমরা সবাই উন্নতি করতেছি।
বড় ইভেন্টে ব্যাটারদের জন্য উইকেট তৈরি করা হয়। আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ, অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ।
ইবাদত: আরব আমিরাতে তো আমরা সবাই জানি ব্যাটিং সহায়ক উইকেট হয়। আমাদের ফাস্ট বোলারদের বুদ্ধি করে বল করতে হবে। শর্টার ফরম্যাট, বুদ্ধি করে বল করা ছাড়া উপায় নেই। এছাড়াও আমাদের শক্তির জায়গায় ঠিক থাকতে হবে এবং ভ্যারিয়েশন তো লাগবেই। অস্ট্রেলিয়ার জন্য এখনো পরিকল্পান করিনি। আগে এশিয়া কাপটা শেষ করতে চাই ভালোভাবে।
এ বছরই মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জেতালেন। সাদা বলেও অভিষেকটা দুর্দান্ত হলো। অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে এখন…
ইবাদত: মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট আসলে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় একটা অর্জন। শুকরিয়া যে আমরা ওই ম্যাচটা সবাই ভালো খেলেছি এবং জিতেছি। আসলে ওখান থেকে আমার আত্মবিশ্বাসের লেভেলটা বিল্ডআপ হয়েছে। যে আত্মবিশ্বাস আছে চেষ্টা করছি ওটা ধরে রাখতে।
ওয়ানডে দলে আগের কয়েকটি সিরিজে ডাক পেলেও জিম্বাবুয়েতেই প্রথম খেলার সুযোগ এল। ভালোও করলেন। গতি কি সাদা বলে ম্যাটার করেছে?
ইবাদত: অবশ্যই। আমার স্ট্রেন্থ এটা। টেস্টে দেখা যাচ্ছে আমাকে সারা দিন একই পেসে বল করতে হয়। যেহেতু সারাদিন এক পেসে বল করতে হয় ওই জিনিসটা আমি ট্র্যান্সফার করেছি ওয়ানডেতে। দশ ওভার বল করব ফাস্ট অ্যান্ড এগ্রেসিভ থাকব। ক্যাপ্টেন আমার কাছে যেটা চায় সবসময়। ক্যাপ্টেন আমার কাছে চায় ফাস্ট অ্যান্ড এগ্রেসিভ আর কিছুই দরকার নাই।। এটাই আমি ক্যারি করতে চাই।
সিকান্দার রাজাকে অসাধারণ ইয়র্কারে বোল্ড করলেন। নইলে শেষ ম্যাচের চ্যালেঞ্জ জেতা সহজ হতো না। কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
ইবাদত: আমি তেমন সুযোগ পাইনি (পরিকল্পনার)। ম্যাচের আগের দিন একটা টিম মিটিং ছিল আর আমাদের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট ভিডিও ফুটেজ পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি দুই দিন আগে পৌঁছে এক দিন অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছি। ওখান থেকেই নিজের পরিকল্পনাগুলো নিজে নিজেই তৈরি করে নিয়েছি। যে কীভাবে বল করতে পারি। দেশে থেকে দেখে গেছি সে (রাজা) খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিল, দুইটা ম্যাচেই সেঞ্চুরি কবল। তখন তার সামনে তো সর্বোচ্চ যে অস্ত্র আছে সেটাই ব্যবহার করতে হবে। প্রথম বলটাই আমার বেস্ট স্ট্রেন্থে ছিল।