তুরস্কের ধ্বংস্তুপ থেকে ৫২ ঘণ্টা পর ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কর্মীদের হাসিমুখে শিশুটিকে কোলে করে ধ্বংস্তুপ থেকে বের করতে দেখা গেছে।
বুধবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায়ে প্রদেশে প্রায় ৫২ ঘণ্টা পর একটি ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তুপ থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করা হয়। ধ্বংস্তুপ থেকে বের করে তাকে তার অপেক্ষমাণ মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার মা আলিঙ্গন দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ভূমিকম্পে তুরস্ক এবং সিরিয়ায় হাজার হাজার বিল্ডিং বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়েছেন বহু মানুষ। এই অবস্থায় ধ্বংসস্তুপের নিচে জীবিত মানুষদের খুজে বের করতে উদ্ধারকর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ। নিহতের সংখ্যা কয়েকগুণ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের বসবাস। সেখানকার সবাই কোনো না কোনোভাবে সংকটে পড়েছেন। শুধু তুরস্কের ভূমিকম্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ মানুষ। আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।
তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০টি প্রদেশ। সেখানকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ও উদ্ধারকাজে গতি আনতে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশ। সিরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা এটি। ফলে তুরস্কের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিরিয়ার আলেপ্পো, ইদলিব, হামা ও লাতাকিয়া প্রদেশ। গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়ার এই সীমান্তবর্তী এলাকা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। সেখানকার ৪০ লাখ মানুষ ত্রাণসহায়তার ওপর নির্ভরশীল।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মতে, ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি তুরস্ক অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হলেও ১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার অবস্থা খুবই নাজুক। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন সংস্থা ইতিমধ্যে মানবিক সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহ শুরু করেছে।