চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাজধানীর ১৫ শতাংশ মানুষের দখলে ৭৭ শতাংশ সড়ক

যানজটে নাকাল রাজধানীর মানুষ-১

রাজধানীর আজিমপুরে থাকেন মারুফ হোসেন। গণপরিবহনে অফিস করেন বনানী। কয়েক মাস আগে হালকা যানজট পড়লেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যে অফিস পৌঁছাতে পারতেন। কিন্তু, কিছুদিন ধরে সেটা হচ্ছে না। কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা লাগছে কর্মস্থলে পৌঁছাতে, ফেরার পথে আরও বেশি। মানে আট ঘণ্টা অফিস করতে তাকে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে প্রায় ছয় ঘণ্টা।

মারুফ হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সকালে স্বভাবতই বেশিরভাগ মানুষের অফিসে যাওয়ার তাড়া থাকে। কিন্তু, বর্তমান সময়ে রাস্তায় প্রাইভেট কার বেড়ে যাওয়ায় যানজট বেশি মনে হচ্ছে। সকাল-সন্ধ্যা প্রত্যেকটি গণপরিবহনের সামনে কমপক্ষে ১০০টি প্রাইভেট কার দেখা যায়। এসব প্রাইভেটকারে যাত্রী কিন্তু এক থেকে সর্বোচ্চ দু’জন।

ঢাকাবাসীর জন্য রাস্তায় মারুফ হোসেনের মতো এরকম ভোগান্তি এক ধরনের নিত্যউপহার। গণপরিবহন নিয়ে পরিকল্পনাহীনতা এবং অপর্যাপ্ত সড়কের সঙ্গে একই রাস্তায় যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক যান, নানা ধরনের নিয়মহীনতার জন্য বছরের পর ঢাকা যানজটের জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। যানজটকে আরও বাড়িয়েছে ব্যস্ত সড়কে অবৈধ পার্কিং।

শান্তিনগর থেকে বাড্ডায় অফিস করা বেলায়েত হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, মৌচাক এলাকায় প্রচুর প্রাইভেট কার অবৈধভাবে পার্কিং করা থাকে। কারণ ওই ভবনগুলোর কোন পার্কিং ব্যবস্থা নেই। অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য যানজট আরও বাড়ছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-এর হিসাবমতে, তিলোত্তমা নগরী হিসেবে খ্যাত রাজধানী ঢাকার ৭৭ শতাংশ রাস্তা দখল করে রাখে প্রাইভেট কার। রাইড শেয়ারিংসহ এসব ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহারকারী রাজধানীর ১৫ শতাংশ মানুষ। এর মানে রাজধানীর ৮৫ শতাংশ মানুষ ব্যবহার করছে ২৩ শতাংশ রাস্তা।

প্রতিদিন যারা যাতায়াত করেন, বিশেষ করে যারা সপ্তাহে ছয়দিন অফিসে যান, তাদেরকে যানজট পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে প্রাইভেট কারকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে বেশি, তুলনায় গণমানুষের জন্য গণপরিবহন সবসময় উপেক্ষিত থেকেছে। এমনকি যে বিআরটিসি’র সাধারণ মানুষের জন্য গণপরিবহন চালানোর কথা তারা তাদের বাস উচ্চ আদালত থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়ে রেখেছে।

রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোর প্রতিদিনের চিত্র

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)-এর তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরীতে তাদের চলমান বাসের সংখ্যা ৭২৩। এর মধ্যে গণপরিবহন হিসেবে ৪৬৩টি চললেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ভাড়ায় চলছে ২৩৫টি। এর বাইরে স্কুল বাস আটটি এবং মহিলা বাস ১৭টি।

ভাড়ায় চলা গাড়িগুলো জনসাধারণের জন্য চালানো হলে দুর্ভোগ কম হতো কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন: বিআরটিসি’র ভাড়ায় চালিত গাড়িগুলোও কিন্তু জনসাধারণের সেবায় নিয়োজিত। ভাড়ায় চালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মরত ব্যক্তিদের নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে আমরা সাধারণ যাত্রীদের সুবিধায় তাদের গাড়িতে নিচ্ছি।

যাত্রীরা বলছেন, বিআরটিসি যখন জনগণের জন্য আনা বাস কোন প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়ে দেয় তখন সেটা তাদের কিছু মুনাফা দিলেও জনগণ বঞ্চিত থাকে।

রাজধানীর বিজয় সরণীতে দাঁড়িয়ে রাজিউর রহমান নামে একজন বিআরটিসি’র বাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন: একটি সাধারণ বাস যদি ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারিকে বহন করে কিংবা একটি ডাবল ডেকার ১০০ জনকে, তাহলে সাধারণ বাসটি যাওয়া-আসা মিলে দিনে ১০০ জনকে এবং একটি ডাবল ডেকার ২০০ জনকে সেবা দেয়। কিন্তু, ওই বাসগুলো গণপরিবহন হিসেবে চললে ১০ গুণ মানুষকে বহন করতে পারতো, ১০ গুণ মানুষকে সেবা দিতে পারতো; যা যানজট কিছুটা হলেও কমাতে পারতো।

‘‘আমাদের সড়ক পরিবহন মন্ত্রী আছেন। গণপরিবহনের বিষয়টা তিনি কতোটা গুরুত্ব দেন জানি না, হয়তো দেন… কিন্তু যদি সত্যিই মানুষের কথা ভাবতেন, মানুষকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে চাইতেন; তাহলে বিআরটিসি’র বাস এভাবে ভাড়া দেওয়া হতো না, আর বাসের সংখ্যাও হতো অনেক,”  উল্লেখ করে রাজিউর রহমান বলেন: পৃথিবীর অনেক দেশেই সিটি সার্ভিস রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। আর আমরা সেগুলো মাফিয়াদের হাতে ছেড়ে দিয়েছি। রাষ্ট্রের যে বাসগুলো আছে সেগুলোও ভাড়া দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে।

‘এভাবে জনগণকে বঞ্চিত করা হচ্ছে,’ বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

ভিডিওতে দেখুন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে চলা বিআরটিসি’র বাস

বাস ভাড়া দিয়ে জনমানুষকে গণপরিবহন থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি সরাসরি স্বীকার না করলেও কর্মকর্তারা বলছেন: ভাড়ায় চলা বাসগুলোকে রমজান মাসে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের নামানোর পর সাধারণ যাত্রীদের বহন করতে বলা হয়েছে। বিকাল ৩টার পর থেকে অতিরিক্ত ট্রিপ দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ডিপো ম্যানেজারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিআরটিসি’র আরেকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রমজান উপলক্ষে জনসাধারণ যেন বাসায় গিয়ে ইফতার করতে পারে সেজন্য আমরা বিআরটিসির সক্ষমতা অনুযায়ী এক্সটা ট্রিপের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের মনিটরিং টিম ব্যাপারটি দেখভাল করছে। ডিপো ম্যানেজার থেকে শুরু করে চালক ও তার সহকারীরা নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করছেন।

সাধারণ যাত্রীরা অবশ্য একে কোন সমাধান বলতে নারাজ। ফার্মগেটে দাঁড়িয়ে শহিদুল ইসলাম নামে একজন বললেন, জনগণের টাকায় কেনা বাস কোন প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হবে কেন! সারা বছরই বিআরটিসি’র সব বাস সাধারণ যাত্রীদের বহন করা উচিত।

প্রয়োজনের তুলনায় ঢাকায় রাস্তা এক তৃতীয়াংশ
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি আধুনিক নগরীতে মোট আয়তনের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রাস্তা বা সড়ক থাকা প্রয়োজন। কিন্তু, ঢাকায় আছে মাত্র সাত থেকে আট শতাংশ।

অর্থাৎ, প্রয়োজনের তুলনায় এ শহরে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সড়ক আছে বলে জানান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক।

ড. এম শামসুল হক

তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ঢাকা শহরের মোট আয়তন ১,৩৫৩ বর্গ কিলোমিটার আর ঢাকার বর্তমান রাস্তার মোট আয়তন ২,২০০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২১০ কিলোমিটার প্রধান সড়ক। দুই কোটি মানুষের একটি নগরীতে জনসাধারণের চলাচলের চলাচলের জন্য এ সড়ক খুবই কম।

অপ্রতুল সড়ককে যান চলাচলের জন্য আরও কঠিন করে তুলেছে অবৈধ পার্কিং। ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মুনিবুর রহমান চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, যান চলাচলের জন্য অপর্যাপ্ত সড়কের ৩০ শতাংশ বা তারও বেশি দখল হয়ে আছে অবৈধ পার্কিং এবং নানা ধরনের দখলদারদের হাতে।

এর মানে হচ্ছে, রাজধানী ঢাকার আয়তনের তুলনায় যে সড়ক থাকার কথা, আছে তার এক তৃতীয়াংশ এবং তার এক তৃতীয়াংশ আবার ব্যবহার করা যায় না। অর্থাৎ, প্রয়োজনের বিপরীতে ব্যবহার উপযোগী সড়ক মাত্র ২০ শতাংশের একটু বেশি।

এছাড়া, রাজধানীর ৭০ শতাংশ ফুটপাথও দখল করে রাখে প্রাইভেট কার। রাজধানীর বেশির ভাগ রাস্তার পাশে যেসব দোকান, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন রয়েছে, তাদের নিজস্ব কোন পার্কিং ব্যবস্থা নেই। ফলে রাস্তার অর্ধেকটা তারা দখলে নিয়ে গাড়ি পার্কিং করে।

রাজধানীতে তিন লাখের বেশি যানের ধারণ ক্ষমতা নেই
ট্রাফিক বিভাগের হিসাবে, রাজধানীতে যে পরিমাণ রাস্তা আছে তাতে তিন লাখের মতো গাড়ি চলতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তথ্যমতে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত রাজধানীতে নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ১০ লাখ, আর সারা দেশে ৫০ লাখ।

বিআরটিএ’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ১৯৮৭ সালে বিআরটিএ গঠনের সময় সারা দেশে নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার এবং মোটরযান চালকের সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৯০ হাজার। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত মোটরযানের সংখ্যা ৫০ লাখের কাছাকাছি এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী মোটরযান চালকের সংখ্যা অন্তত ৪০ লাখ।

বিআরটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে প্রায় চার লাখের কাছাকাছি প্রাইভেট কার থাকলেও রাজধানীতে নিবন্ধন করা প্রাইভেট কারের সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজারের বেশি। এসব গাড়ির বেশিরভাগই ঢাকায় চলে। পাশাপাশি প্রতিদিন ঢাকার রাস্তায় নামে অন্তত ৫০টি নতুন গাড়ি, যার বেশিরভাগই প্রাইভেট কার। আবার নতুন গাড়ি নামার বিপরীতে মেয়াদউত্তীর্ণ গাড়ি উঠে যাওয়ার তেমন কোন চর্চা নেই।

অন্যদিকে, রাজধানীর অনেক গণপরিবহনেরই ফিটনেস শেষ হয়েছে অনেক আগে। বিআরটিএ বলছে, রাজধানীতে দেড় হাজার বাসের ফিটনেস নেই। কখনো দেখা যায়, পুলিশ ১০টা বাস পরীক্ষা করলে ৯টারই ফিটনেস পাওয়া যায় না।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, ফিটনেসহীন গাড়ি আটকালে বা তুলে নিলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়বে, তাই তেমন গভীর কোন অভিযান চালানো হয় না। এর সুযোগ নেন গাড়িচালকরা। ট্রাফিক বিভাগের এক জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় গণপরিবহনের ৮৭ শতাংশ বাস-মিনিবাসই ট্রাফিক আইন মানে না।

১৫ শতাংশ মানুষকে বহন করা গাড়ির দখলে ৭৭ শতাংশ রাস্তা
তবে, রাজধানীতে নিত্য যানজটের বড় কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা অপ্রতুল রাস্তা এবং সড়কে ছোট গাড়ি বেশি চলাকে দায়ী করেছেন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, গত কয়েক বছরে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়েছে ৪৯  শতাংশএবং প্রাইভেট কার ১৮ শতাংশ। বিপরীতে গণপরিবহন দুই শতাংশের মতো বেড়েছে।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) জানাচ্ছে, রাজধানীতে বাস রুটের সংখ্যা প্রায় ৩০০, সম্প্রতি কিছু রুট বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। বর্তমানের রুটগুলোতে ৩০ হাজারের মতো গাড়ি চলে। তবে, বেশকিছু রুট অকার্যকর, কিছু রুটে প্রয়োজনের তুলনায় গাড়ি বেশি হলেও কিছু রুটে কম। বিকল্প হিসেবে তাই মানুষকে রাইড শেয়ারিং-এর মোটর সাইকেল ব্যবহার করতে হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়ক অনুপাতে প্রাইভেট গাড়ি বেশি হওয়াই গণজ্যামের প্রধান কারণ।

বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. এম শামসুল হক বলেন: রাজধানীর ১৫ শতাংশ লোক প্রাইভেট কার ব্যবহার করে। কিন্তু, ৭৭ শতাংশ রাস্তা দখল করে রাখে প্রাইভেট কার।

ভিডিও সাক্ষাতকারে ড. এম শামসুল হক

তিনি বললেন, ‘আমরা গণপরিবহনকে উৎসাহ দেয়ার জন্য কিছুই করিনি। প্রাইভেট কারকে উৎসাহিত করতে ফ্লাইওভার করা হয়েছে। তাতে প্রাইভেট কারের সংখ্যা বেড়েছে, যানজট বাড়িয়েছে। এরপরও আমরা প্রাইভেটকারে প্রণোদনা দিয়েছি, সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি কেনার জন্য আমরা কম সুদে ঋণ দিয়েছি এবং বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে প্রচুর গাড়ি এনেছি। এসবের মাধ্যমে যানজট বেড়েছে।’

‘আসলে এসির ভেতর বসে থাকলে শুধু অপেক্ষার সময়টা ছাড়া জনগণের জন্য তা কতোটা কষ্টের সেটা বুঝা যাবে না। আবার আমরা ফুটপাথকে পথচারীবান্ধব করতে পারিনি। পথচারীরা রাস্তায় না হেঁটে ফুটপাথে হাঁটবে। পার্কিংয়ের মাধ্যেমে রাস্তার ধারণ ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছি। ফুট ওভার ব্রিজ বানিয়েছি কিন্তু চলার মতো করতে পারি নাই,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: আমাদের করণীয় ছিল প্রাইভেট কারকে নিরুৎসাহিত করা, গণপরিবহনকে প্রণোদনা দেওয়া। আমরা উল্টো করেছি, বড় গাড়ির অপারেশন চার্জ এতো বাড়িয়ে দিয়েছি এখন ট্রিপ বেশি দিতে পারে না। এটা আবার চালকদের বেশি উশৃঙ্খল বিশৃঙ্খল করছে।

মুনিবুর রহমান

পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিকের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান এ বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: প্রাইভেট কার নিরুৎসাহিত করার কাজ আমাদের না, এটার লাইসেন্স বিআরটিএ দিয়ে থাকে। গাড়ি বাতিল করার ক্ষমতাও বিআরটিএ’র। আমরা গাড়ির আইনগত বিষয়গুলো রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস এসব দেখে থাকি। আমরা নির্দিষ্ট একটা জরিমানা ও সাময়িক একটা ব্যবস্থা নিতে পারি। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় গাড়ি কমানো এটা সরকারের অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তব্য।

তিনি বলেন, ট্রাফিক সেইফটি ম্যানেজমেন্টের অনেকগুলোর উপাদানের একটি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। এখানে বিআরটিএ, বিআরটিসি, ডিটিসিএ, ডিএনসিসি, ডিএসসিসি আছে। রাজধানীর যানজট নিরসনে তাদের সকলেরই সামষ্টিক সমন্বয় জরুরি।

আগের মেয়রদের মতো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এজন্য রাজধানীর সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা সিটি কর্পোরেশনের কাছে নিয়ে আসার পক্ষে। তবে, এ বিষয়ে অতীতের মতো এখনও কোন অগ্রগতি নেই।