আগামী ৭ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়ে সমাবেশ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সোমবার ১ জানুয়ারি সকালে ‘একতরফা ভোট বয়কট করুন’, আহ্বান জানিয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এ সমাবেশ হয়। পরে একটি মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা হয়ে ফকিরাপুল ও বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সেসময় আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে কাকরাইল মোড়ে সমাবেশ এবং গণসংযোগ-মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গণসংযোগপূর্ব এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমম্বয়ক ইমরান ইমন।
সভা পরিচালনা করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ এখন ‘সুষ্ঠু’ নির্বাচন দেখাতে মরিয়া। সেজন্য নিজের দলের লোকজনকে প্রতিদ্বন্দ্বী বানিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে আজ স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন বানিয়ে ফেলেছে তারা। যদিও প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসনে কার্যকর কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই ২০১৪ সালের মতো তারা ইতিমধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেছে। সরকার বিরোধী দলকে বিদেশ নির্ভর বলে অভিযুক্ত করে, কিন্তু আসলে আওয়ামী লীগী যে বিদেশ নির্ভর সেটা প্রমাণিত হচ্ছে বারবার “সুষ্ঠু নির্বাচন দেখাতে হবে” এই ঘোষণার মধ্যে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমরা একতরফা ভোট বাতিল করে দেশের স্বার্থে, দেশের নাগরিকের স্বার্থে সুষ্ঠু ভোট চাচ্ছি। তামাশার নির্বাচনটা বাতিল হলে দেশ ভয়াবহ বিপদ থেকে বেঁচে যাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজেদের গদি রক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় সব ধরনের ক্ষমতা ব্যবহার করে একটা ‘জোরজবরদস্তিমূলক ও পরিকল্পিত একতরফা নির্বাচন’ আয়োজন করছে। এই নির্বাচনকে সুষ্ঠু দেখালেই এটা সুষ্ঠু হয়ে যাবে না। এই তামাশার নির্বাচন বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে ভয়ংকর হুমকির মধ্যে ফেলবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এটা যে ভূয়া নির্বাচন মানুষ তা বোঝে। সেকারণে মানুষ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এবং গণজোয়ারের মধ্যে দিয়ে ভোট বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে রাজনৈতিক সংকট সমাধান করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করার উদ্যোগ নিতে বলেন।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের সর্বাত্মক অনাস্থা সত্ত্বেও এরা দমন-পীড়ন করে, ভূয়া নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে বদ্ধপরিকর। গণআন্দোলন, গনজোয়ারের মধ্য দিয়ে এদেরকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দিতে হবে। সে কারণে বিজয় অর্জন না হওয়া অবধি মানুষ রাজপথ থেকে ঘরে ফিরবে না, লড়াই চলবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডি’র সহ সভাপতি এডভোকেট কে এম জাবের, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।