নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে গত কিছুদিন বেশ আলোচনায় ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ফরম্যাট ওয়ানডে। কেউ বলছেন একদিবসী ক্রিকেট আর চলছে না, মরতে বসেছে, শিগগিরই বিলুপ্ত হবে। কেউ আবার সে পর্যন্ত অপেক্ষায় রাজি নন, বলছেন ওয়ানডেকে যতদ্রুত সম্ভব বাতিলের খাতায় ছুঁড়ে ফেলো। কুইন্টন ডি কক অবশ্য সেই দলে নন। সাউথ আফ্রিকান তারকার বিশ্বাস, ৫০ ওভারের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আছে। তিনিও ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যেতে আগ্রহী।
‘ওয়ানডেতে খেলোয়াড়রা যেভাবে ব্যাটিং ও বোলিং প্রতিযোগিতায় ভালো করছে, তাতে ফরম্যাটটি এগিয়ে যাচ্ছে। এটির ভবিষ্যৎ আছে এবং আমাদের অনেকেই এখনও ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিততে চাই। এখানে খেলার জন্য অনেককিছু আছে।’
ডি কক অবশ্য স্বীকার করেছেন, কোন ফরম্যাটে অংশগ্রহণ করতে হবে তা নির্ধারণ করা আরও কঠিন হয়ে উঠছে। অনেক খেলোয়াড়ের জন্য একটি ফরম্যাট বাদ দেয়াই এখন একমাত্র বিকল্প।
‘এটি খেলোয়াড়দের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তিন ফরম্যাট অনেক এবং মনে হচ্ছে ক্যালেন্ডারে আরও ম্যাচ বাড়ছে। খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং যদি তারা মনে করে তাহলে এটা (তিনটি ফরম্যাটেই খেলা) করতে পারে। তবে ছেলেদের সিদ্ধান্ত নিজেদেরই নিতে হবে।’
ডি কক নতুন খেলোয়াড়দের তিন ফরম্যাটই চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করে বলেছেন, বয়স বা অগ্রাধিকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সব ফিট রাখাও কঠিন হয়ে পড়ে।
‘যদি এখনও তরুণ হন, তখন আপনাকে তিন ফরম্যাটেই খেলতে হবে এবং ক্যারিয়ারের জন্য কিছু কাজ করতে হবে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি কঠিন হতে শুরু করে। শরীর আগের মতো সহায়তা করে না। তখন সেটি ব্যবস্থাপনার বিষয়।’
গত বছরের শেষদিকে টেস্ট থেকে অবসর নেন ডি কক। এমন সিদ্ধান্তের জন্য নিজের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই বলেই জানিয়েছেন। এরপরও কমছে না তার ব্যস্ততা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে তিনি খেলে চলেছেন। পাশাপাশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে খেলা বেছে নিয়েছেন।
প্রথমবারের মতো বাবা হওয়ার কিছু আগে, বাড়িতে আরও বেশি সময় কাটানোর আকাঙ্ক্ষা উল্লেখ করেছিলেন ডি কক। তার সেই ইচ্ছা পুরোপুরি পূরণ হয়নি। ক্রিকেটে অতি ব্যস্ত সূচিই যার আসল কারণ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটি মাঠে গড়ালেও বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। ২৭.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল সাউথ আফ্রিকা। ৭৬ বলে ১৩ চারে ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন ডি কক।
ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর ডি কক জানালেন টেস্ট থেকে অবসরের পরও ব্যস্ততা কিছুতেই কমেনি, ‘এটি (টেস্ট থেকে অবসর) আমার ক্যালেন্ডারে মোটেও ফাঁকা জায়গা রাখেনি। অন্তত এই বছরে নয়। কয়েকটা লিগ খেলার জন্য আমাকে দলে নেয়া হয়েছে। আমি সেজন্য আনন্দিত।’
‘তবে ধীরে ধীরে এমন একটা বয়সে পৌঁছে যাচ্ছি, যেখানে ভাবতে হবে আমার ক্যারিয়ারে কোন অবস্থানে থাকতে চাই। যতক্ষণ নিজের গতিতে চলতে পারি, ততক্ষণ আমি সুখী।’
জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে সাউথ আফ্রিকার সাদা বলের ম্যাচে খেলার জন্য ডি কক পিতৃত্বকালীন ছুটি থেকে ফিরে আসেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে প্রায় দুমাস ছুটি পেয়েছিলেন। এরপর থেকে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার টানা খেলে চলেছেন।
আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলার পর ভারতের বিপক্ষে সাউথ আফ্রিকার হয়ে খেলেছেন। বর্তমানে ইংল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজে খেলে ফেললেন। সামনেও মিলবে না বিশ্রামের ফুরসত। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দ্য হান্ড্রেড ও সিপিএলে খেলবেন। এরপর ভারতে খেলবেন সাদা বলের সিরিজ।