‘অস্কার ক্যাম্পেইন হটস্পট’ বলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামডেন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকে। আর এখান থেকে ‘অন্যদিন…’ আমন্ত্রণের খবর কয়েকদিন আগেই ফেসবুক পাতায় জানিয়েছিলেন নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন। এবার জানা গেলো নর্থ আমেরিকার অন্যতম প্রধান চলচ্চিত্র উৎসব ভ্যানকুভার আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালেও নির্বাচিত হয়েছে ‘অন্যদিন…’।
ক্যামডেনে এই বছর সেরা ছবির পুরষ্কার হ্যারেল অ্যাওয়ার্ডস এর জন্য প্রতিযোগিতা করবে যে ৮টা ছবি- ‘অন্যদিন…’ সেগুলোর মধ্যে একটি। নির্বাচিত এই ছবিগুলা নিয়ে ভ্যারাইটি লিখেছে, ‘সেইসব ছবি ও নির্মাতা যারা বদলে ফেলছেন সিনেমার ভাষা’। এ বছর ভ্যানকুভার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ৭৫টি দেশ থেকে মোট ১৩৫টি ফিচার এবং ১০২টি শর্ট নির্বাচিত হয়েছে যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে একমাত্র ছবি কামারের ‘অন্যদিন…’।
গত নভেম্বরে ওয়ার্ল্ড টপ-টেন ফেস্টিভাল ইডফার মূল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমন্ত্রণ পেয়েছিলো কামার আহমাদ সাইমনের নতুন ছবি ‘অন্যদিন…’। বিশ্ব-অভিষেক হয়েছিলো দুনিয়ার সুন্দরতম থিয়েটার আমস্টারডামের পাথে তুসান্সকিতে।
ইডফা’র ওয়েবসাইটে ‘অন্যদিন…’কে লেখা হয়েছিলো ‘ক্যালাইডোস্কোপিক ও ফিলসফিক্যাল’। এর আগে মার্চে নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অফ মুভিং ইমেজ বা মমি’র ফার্স্ট লুক ফেস্টিভালে মাত্র ১৮টা নির্বাচিত ফিচারের মধ্যে প্রথম বাংলা ছবি ছিলো ‘অন্যদিন…’। উৎসব শুরু হয়েছিলো কানে ক্যামেরা দ্য’র বিজয়ী ক্রোয়েশিয়ান মুরিনা দিয়ে আর শেষ লোকার্নোতে গ্র্যান্ড প্রি বিজয়ী পোলিশ ছবি ব্যালকনি।
মমি’র ওয়েবসাইটে ‘অন্যদিন…’ এর সেগমেন্টকে বর্ণনা করা হয়েছিলো ‘আর্টিস্টিক মাস্টারপিস’ হিসেবে। গেলো জুনে ‘অন্যদিন…’ ছিলো সিডনি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যেখানে অস্ট্রেলিয়ান সেগমেন্টে জুরির দায়িত্বেও ছিলেন কামার। অস্ট্রেলিয়ার লিডিং ফিল্ম ম্যাগাজিন ফিল্ম-ইংক তখন ‘অন্যদিন…’ নিয়ে লিখেছিল, ‘ছবিটা সবচাইতে বড় পর্দায় দেখানো উচিত’।
২০১৪ তে সানড্যান্স থেকে গ্রান্ট এওয়ার্ড জয় করে ‘অন্যদিন…’এর কাজ শুরু করলেও ছবির গল্প নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ কামার। এই ছবির স্ক্রিপ্টের জন্যই ২০১৬তে লোকার্নোতে প্রথম কোন বাংলাদেশী নির্মাতা হিসাবে পিয়াতজা গ্রান্দায় রেড কার্পেট ডিরেক্টরের সম্মাননা দেওয়া হয়েছিলো কামারকে। একইসাথে পেয়েছিলেন ওপেন ডোর্সে শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার এবং আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ। আর ২০১৭তে পেয়েছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনফন্দেশিওনে এক্সক্লুসিভ আমন্ত্রণ।
দশ বছরের বেশি সময় ধরে একটা ওয়াটার ট্রিলজি বা জলত্রয়ীর কাজ করছেন কামার যেখানে প্রথম ছবি ‘শুনতে কি পাও!’ আর দ্বিতীয় ছবি ‘অন্যদিন…’ । লোকার্নোর ওপেন ডোর্স এবং জার্মানীর ডক-লাইপজিশের উদ্বোধনী ছবি ছিলো ‘শুনতে কি পাও!’ প্যারিসে সিনেমা দ্যু রিলে গ্রাপ্রি, মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন কোঞ্চ বা স্বর্ণশঙ্খ এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারসহ আরও অনেক পুরষ্কার জয় করেছিলো ছবিটি।