অস্কার হটস্পট ক্যামডেনে হ্যারেল অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী কামার আহমাদ সাইমনের ‘অন্যদিন…’ এবার নির্বাচিত হয়েছে ফ্রান্সের ফেস্টিভ্যাল অফ থ্রি কন্টিনেন্টস উৎসবের আন্তর্জাতিক ফিচার প্রতিযোগিতায়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছেন নির্মাতা কামার।
১৯৭৯ সাল থেকে প্রতি বছর নভেম্বরের শেষে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা এবং এশিয়া- এই তিন মহাদেশের ছবি নিয়ে ফ্রান্সে বসে ‘ফেস্টিভ্যাল অফ থ্রি কন্টিনেন্টস’ এর এই আসর। বছরের গুরুত্বপূর্ণ এবং আলোচিত সেইসব ফিকশন, নন-ফিকশন ফিচার ছবি দেখানো হয় এই উৎসবে। যেগুলো সিনেমার মাধ্যমে পশ্চিমা হেজিমনির বাইরে এক অন্য দুনিয়ার গল্প বলে।
উৎসবের এই আসরের প্রায় নব্বইটি ছবি থেকে আন্তর্জাতিক ফিচার প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে মাত্র দশটি ছবি। যেখানে বাংলাদেশ থেকে কামারের ‘অন্যদিন…’ ছাড়াও আছে ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রাজিল, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, ইন্ডিয়া, জাপান, কাতার ও ইরানের ছবি।
এরআগে কামারের ‘অন্যদিন…’ দারুণ সব ফেস্টিভালে প্রদর্শিত ও আলোচিত হয়েছে। এরমধ্যে লন্ডন ফিল্ম উইকের টপ টেন ফেস্টিভ্যাল লিস্টের অন্যতম আমস্টারডামে ইডফার মূল প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়ে দুনিয়ার সবচেয়ে সুন্দর থিয়েটার আমস্টারডামের পাথে তুসান্সকিতে বিশ্ব অভিষেক হয়। এরপর নিউ ইয়র্কে মিউজিয়াম অফ মুভিং ইমেজ (মমি), ওয়ারশ, সিডনি, ভ্যানকুভার, ক্যামডেন হয়ে সর্বশেষ জুরিখে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘গোল্ডেন আই’ নমিনেশন পেয়েছিলো ‘অন্যদিন…’।
ফেস্টিভ্যাল অফ থ্রি কন্টিনেন্টস উৎসবের পাশাপাশি কানাডার আরেক গুরুত্বপূর্ণ উৎসব আর আই ডি এম-এর আন্তর্জাতিক ফিচার প্রতিযোগিতাতেও নির্বাচিত হয়েছে ‘অন্যদিন…’। কানাডার মন্ট্রিয়ালে আর আই ডি এম চলবে নভেম্বরের ১৯ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত, আর ফ্রান্সের নন্তে ফেস্টিভ্যাল অফ থ্রি কন্টিনেন্টস চলবে ১৮ থেকে ২৭ তারিখ।
নির্মাতা জানিয়েছেন, দুই উৎসব আয়োজকদের পক্ষ থেকে নিমন্ত্রণ পেলেও, পিঠাপিঠি দুইটা উৎসব আর কানাডার ভিসা জটিলতায় মন্ট্রিয়ালে যাওয়া নিয়ে শঙ্কা ছিলো কামারের। তবে কানাডার ঢাকাস্থ দূতাবাসের তৎপরতায় সেই শঙ্কা এখন এখন কেটে গেছে। এরইমধ্যে ভিসা হাতে পেয়েছেন কামার, সাথে সাথেই দুই উৎসব আয়োজক সম্মিলিতভাবে পাঠিয়েছেন ঢাকা থেকে মন্ট্রিয়াল হয়ে সরাসরি ফ্রান্সের নন্তে পৌঁছানোর বিমান টিকিট।
২০১৪ তে সানড্যান্স থেকে গ্রান্ট এওয়ার্ড জয় করে ‘অন্যদিন…’এর কাজ শুরু করলেও ছবির গল্প নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ কামার। এই ছবির স্ক্রিপ্টের জন্যই ২০১৬তে লোকার্নোতে প্রথম কোন বাংলাদেশী নির্মাতা হিসাবে পিয়াতজা গ্রান্দায় রেড কার্পেট ডিরেক্টরের সম্মাননা দেওয়া হয়েছিলো কামারকে। একইসাথে পেয়েছিলেন ওপেন ডোর্সে শ্রেষ্ঠ পুরষ্কার এবং আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ। আর ২০১৭তে পেয়েছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনফন্দেশিওনে এক্সক্লুসিভ আমন্ত্রণ।
দশ বছরের বেশি সময় ধরে একটা ওয়াটার ট্রিলজি বা জলত্রয়ীর কাজ করছেন কামার যেখানে প্রথম ছবি ‘শুনতে কি পাও!’ আর দ্বিতীয় ছবি ‘অন্যদিন…’ । লোকার্নোর ওপেন ডোর্স এবং জার্মানীর ডক-লাইপজিশের উদ্বোধনী ছবি ছিলো ‘শুনতে কি পাও!’ প্যারিসে সিনেমা দ্যু রিলে গ্রাপ্রি, মুম্বাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন কোঞ্চ বা স্বর্ণশঙ্খ এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারসহ আরও অনেক পুরষ্কার জয় করেছিলো ছবিটি।