১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতিতে ঈর্ষনীয় সাফল্য লাভ করেছে। শিল্প বানিজ্যের সাথে তাল মিলিয়ে বেড়েছে নগরায়ন। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ নগরবাসী ছিল। ২০১১ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮ শতাংশ। যা ইতিমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ববৃহৎ। বিশ্বের ক্রমবর্ধমান মেগাসিটিগুলোর মধ্যে ঢাকা এখন অন্যতম। দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ শতাংশের বেশির বসবাস রাজধানীতে। জাতিসংঘের তৈরি ‘ওয়ার্ল্ড আরবানাইজেশন প্রসপেক্টাস: দ্য ২০১৪ রিভিসন’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকা হবে বিশ্বের ষষ্ঠ জনবহুল নগরী। লোকসংখ্যা হবে ২ কোটি ৭০ লাখ। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের ফলে বর্ধিত নগরায়নে বিপুল জন¯্রােতের বিপরীতে বদলেছে শহরের ধরণ, গড়ন ও পরিধি। কেবলমাত্র রাজধানী ঢাকাই নয়, একই কারণে অবকাঠামো ও পরিধিগতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যান্য বিভাগীয় শহরও জেলা শহরের ব্যাপ্তিও। বাড়তে থাকা নাগরিকের ক্রমবর্ধমান আবাসন সমস্যা নিরসনে আবাসন শিল্প এগিয়ে এসেছে। নগরায়নের ক্রমাগত চাপকে সামাল দিতে নাগরিক জীবনমান নিশ্চিতকরণ, পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা ও আবাসন পরিকল্পনা নিয়ে দেশের আবাসনখাত হেঁটেছে সমান গতিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের নাগরীক সুযোগ সুবিধার সহজলভ্যতা, পুঁজির সঠিক বিনিয়োগ ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, উন্নত আবাসন ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবাসন খাতে কয়েক দশকের পরিবর্তন এক কথায় চোখে পরার মতো।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২০ সালের সূচক অনুযায়ী বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ ২০৩৫ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিনত হবার পথে ‘সবার জন্য আবাসন’ নীতি আবাসন খাতের সম্প্রসারণে ব্যাপক অবদান রাখবে। সরকারের আবাসনখাত সহায়ক নীতি সহায়তা, পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনায় উন্নত আবাসনের ছোঁয়া দেশের প্রত্যন্ত পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অনেকেই।
পরিসংখ্যাণে দেখা যায় বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬.৬ শতাংশ যা ২০১৬-২০১৭, ২০১৭-২০১৮ ও ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৭ শতাংশের উপরে ছিল এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৮ শতাংশ অতিক্রম করে। কাভিডকালীন সময়েও ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঈর্ষণীয় ৬.৯৪ শতাংশ ছিল। দেশের অন্যতম সম্ভবনাময় আবাসন খাত প্রতিবছর জিডিপির এই প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পরিসংখ্যাণ বলছে মোট দেশজ জিডিপির ৭ শতাংশ আসে সরাসরি রিয়েল এস্টেট খাত থেকে। এছাড়াও এখাতের সাথে সংযুক্ত ব্যাকআপ লিংকেজ ইন্ড্রাস্টি সহ জিডিপিতে মোট অবদান ১৪ শতাংশেরও বেশি। সম্ভবনাময় এই খাতের সঙ্গে জড়িত আছে ২১১ টি থেকে ২৬০ টি সংযুক্ত খাত।
সরল কথায় বর্তমানে আবাসন খাত দেশের সার্বিক শিল্পোয়ন্নণে অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর তাই অব্যাহত এই অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে কখনো যৌথ উদ্যোগ, কখনো ব্যক্তি উদ্যোগকে সহায়তা করেছে রাষ্ট্র। নীতি সাহায্য থেকে শুরু করে দ্রুত বর্ধমান এই খাতকে নানামূখী পদক্ষেপ এ খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির ধারা অক্ষুণœ রাখতে সহায়তা করে চলছে।
৯০ এর দশকের শুরুতে শহরমুখি জনস্রোত , শিল্প-বানিজ্য উদারীকরণ ও তেজী অর্থনৈতিক প্রবণতায় শুরু হয় অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ, রেডি প্লট বিক্রয়, বৃহদাকায় আবাসন পরিকল্পনার। উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত ও স্বচ্ছল মধ্যবিত্ত অনেকেই সে সময় আগ্রহী হয় আধুনিক আবাসন ব্যবস্থায় সংযোজিত হতে। ক্রমশঃ দেশে কর্পোরেট ব্যবসার সম্প্রসারণ, গার্মেন্টস খাতে অগ্রগতি এবং বিনিয়োগ বান্ধব পরিস্থিতিতে শহরের আবাসন খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। বাড়ে ক্রেতা এবং এ খাত থেকে সরাসরি সুবিধাভোগীর সংখ্যা। অনেকেই নিজের পুরোনো ভবন বদলে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ৯০ এর দশকের মাঝামাঝি থেকে আবাসন শিল্প বিশেষত বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণে জোয়ার দেখা যায়।
ইস্টার্ণ হাউজিং লিমিটেড
এ সময়টায় দেশে প্রথমবারের মতো বৃহৎ আবাসন পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হয় দেশের আবাসনশিল্পের অন্যতম পথিকৃত জহুরুল ইসলাম। রাজধানীর মধ্যেই শুরু করেন তার বিশাল আবাসন পরিকল্পনা। তাঁর পরিকল্পনায় গড়ে ওঠে সে সময়ের সর্ববৃহৎ আবাসন প্রকল্প বনশ্রী ইস্টার্ন হাউজিং প্রজেক্ট। যা পরবর্তিতে বনশ্রী হাউজিং প্রজেক্ট নামে ব্যাপক পরিচিতি পায়। এছাড়াও ইষ্টার্ণ হাউজিং লিমিটেড, ইষ্টার্ণ টাওয়ার, ইষ্টার্ণ ভিউ, ইষ্টার্ণ পয়েন্ট, ইষ্টার্ণ ভ্যালি, ইষ্টার্ণ নিকুঞ্জ ইত্যাদি নানা আবাসন প্রকল্প নগরবাসীর মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই আবাসন খাতের ব্যবসায় এসেছিলেন জহুরুল ইসলাম। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠান ঢাকার বনশ্রী, আফতাবনগর, মহানগর, নিকেতনসহ বেশ কিছু হাউজিং প্রকল্প গড়ে আধুনিক নগরায়ণে ভূমিকা রেখেছে।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ি জহুরুল ইসলাম পঞ্চাশের দশকেই মিরপুর, সাভার, জয়দেবপুর, কালিয়াকৈর এবং রূপসী অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ জমি ছাড়াও ঢাকা শহরে জমি কেনেন, পরে সেগুলোর অনেকটাই শিল্প স্থাপন ও আবাসিক গৃহ নির্মাণের কাজে লাগান। অনেকের মতে ঢাকার নগরায়ণে ৪০ শতাংশ জহুরুল ইসলামের অবদান। অপরিকল্পিত ও দূষণযুক্ত রাস্তাবিহীন শহরের বিপরীতে তিনি প্রথম গড়ে তুলেছেন অসংখ্য আবাসিক প্রকল্প, অ্যাপার্টমেন্ট ভবন। বর্তমানে প্রয়াত জহুরুল ইসলামের ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্ত মঞ্জুরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড দেশের অন্যতম বৃহৎ আবাসন প্রকল্প হিসেবে আশির দশকের শেষে আবির্ভাব হয় বসুন্ধরা হাউজিং এর। বসুন্ধরা আবাসন নতুন মাত্রা যুক্ত করে বসুন্ধরা হাউজিং প্রকল্প বেসরকারী খাতে আবাসন প্রকল্পের ভাবনা বদলে দেয়। বারিধারা, এয়ারপোর্ট সংলঘ্ন এলাকায় নির্মিত হয়, দক্ষিণ এশিয়া এবং দেশের সর্ববৃহৎ আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা। এতে থাকে প্রসস্থ সড়ক, পরিকল্পিত আবাসন এবং অতিপ্রয়োজনীয় নাগরীক সুযোগসুবিধা সম্বলিত অ্যাপার্টমেন্ট, ডুপ্লেক্স, প্লট, ব্যক্তিগত ভবন। একে একে সংযুক্ত হয় বিশ্বমানের শপিং কমপ্লেক্স, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ, এভারকেয়ার হাসপাতাল, বসুন্ধরা চক্ষুহাসপাতাল সহ শিক্ষা চিকিৎসা সহ উন্নত নাগরীক সুবিধা। খোলামেলা পরিবেশের এই আবাসিক এলাকায় খেলাধুলার মানোন্নয়নে বসুন্ধরা নির্মিত হতে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় এবং আধুনিক সুযোগসুবিধা সম্বলিত ক্রীড়া কমপ্লেক্স। ফুটবল ও ক্রিকেটের জন্য দু’টি আন্তর্জাতিক মানের মাঠ সহ হচ্ছে পৃথক চারটি মাঠ। কমপ্লেক্সটি প্রায় তিনশ বিঘা জায়গার ওপর নির্মিত হচ্ছে যার খরচ প্রায় ১৫০০ কোটি টাকারও বেশি। সবকিছুর সমন্বয়ে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা হয়ে উঠেছে আবাসনের এক নিরাপদ স্থান। সম্প্রতি এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্লট-ফ্ল্যাটের চাহিদা বেড়েছে ২৪৩ শতাংশ। একই সঙ্গে দেশের সর্ববৃহৎ এ আবাসিক এলাকায় ভাড়া ফ্ল্যাটের চাহিদাও বেড়েছে ৭৪ শতাংশ।
বসুন্ধরা গ্রুপের শুরু হয় দেশের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব আহমেদ আকবর সোবহানের হাত ধরে। ১৯৭৮ সালে অভ্যন্তরীণ সেবা খাতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ব্যবাসয়িক যাত্রা শুরু করেন তিনি। বসুন্ধরা গ্রুপের পথচলা শুরু হয় ‘ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে, যা পরবর্তীকালে ‘বসুন্ধরা হাউজিং’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। গুণগত মান এবং সর্বোচ্চ সেবার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে উঠেছে ভোক্তাদের আস্থার অন্য নাম। বর্তমানে সায়েম সোবহান আনভির বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি হিসেবে দ্বায়িত্বপালন করছেন।
দেশের আবাসন শিল্পে কেবল মাত্র পরিকল্পিত হাউজিং প্রকল্পই নয়, রয়েছে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ কোম্পানিগুলোর ব্যাপক অবদান। ৯০ এর দশকের পর থেকেই দেশে নতুন নগরায়নের যে ধারা দেখা দেয় তাতে পুরোনো আবাসিক ভবনের স্থালে জায়গা করে নেয় আধুনিক বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট। সম্পুর্ণ নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি অসংখ্য ডেভেলপার কোম্পানি ভুমি স্বত্ত্বাধিকারির সাথে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নির্মাণ করে নতুন দৃষ্টিনন্দন অ্যাপার্টমেন্ট। ফলে রাজধানী ঢাকা সহ বদলে যেতে থাকে দেশের অন্যান্য শহর, জেলা শহরের চিত্র। বাংলাদেশের আবাসন শিল্প কেবল বাসস্থান সরবরাহ সরবরাহ করছে না। অন্ন বস্ত্রের মতো মৌলিক চাহিদাও পূরণ করে চলেছে। এই খাতের মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ। একই সঙ্গে ৩৫ হাজার উচ্চতর ডিগ্রিধারী প্রকৌশলী, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, স্থপতি ও উচ্চতর ব্যবস্থাপকদের কর্মসংস্থান হয়েছে এই খাতে। সঙ্গে রয়েছে ৩৫ লাখ শ্রমিক এবং তাদের ওপর নির্ভর করেই প্রায় ২.৫ কোটি নাগরিকের অন্নবস্ত্রের চাহিদা পূরণ হয়। যার অন্যতম দাবীদার অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণকারি প্রতিষ্ঠান সমুহ।
দেখে নেয়া যাক দেশের প্রথম সারির কিছু আবাসিক ও ব্যবসায়িক স্থপত্য নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চিত্র।
আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক
দেশের প্রধান ব্যবসায়িক গ্রুপ আনোয়ার গ্রুপ, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক নামে দেশের রিয়েল স্টেট নাম নাম লেখায়। দেশের স্বনামধন্য এই ব্যবসায়িক গ্রুপ, নিজেদের অন্যান্য সফল ব্যাবসার প্রতিষ্ঠানের মতোই আবাসন শিল্পেও মেধা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের মিশেলে অসাধারণ অবদান রাখে। আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক নামে নির্মাণ শিল্পে সংযুক্ত হয়ে আনোয়ার গ্রুপ, অভিজাত এবং আধুনিক নির্মাণ কৌশলের মিশেলে স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরী করে নেয়। প্রখ্যাত শিল্পপতি প্রয়াত আলহাজ্জ আনোয়ার হোসেনের যোগ্য উত্তরসুরী মানোয়ার হোসেনের দক্ষ, সৎ এবং ডায়নামিক নেতৃত্বে আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক ইতিমধ্যে দেশের অন্যতম বানিজ্যিক এবং আবাসন নির্মাণকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন
দেশের আবাসন খাতকে যে ক’টি প্রতিষ্ঠান বৃহদায়তনে রুপান্তর করেছে, তার মধ্যে অন্যতম আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন। আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন কেবলমাত্র রাজধানীতেই নয়, তারা চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজারেও তাদের বানিজ্য সম্প্রসারণ করে। বর্তমানে আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন দেশের অবকাঠামো খাতে অন্যতম অগ্রগামী একটি প্রতিষ্ঠান। এম এম এনামুল হক আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় উন্নত আবাসন প্রকল্প সফলতার সাথে শেষ করা দেশের অন্যতম শীর্ষ আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ বর্তমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।
বিল্ডিং টেকনোলজি এন্ড আইডিয়াস লিমিটেড, বিটিআই
রিহ্যাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য স্বনামধন্য রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কোম্পানি বিল্ডিং টেকনোলজি এন্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই)। বাংলাদেশের শীর্ষ দশটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মধ্যে একটি। যারা দেশে প্রথম স্মার্ট লিভিং কনসেপ্ট উদ্বোধন করে। ১৯৮৪ সালে স্থপতি আরশি হায়দার বিটিআই প্রতিষ্ঠা করেন। শুরু থেকে বিগত তিন দশক ধরেই রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিটিআই নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। বিটিআই বাংলাদেশের প্রথম রিয়েল এস্টেট কোম্পানি যারা কোয়ালিটি সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট অনুসরণ করার কারণে ‘আইএসও ৯০০১’ কর্তৃক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। স্বানামধন্য এই আবাসন কোম্পানিটি মিল্লাতেও তাদের শাখা প্রসারিত করে। সব মিলে এই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। বর্তমানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ি, উদ্যোক্তা ফায়জুর রহমান খান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। যিনি দক্ষ হাতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটিকে।
কনকর্ড রিয়েল এস্টেট লিমিটেড
দেশের শীর্ষ রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম কনকর্ড রিয়েল এস্টেট কোম্পাানি। দেশের অন্যতম প্রাচীন এই আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে দেশে ও বিদেশে ১২’শয়ের বেশি আইকনিক ভবন নির্মাণ করেছে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এসএম কামাল উদ্দিনের দক্ষ ব্যবস্থাপনায় কনকর্ড রিয়েল স্টেট এরই মধ্যে আবাসন নির্মাণ শিল্পে সাফল্যের ৪৫ বছর পার করেছে। আবাসন শিল্পে অভিজাত ও নান্দনিক অবকাঠামো নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কনকর্ড রিয়েল এস্টেট এরই মধ্যে নিজেদের উজ্জ্বল অবস্থান তৈরী করেছে। বর্তমানে দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী শাহরিয়ার কামাল পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করনে।
এশিউর গ্রুপ
ঢাকাস্থিত শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এশিউর গ্রুপ, নগরবাসীর জীবনযাত্রাকে আরো উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু করে। শুরু থেকেই আরামদায়ক জীবনযাপনের জন্য অত্যাধুনিক স্থাপত্য নকশা সমৃদ্ধ আবাসিক এবং বাণিজ্যিক স্থাপনা সরবরাহ করে আসছে কোম্পানিটি। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোহম্মদ শেখ সাদী মনে করেন, প্রতিকুলতা সত্ত্বেও দেশে রিয়েল এস্টেট এর ভবীষ্যত উজ্জ্বল।
ডোম-ইনো বিল্ডার্স লিমিটেড
প্রতিষ্ঠান সমুহের অন্যতম ডোম-ইনো। ২০০২ সাল থেকে ডোম-ইনো ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আবাসন ও বানিজ্যিক ভবন নির্মাণ শুরু করে। যা মূলত বানিজ্যিক, আবাসিক উদ্যেশে ভাড়া এবং রেডি ফ্ল্যাট বিক্রির উদ্যেশ্যে নির্মিত হয়। সংযুক্ত থাকে জীবনযাপনের সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা। উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের আবাসন সমস্যা সমাধানে ডোম-ইনো প্রয়োজন এবং পছন্দের কথা বিবেচনা করে থাকে। আর তাই আবাসন বিনির্মাণে ডোম-ইনো একটি আস্থার জায়গা তৈরী করে নিয়েছে ক্রেতা, গ্রাহক ও সংশ্লিষ্টদের মাঝে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রিজোয়ানা ইসলাম এবং আবদুস সালাম এমডি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
নাভানা রিয়েল এস্টেট
বিশিষ্ট ব্যবসায়ি শফিউল ইসলামের হাতে প্রতিষ্ঠিত নাভানা রিয়েল এস্টেট, দেশের আবাসন নির্মাণ খাতে অনন্য অবদান রেখেছে। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্বনামধন্য কোম্পানিটি স্বচ্ছতা ও নির্মাণে নতুনত্ব আনায় স্বল্প সময়ে একটি সফল অবস্থানে উঠে আসে। ইস্টার্ণ গ্রপ থেকে আলাদা হয়ে হয়ে শফিউল ইসলামের তৈরী এই প্রতিষ্ঠান নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরী করে ব্যাপক আকারে ব্যবসা সমপ্রসারণ করে। এটি নাভানা গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান।
শেলটেক প্রাইভেট লিমিটেড
শেলটেক লিমিটেড দেশের দ্রুত বর্ধনশীল রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলির মধ্যে একটি। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিটি ঢাকার আবাসন খাতে ব্যাপক অবদান রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে মোট কর্মীর সংখ্যা ৩০০০। বর্তমানে শেলটেক এর চেয়ারপার্সন ইঞ্জিনিয়ার কুতুবউদ্দিন আহমেদ। যিনি ব্যবসা ও অর্থনীতিতে বিশেষ ভুমিকা রাখার কারনে দেশে বিদেশে অসংখ্য সম্মাণজনক পুরস্কার এবং ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন। ওঝঙ সনদপ্রাপ্ত কোম্পানি শেলটেক নির্মাণ শিল্পে নিজস্ব দক্ষতার ছাপ রেখে ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে। দেশের আবাসনখাতে গুণগত মান ধরে রেখে দীর্ঘদিন আবাসন নির্মাণ শেলটেকের অনন্য অর্জন।
র্যাংগস প্রোপার্টিজ লিমিটেড
দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী আবদুর রউফ চৌধুরীর হাত ধরে ১৯৯৬ সৃষ্টি হয় র্যাংগস প্রোপার্টিজ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি সুচনার সাথে সাথে সুনামের সাথে অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ ও বাংলাদেশের হাউজিং সেক্টরে নিজেদের স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। র্যাংগস গ্রুপের অন্যতম অঙ্গপ্রতিষ্ঠান র্যাংগস প্রপার্টিজ ৯০ এর মাঝামাঝি থেকে বর্তমান সময়েও আবাসন খাতে তাদের গৌরবময় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। তার তাই অল্প সময়েই দেশের আবাসন খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। র্যাংস গ্রুপের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো র্যাংস প্রপার্টিও ধরে রেখেছে ব্যবসায়িক সুনাম। বর্তমানে তার যোগ্য উত্তরসুরী দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ি এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় দক্ষতার স্মাক্ষর রাখছেন।
রূপায়ণ হাউজিং এস্টেট লিমিটেড
রূপায়ণ গ্রুপ ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের একটি নেতৃস্থানীয় আবাসন নির্মাণ কোম্পানি। চৌকশ কর্মীবাহিনী, অসাধারণ উদ্ভাবনী কৌশল এবং দক্ষ ব্যবসায়িক নেতৃত্বে রুপায়ণ দেশের অন্যতম প্রধান আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। রুপায়ণ গ্রুপ দেশের অ্যাপার্টমেন্ট এবং হাইরাইজ ভবন নির্মাণে বিশেষ আঙ্গিক উপস্থাপন করে। বিশেষত মধ্যবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত ভোক্তাদের মাঝে তাঁদের স্বকীয় আর্কিটেকচারাল উপস্থাপন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অসাধারণ ডিজাইন এবং নাগরীক সুবিধা ও উন্নত আবাসন সুবিধার সমন্বয়ে রুপায়ণ রিয়েল এস্টেট ইতিমধ্যে ক্রেতা ও ভোক্তা সাধারণের মাঝে আস্থার অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এল এ মুকুল একজন দৃঢ় এবং সুরুচিসম্পন্ন ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব যিনি মনে করেন একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেবল ইট, পাথরের একটি বাড়ি নয়। এর সাথে জড়িয়ে থাকে মায়া, সম্পর্ক এবং আবেগের গল্প। এবং তাই প্রতিটি নির্মাণে রুপায়ণ নিশ্চিত করে সর্বোচ্চ গুণগত মান সেবা। বর্তমানে দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তা মাহির আলী খান রাতুল প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালন করছেন।
শান্তা হোল্ডিংস লিমিটেড
১৯৮৮ সালে গার্মেন্টস সেক্টর থেকে শুরু করলেও শান্তা গ্রুপের শুরু শান্তা হোল্ডিংস লিমিটেড আবাসন নির্মাণ খাতে যাত্রা শুরু করে ১৯৯১ সাল থেকে। এ পর্যন্ত বেশকিছু আইকনিক হাইরাইজার নির্মাণ করেছে। বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণেরও শান্তা হোলিংস এখন পর্যন্ত ব্যপক সাফল্য দেখিয়েছে। নির্মাণখাতে দক্ষতা ও নতুনত্বের মিশেলে শান্তা হোল্ডিংস আবাসন শিল্পে একটি নির্ভরযোগ্য নাম। দূরদর্শী উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মনির উদ্দিন এর যোগ্য নেতৃত্বে শান্তা হোল্ডিংস আবাসন খাতে আরো দৃঢ় অবস্থানে পৌঁছাবে বলে মনে করেন শিল্প সংশ্লিষ্ট মহল।
আকাশ হোল্ডিংস লিমিটেড
দেশের আবাসন খাতে বাড়তে থাকা চাহিদার সাথে সাথে এই শিল্পে বিনিয়োগ করা নতুন প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে আকাশ হোল্ডিংস লিমিটেড একটি। ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করার পর অল্প সময়েই আকাশ আবাসন শিল্পে একটি বিশেষ অবস্থান তৈরী করে নেয়। পেশাদারিত্ব, আধুনিক বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা ও ভোক্তা সন্তুষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে আকাশ হোল্ডিংস লিমিটেড বর্তমানে একটি আধুনিক আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম। আকাশ গ্রুপের ব্যবস্থানা পরিচালক বিশিষ্ট উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। দীর্ঘদিন দেশের হাউজিং সেক্টরে নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর সর্বোচ্চ ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপালন করা এই উদ্যোক্তা তাঁর প্রতিষ্ঠান আকাশ ডেভেলাপমেন্টকে দিয়েছেন অনন্য মাত্রা।
শামসুল আলামিন রিয়েল এস্টেট লিমিটেড
শামসুল আলামিন রিয়েল স্টেট দেশের আবাসিক অবকাঠামো নির্মাণ খাতে একটি নির্ভরযোগ্য নাম। ১৯৯২ সালে শামসুল আলামিন রিয়েল স্টেট দেশের আবাসন নির্মাণ শিল্পে প্রবেশ করে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, ব্যবসায়িক নেতা আলমগীর শামসুল আলামিনের নেতৃত্বে কেবলমাত্র তার প্রতিষ্ঠানই নয়, দেশের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সংগঠন রিহ্যাব নিজেদের সার্বিক অবস্থান আরো সুদৃঢ় করেছে। ক্রেতা এবং উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ীক স্বার্থ সংরক্ষণে রিহ্যাবকে আরো নির্ভরযোগ্য ও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলস প্ররিশ্রম করে যাচ্ছেন এই স্বনামধন্য ব্যবসায়ীক নেতা ও টানা চারবারের রিহ্যাব সভাপতি।
স্বদেশ প্রোপার্টিস লিমিটেড
দেশের আবাসন খাতে অনন্য একটি নাম স্বদেশ প্রপার্টিস লিমিটেড। আবাসন খাতে স্বদেশ প্রপার্টিস বিগত চৌদ্দ বছর ধরে গ্রহক সন্তুষ্টি ও উন্নত নগরায়নের জন্য প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে আসছে। স্বদেশ প্রপার্টিস ঢাকা শহর ও তার আশেপাশে কয়েকটি নান্দনিক শহর গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যা বস্তবায়ণের ধারা অব্যাহত রেখেছে নৈতিকা, সততা, স্বচ্ছতা, গ্রাহক সেবা এবং সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা এই আবাসিক প্রতিষ্ঠানটি। দেশের অন্যতম প্রধান রিয়েল স্টেট এবং ডেভেলাপার কোম্পানি হিসেবে উচ্চমানের নির্মাণ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহক সেবার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান চৌধুরী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ ওয়াকিল উদ্দিন দায়িত্বপালন করছেন।
জেসিএক্স গ্রুপ
আবাসন খাতে অন্যতম সফল প্রতিষ্ঠান জেসিএক্স গ্রুপ। দেশের আবাসন খাতে আন্তর্জাতিক মানের উন্নীত করার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী (জুয়েল) প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত জনপ্রিয় এবং দেশ ও দেশের সীমনা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে মেধা, যোগ্যতা এবং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি সফলতার নেপথ্যে গ্রাহক সন্তুষ্টিই অন্যতম কারণ বলে মনে করেন জেসিএক্স এর চেয়ারম্যান। জেসিএক্স গ্রুপের সফলতার মূলমন্ত্র হলো অঙ্গীকার। আমরা জাপানি ব্যবস্থাপনা নীতি টোটাল কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট (টিকিউএম) ব্যবহার করে নির্ধারিত সময়ে প্রোডাক্ট গ্রাহকের হাতে তুলে দেয়া এবং অঙ্গীকার রক্ষা করা এই সফলতা অর্জনের পেছনে অবদান রেখেছে। মো. ইকবাল গ্রাহকদের সন্তুষ্টি ও খুশিই জেসিএক্স গ্রুপের কাছে কাছে প্রথম। তিনি মনে করেন, কত টাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি করা হল তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোক্তাদের কতটুকু খুশি করা সম্ভব হলো।
সুবাস্তু প্রোপার্টিজ লিমিটেড
সুবাস্তু প্রোপার্টিজ দেশের প্রথম সারির আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি। স্থাপত্য শিল্পে নতুনত্ব, নির্মাণে নতুন ধারা, বাস্তব পরিকল্পনা, দ্রুত বাস্তবায়ন ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার মাধ্যমে সুভাস্তু ক্রেতা ও ভোক্তার মাঝে বিশেষ অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে।
‘সুবাস্তু’ গত ২৪ বছরে ৫২টি আবাসিক এবং ৯টি বাণিজ্যিক প্রকল্প সম্পন্ন করেছে এবং ১২টি চলমান প্রকল্প রয়েছে। নজর ভ্যালি, ঢাকার সবচেয়ে অ্যাপার্টমেন্ট কাম শপিং কমপ্লেক্স সুবাস্তু প্রোপার্টিজের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হক খান মনে করেন সুবাস্তু প্রপার্টিজ লিমিটেড মেধা দক্ষতা সততা ও নিষ্ঠায় স্থাপত্য শৈলীতে ক্রেতা, ভোক্তাদের সন্তুষ্টি বজায় রেখে যেভাবে দেশের আবাসন খাতে অবদান রেখেছে, সামনের দিনগুলোতেও তা অব্যাহত থাকবে।
অ্যাডভান্সড হোম প্রাইভেট লিমিটেড
তৌহিদা সুলতানা রুনু দেশের নারী উদ্যোক্তাদের অন্যতম একজন। নিজ প্রচেষ্টায় তৈরী করেছেন দেশের প্রথম সারির আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। তৌহিদা সুলতানা মনে করেন দেশের বাড়তে থাকা জনসংখ্যার আবাসনে দেশের আবাসন কোম্পানীগুলোর বিশেষ ভুমিকা পালন করার সুযোগ আছে। সরকারের সহোযোগিতা থাকলে বর্তমানে চলতে থাকা সমস্যাগুলো দ্রতই সমাধান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে রিহ্যাব বিশেষ ভুমিকা পালনের আন্তরীক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশে কোভিড পরিস্থিতিতে যখন অর্থনীতি স্থবির পরিস্থিতিতে চলছিলো, সে সময়ে অন্যান্য খাতের চেয়েও অর্থনৈতিক ভাবে চাঙ্গা ছিলো আবাসন সেক্টর। দেশের মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে আবাসন খাতকে বেছে নিয়েছে। অন্যদিকে ব্যবসা বানিজ্যে দিন দিন ঝুঁকি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থও তারা আবাসনখাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। কোভিড পরবর্তী সময়ে আরো বেশি বেগবান হবার পথে থাকা দেশের আবাসন শিল্প বর্তমানে কিছুটা ঝুঁকির মুখোমুখি। সা¤্রতিক ইউক্রেন যুদ্ধাবস্থার ফলে রড, সিমেন্ট, ইট, বালু জ্বালানী সহ আনুসাঙ্গিক নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চমূল্য এ খাতে সরাসরি প্রভাব ফেলছে। অনেকের মতে দেশের আবাসন খাত স্টেগফ্লেশনের মতো পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ডলারের উচ্চমূল্য ও টাকার অবমূল্যায়ণের প্রভাব এ খাতে পরলেও আবাসন শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন দেশের অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। তারা বলছেন গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ফ্ল্যাটের ব্যবসা যথেষ্ট চাঙ্গা। চাহিদা বেশি থাকায় প্রস্তুতকৃত ফ্ল্যাটের সংখ্যাও বেশ কম। অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ, নিবন্ধন ব্যায় হ্রাস, সরকারী কর্মকর্তাদের ৫ শতাংশ সুদে গৃহঋণ প্রদান এই সেক্টরকে উজ্জীবিত করতে অবদান রাখছে। যা সাম্প্রতিক অস্থিরতাকে কাটিয়ে উঠতেও সহায়তা করবে। পরিস্থিতিকে বিবেচনায় এনে সরকার এই খাতে আরো নীতি সহায়তা দিলে আবাসন খাতের প্রবৃদ্ধি লক্ষমাত্রায় পৌঁছাতে পারবে। তবে দেশের সাধারণ মানুষের আবাসনের মত মৌলিক সুবিধা সহজলভ্য করতেও সরকারের সুদৃষ্টি প্রয়োজন। বর্তমানে ফ্ল্যাট ও আধুনিক আবাসন ব্যবস্থা দেশের মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালে অনেকটাই বাইরে। দেশের টেকসই উন্নয়ন, সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষে প্রান্তিক পর্যায়ে নগরায়ন ও অর্থায়নের সুব্যবস্থা করা গেলে আবাসন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট খাত দেশের অথনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখবে।