শাকিব খানের সঙ্গে ‘রাজকুমার’ ছবি করার সুবাদে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন মার্কিন অভিনেত্রী কোর্টনি কফি। সম্প্রতি তিনি এই ছবির শুটিংয়ে ঢাকায় এসেছিলেন। কয়েকদিন শুটিংয়ে অংশ নিয়ে আবার ফিরে গেছেন মার্কিন মুলুকে।
ঢাকায় কয়েকদিন থেকে এদেশে তার পরিচিতির বিষয়টি ভালোভাবে টের পেয়েছেন। পাশাপাশি এও বুঝেছেন, এদেশে শাকিব খান কতটা জনপ্রিয়!
বছর দেড়েক আগে হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘রাজকুমার’-এ চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে বাংলাদেশের মানুষ ও এদেশের সিনেমা সম্পর্কে জানাশোনা বাড়ে কোর্টনির। সম্প্রতি শাকিবের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্লাটফর্ম থেকে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় এমনটাই জানিয়েছেন মার্কিন এই অভিনেত্রী।
কোর্টনি কফি তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মতো আমরা আমেরিকানরা ফেসবুকে অ্যাকটিভ নই, কিন্তু ইনস্টাগ্রামে বেশি অ্যাকটিভ। প্রায় একবছর আগে আমি ফেসবুকে পেইজ চালু করি। সেখানে বাংলাদেশ থেকে সব শাকিব খানের ভক্তরা আমাকে ফলো করে। কিছু পোস্ট করলে তারা চমৎকার সব মন্তব্য করেন। কিছুদিন আগে আমি বাংলা শিখছি এমন একটি ছবি পোস্ট করেছিলাম। সেখানে অনেকেই মন্তব্যে বলেছিলেন, আমরা আমাদের মাতৃভাষার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করেছিল। আমার বাংলা শেখা দেখে তারা গর্ব করেছিল। সেই মন্তব্য গুলো দেখে, আমি অশ্রুসিক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তখন বুঝেছিলাম এই ভক্তরা কত সাপোর্টিং এবং বাংলাদেশের মানুষ কতটা অথিতিকে টেককেয়ার করতে জানেন।
‘রাজকুমার’ ছবিতে কোর্টনি আমেরিকান হিসেবে অভিনয় করেছেন। গল্পের প্রয়োজন তিনি ভাঙা ভাঙা বাংলা বলবেন। এ কারণে বাংলা ভাষার অনুশীলন করেছেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা তুলে কোর্টনি বলেন, যদি কেউ হাতে-কলমে শিখিয়ে না দেয়, তবে অন্য ভাষা নিজে নিজে শেখা অনেক কঠিন। কিন্তু আমি নিজে নিজে দুইমাস ধরে বাংলা শেখার চেষ্টা করছি। আমি হয়তো ঠিকভাবে বলতে পারিনা, কিন্তু বাংলায় কিছু কিছু বুঝতে পারি।
প্রথমবার বাংলাদেশে আসা প্রসঙ্গে কোর্টনি বলেন, যখন বাংলাদেশে আসার জন্য বিমানে উঠি তখনই মনে হচ্ছিল যে অন্যরকম এক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। কিন্তু সবকিছু দারুণ অভিজ্ঞতা। আমি যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম তার চেয়েও অনেক বেশি দারুণ। অন্যান্য দেশে আইফেল টাওয়ারের মতো বিখ্যাত অনেক কিছু রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মন অনেক বড়। আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষ হৃদয় দিয়ে তাদের দেশকে সেরা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বৃহৎ জনসংখ্যা এবং তাদের আপ্যায়নের কারণে বাংলাদেশ ট্যুরিস্টদের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারে।
শাকিব খানের সঙ্গে দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, শাকিব খান বাংলাদেশের ‘টম ক্রুজ’, এটা নিশ্চিত। সে কাজের প্রতি ডেডিকেটেড এবং প্রফেশনাল। সহশিল্পী হিসেবে একদমই পারফেক্ট। শুটিংয়ে সে খুবই মজার মানুষ। সবকিছু মিলিয়ে তার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা একদম পারফেক্ট।
ঢাকার খাবার ও কেনাকাটার কথা উল্লেখ করে কোর্টনি বলেন, এখানকার ফুচকা, মিষ্টি, রসগোল্লা, পেয়ারা, মাচ ভালো লেগেছে। ঢাকার নিউমার্কেট থেকে শপিং করেছি। সেখান থেকে আট জোড়া জুতা ও কয়েকটি চাদর কিনেছি। এবার ক্রিসমাসে এগুলো বাংলাদেশি উপহার হিসেবে ব্যবহার করবো।
অলটাইম ব্লকবাস্টার ‘প্রিয়তমা’ ছবির প্রযোজক আরশাদ আদনান প্রযোজনা করছেন ‘রাজকুমার’। ছবিটি আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে।