জালিয়াতির মাধ্যমে এক ফুটবলারকে কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে খেলিয়েছিল ইকুয়েডর, এমন অভিযোগ লাতিন অঞ্চলের আরেক দেশ চিলির। দেশটির ফুটবল ফেডারেশন (এফএফসি) ফিফার কাছে অভিযোগও করেছিল। যাতে বলেছিল, ইকুয়েডরের হয়ে বাছাইপর্বে আট ম্যাচ খেলা বায়রন ক্যাস্তিলো আসলে কলম্বিয়ান এবং তার বয়স চুরি করা হয়েছে।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি অবশ্য চিলির অভিযোগ গত জুনেই খারিজ করে দিয়েছে। তবে চিলির পক্ষে এবার সামনে আসছে নতুন তথ্য। জন্ম নিবন্ধন সনদ জাল করার স্বীকারোক্তি নিয়ে রাইটব্যাক বায়রন ক্যাস্তিলোর ৪ বছর আগের একটি অডিও টেপ ফাঁস হয়েছে। তাতে পরিস্থিতির নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে।
নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, ক্যাস্তিলো আসলেই জন্ম নিবন্ধন সনদ জাল করেছিলেন এবং ইকুয়েডরে একজন অবৈধ অভিবাসী ছিলেন। যার ফলে কাতার বিশ্বকাপে ইকুয়েডর এখন বহিষ্কারের শঙ্কায়। তারা লাতিন অঞ্চল টেবিলের চারে থেকে কাতারের টিকিট কেটে রেখেছে।
বিশ্বকাপ থেকে ইকুয়েডর বাদ পড়লে তাদের পরিবর্তে খেলার আশা করছে চিলি। লাতিন পয়েন্ট টেবিলে চিলি সপ্তম স্থানে থেকে বাছাই শেষ করলেও ফিফার নিয়ম অনুযায়ী তাদের চার নম্বরে উঠে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইকুয়েডরের সঙ্গে বাছাইপর্বের একটি ম্যাচে ২-০ গোলে হেরেছিল চিলি। অন্য ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়। ইকুয়েডরকে বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করা হলে ওই দুই ম্যাচেই চিলিকে ৩-০ গোলে জয়ী ঘোষণা করা হবে। এমন হলে পঞ্চম স্থানে থাকা পেরুর সমান ২৪ পয়েন্ট হবে দলটির। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকার ভিত্তিতে তখন বিশ্বকাপে যেতে পারবে চিলি, সামনে আসছে এমন হিসাব।
স্বাগতিক কাতার, সেনেগাল এবং নেদারল্যান্ডসের সাথে গ্রুপ এ-তে আছে ইকুয়েডর। ২০ নভেম্বর বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কাতারের সাথে ইকুয়েডরের খেলা আছে। বিশ্বকাপ শুরুর মাস দুয়েক আগে তাদের বহিষ্কার করা হলে ফিফার জন্য বিব্রতকর বিষয়ই হয়ে দাঁড়াবে। কারণ চিলির অভিযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি খারিজ করেছিল অনেক আগেই।
এফএফসির অভিযোগে আগেই বলা হয়েছিল, ইকুয়েডরের বার্সেলোনা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলা বায়রন ক্যাস্তিলো একটি ভুয়া জন্ম সনদ এবং জাতীয়তা ব্যবহার করেছেন। অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে যে, ২৩ বর্ষী ক্যাস্তিলো কলম্বিয়ার তুমাকো শহরে ১৯৯৫ সালের ২৫ জুলাই জন্মেছিলেন। ১৯৯৮ সালের ১০ নভেম্বর ইকুয়েডরের জেনারেল ভিলামিল প্লেয়াস শহরে জন্মগ্রহণ করেননি।
চিলি অভিযোগে বলেছিল, ইকুয়েডর ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও জানতো ক্যাস্তিলো কলম্বিয়ান ছিল। কিন্তু ফুটবল বিশ্ব চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। খেলোয়াড়দের নিবন্ধনে গুরুতর এবং ইচ্ছাকৃত অনিয়মের চর্চা মেনে নেয়া যায় না। মাঠে ও মাঠের বাইরে অবশ্যই ফেয়ার প্লে হতে হবে।
ক্যাস্তিলোকে ২০২১ সালে ইকুয়েডর দলে নেয়ার আগে বছর ধরে দেশটির কর্তৃপক্ষ এবং ফেডারেশন তার জাতীয়তার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছিল।
এখন যদি চিলির অভিযোগ টিকে যায়, ইকুয়েডর বাদ পড়েই, তাতে কেবল চিলিই বিশ্বকাপ খেলবে এমনও বলা যাচ্ছে না। কারণ ক্যাস্তিলোকে নিয়ে আট ম্যাচ খেলেছে ইকুয়েডর। তাতে চিলির দু-ম্যাচ ছাড়া বাকি ছয় ম্যাচের প্রতিপক্ষেরও পেনাল্টি পয়েন্ট পাওয়ার কথা। তেমন হলে লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাই টেবিলে বিস্তর ওলট-পালটের সম্ভাবনা রয়েছে।