
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আমি আশা করি, আমাদের এই লক্ষ্য অর্জনে এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ‘চ্যানেল আই’ আরও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
দেশের প্রথম ডিজিটাল স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, চ্যানেল আইয়ের ২৫ বছরে পর্দাপণ উপলক্ষ্যে এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি এই কথা জানান।
তিনি বলেন, স্যাটেলাইট টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’ ২৫ বছরে পদার্পণ করছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি চ্যানেলটির পরিচালনা পর্ষদ, সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কলাকুশলীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের অবাধ বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখেন। গণমাধ্যম যাতে শক্তিশালী হয় এবং পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করতে পারে জাতির পিতা তা নিশ্চিত করেন। তিনি সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমের অসামান্য অবদানের কথা তুলে ধরে এর জাতীয় স্বীকৃতির ব্যবস্থা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের গণমাধ্যমের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯৬ সালে আমরা প্রথমবারের মতো দেশে বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চালুর অনুমোদন দেই, যার ফলে সম্প্রচার জগতে এক নবতর অধ্যায়ের সূচনা হয়।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ প্রণয়ন করি এবং ‘তথ্য কমিশন’ প্রতিষ্ঠা করি। গণমাধ্যমের সবচেয়ে বড় বিকাশ ঘটেছে আমাদের সরকারের গত সাড়ে ১৪ বছরে। এ সময়ে আমরা বেসরকারিখাতে ৪৫টি টেলিভিশন, ২৮টি এফএম রেডিও, ৩২টি কমিউনিটি রেডিও এবং ১৪টি আইপিটিভিসহ অসংখ্য সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টালের অনুমোদন দিয়েছি। আমাদের সরকার দেশের গণমাধ্যমকে অবারিত করতে জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা-২০১৭, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা-২০১৪ সহ বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণে দক্ষ, যোগ্য কলাকুশলী এবং নির্মাতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রি ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন-২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট’ প্রতিষ্ঠা করেছি। ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকুরির শর্তাবলী) আইন-২০২২’ চূড়ান্ত অনুমোদন পর্যায়ে রয়েছে। সংবাদপত্রে কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের কল্যাণে ইতিমধ্যে নবম ওয়েজবোর্ড কার্যকর করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদেরকেও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার ফলে দেশে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটেছে। বর্তমানে দেশে ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে যা অনলাইন মিডিয়া, আইপিটিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপক প্রসারে ও তথ্য প্রবাহে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ দেশের সম্প্রচার জগতে বিরাট সুযোগের সৃষ্টি করেছে। দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল এখন অনেক সাশ্রয়ী ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। বাংলাদেশের সকল অগ্রযাত্রা ও অর্জনে দেশের গণমাধ্যম অবিচ্ছেদ্য অংশীদার ও সহযাত্রী। আমার প্রত্যাশা, চ্যানেল আই সামাজিক দায়বদ্ধতা বজায় রেখে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, তথ্য ও অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখবে। আবহমান বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য তুলে ধরে দেশের মানুষের উন্নত মনন গঠন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদসহ নানা অপতৎপরতা দমনে জনসচেতনতার সৃষ্টিতে আরও বেশি অবদান রাখবে। আমি ‘চ্যানেল আই’ এর ২৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য এবং চ্যানেলটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
বিজ্ঞাপন