চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘এলাকার সবাই মেসি নামে ডাকতো, মেসি বলেই চিনতো’

২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। লাল-সবুজ জার্সিতে টুর্নামেন্টের সেরা গোলদাতার ট্রফি নিজের করে নেন শাহেদা আক্তার রিপা। গতবছর সিলেটে ভয়াবহ বন্যায় দুর্যোগ কবলিতদের সহায়তায় সেই ট্রফি নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। সর্বস্ব হারানো মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিলামে তুলেছিলেন সাফে সেরা গোলদাতা হওয়ার স্মারকটি, হয়েছিলেন প্রশংসিত।

প্রায় মাস পাঁচেক আগে মেয়েদের সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। ২৩ জনের দলে থাকার সব যোগ্যতাই রিপার ছিল। এইচএসসি পরীক্ষার কারণে হতে পারেননি চ্যাম্পিয়ন দলের অংশ। এ নিয়ে বললেন, ‘অবশ্যই সিনিয়র টিমে ঢোকার পর ভালো কিছু করার লক্ষ্য আছে।’

ফিট থাকতে সবার আগে চিনি বাদ দিন, প্রাকৃতিক ও নিরাপদ জিরোক্যাল-এর মিষ্টি স্বাদ নিন।

ভবিষ্যতের জন্য নিচ্ছেন প্রস্তুতি। সদ্যগত সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে কক্সবাজারের উখিয়ার এ ফুটবলারের পা থেকে এসেছে দুই গোল। ডানপ্রান্ত দিয়ে রিপার একের পর এক আক্রমণ প্রতিপক্ষ রক্ষণে ছড়িয়েছে ত্রাস। বল তার পায়ে গেলেই কমলাপুরের গ্যালারিতে দর্শকদের কণ্ঠে উঠত রব। চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে আসর চলাকালীন তার ক্ষিপ্রগতির প্রশংসা করেছিলেন কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন।

নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে প্রতিপক্ষ রক্ষণে বারবার কাঁপন ধরানো রিপার ডানপায়ের দূরপাল্লার ম্যাজিক শটে অতিথি গোলরক্ষক কবিতা পুরোপুরি পরাস্ত হন। লিড পায় লাল-সবুজের দল। নিজের জাত আরেকবার চেনান বিকেএসপি থেকে উঠে আসা ফুটবলার।

এ পর্যন্ত আসার সেই গল্পটা রিপা এদিন একনাগাড়ে বলে গেলেন আবারও। জানালেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও প্রত্যাশার কথাও।

‘ছোটবেলা থেকে বাড়ির সামনের মাঠে ছেলেদের সঙ্গে খেলতাম। বঙ্গমাতা টুর্নামেন্টে খেলেছি। অনেক ছোট ছিলাম। মেসির মতো খেলতাম বলে সবাই আসলে আমাকে তখন মেসি নাম দিয়েছিল। তখন থেকেই এলাকার সবাই মেসি নামে ডাকতো, মেসি বলেই চিনতো।’

‘২০১৬ সালে আমার এক ফুফাতো ভাই বিকেএসপিতে ট্রায়াল দিতে বললেন। বললাম বিকেএসপি কোথায় সেটাই জানি না। ট্রায়াল দিতে গেলাম। টিকে যাওয়ার পর সাতদিনের ক্যাম্পে গেলাম। ২০১৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হলাম। ভারতে সুব্রত কাপে বিকেএসপির হয়ে খেলতে গিয়েছিলাম, চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। টাঙ্গাইলে জেএফএ কাপে খেলার পর জাতীয় দলে আসার সুযোগ পাই।’

‘পড়াশোনা করছি। ভার্সিটিতে পড়ার ইচ্ছা আছে। ফুটবলটা চালিয়ে যেতে চাই। তবে বাইরের দেশে লিগ খেলার ইচ্ছা আছে। সাবিনা আপুর বাইরে লিগ খেলাটা অনেক অনুপ্রাণিত করে।’

সাফের বয়সভিত্তিক আসরে অনূর্ধ্ব-১৫তে খেলেছেন দুবার। এরপর অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৮, অনূর্ধ্ব-১৯ এবং অনূর্ধ্ব-২০ একবার খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টের পর অনূর্ধ্ব-২০তে এসে পেলেন শিরোপার স্বাদ। এই দুই আসরের মধ্যে রিপা অবশ্য অনূর্ধ্ব-১৯কেই বেশি মনে রাখছেন। কারণ সেবার তিনি হয়েছিলেন সেরা গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়।

পেশাদার ফুটবল খেলে পরিবারে আর্থিকভাবে অবদান রাখাকে বেশ বড় করে দেখেন রিপা। সংসার চালাতে বাবা-মাকে অর্থ দিতে পারা তার জন্য পরম আনন্দের। মেয়ের ভালো পারফরম্যান্সে তারা পাচ্ছেন সম্মান, করেন গর্ববোধ। তবে সম্মানটাই তার কাছে সবকিছুর উপরে থাকছে। তাই স্পষ্ট করে বললেন, ‘টাকা-পয়সা দিয়ে তো আর সবকিছু হয় না। বড় দালান যারা বানায় তাদের কেউ চেনে না, আমাদের চেনে। সবচেয়ে বড় কথা হল সম্মান।’