মানুষের দৃঢ়তা, সাহস ও এগিয়ে যাওয়ার গল্প নিয়ে শুরু হয়েছে ব্র্যাক হোপ ফেস্টিভ্যাল। রাজধানীর বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই উৎসব।
২০২২ সালের ২১ মার্চ ৫০ বছর পূর্ণ করেছে ব্র্যাক। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয় ব্র্যাক। সেই আয়োজনের শেষ পর্ব হিসেবে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এই উৎসবের আয়োজন করছে সংস্থাটি।
দর্শনার্থীরা http://brachopefestival.net এই ওয়েবসাইটের লিংকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কোনো প্রবেশমূল্য ছাড়াই উৎসবে অংশ নিতে পারবেন। বারো বছরের কমবয়সি শিশুদের রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন প্রয়োজন হবে না।
ব্র্যাক এন্টারপ্রাইজেস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামারা আবেদ বলেন, পঞ্চাশ বছরের পথচলায়, মানুষকে সাথে নিয়ে, তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে, সংগঠিত করে যে ভিন্ন ধারার উন্নয়ন কার্যক্রম ব্র্যাক পরিচালনা করেছে, তার স্বকীয়তা ও কার্যকারিতা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত। বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে পাঁচ দশকের কাজ থেকে বিপুল অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা অর্জন করেছি আমরা। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে যা প্রতিনিয়ত শিখছি তা সবার সামনে উপস্থাপন করতে চাই। ভিন্ন ধারার উন্নয়ন চিন্তা ও সামাজিক সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধানকে আমরা উৎসাহ দিতে চাই।
ব্রাক বলছে, এই ফেস্টিভ্যাল আয়োজনের অন্যতম লক্ষ্য শিক্ষা, আর্থিক ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানসিক স্বাস্থ্য– এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশেষত তরুণ সমাজকে সামগ্রিকভাবে দেশের ও নিজ নিজ এলাকার সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে উৎসাহ জোগানো।
‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’, ‘সম্ভাবনার শক্তি’ এবং ‘যে পৃথিবী আমরা গড়তে চাই’ এই তিনটি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সাজানো হয়েছে তিন দিনের অনুষ্ঠানমালা। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে, প্রতিদিন সকাল এগারোটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত এই ফেস্টিভ্যাল চলবে।
প্রত্যেক দর্শনার্থীকে রেজিস্ট্রেশনের সময় একটি সামাজিক সমস্যা বেছে নিতে অনুরোধ করা হচ্ছে, যার সমাধানে তিনি যুক্ত হতে চান। এই সমস্যা সমাধানে নিজের উদ্ভাবনী ধারণাও তিনি জমা দিতে পারবেন রেজিস্ট্রেশন পোর্টালের মাধ্যমে।
উৎসবে দর্শকদের জন্য থাকছে আবহমান বাংলার চিরায়ত লোকজ সংস্কৃতির সম্মিলন, পুঁথিপাঠ, গল্পপাঠের আসর, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, শিশুদের খেলার জগত, সারাদিনব্যাপী নানা প্রদর্শনী। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। থাকছে গহনা বানানো, কারিগর ও কার্টুনিস্টদের সঙ্গে আনন্দদায়ক কর্মশালায় যোগ দেবার সুযোগ।
তৃণমূল থেকে সামাজিক উদ্যোক্তাদের তুলে আনতে ইতিবাচক সামাজিক উদ্যোগের স্বীকৃতি হিসাবে “আমরা নতুন নেটওয়ার্ক ইয়াং চেঞ্জমেকার্স অ্যাওয়ার্ড”-এর মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হবে তরুণদের। এছাড়াও থাকছে কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য বিশেষ সম্মাননা ‘টাগা আউটস্ট্যান্ডিং ইয়াং প্রফেশনালস অ্যাওয়ার্ড’।
তিন দিনের অনুষ্ঠানমালার বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নেবেন ফজলুর রহমান বাবু, নগরবাউল জেমস, অর্ণব, ওয়ারফেইজ, লালন, নেমেসিস এবং আর্টসেলের মতো জনপ্রিয় ব্যান্ড।