প্লে-অফ নিশ্চিতে ফরচুন বরিশালের অপেক্ষটা ছিল নিজেদের শেষ ম্যাচ অবধি। দৌড়ে এগিয়ে থাকলেও সমীকরণও সামনে ছিল কীর্তনখোলাপাড়ের দলটির। তবে তামিমের ফিফটিতে সব সমীকরণ চাপিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে তিন পাণ্ডবের দল। আর তাতে অবশ্য ভাগ্য পুড়েছে খুলনা টাইগার্সের।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বরিশাল। টসে হেরে আগে ব্যাটে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৪০ রান করে লিটন দাসের দল। জবাবে দুই বল বাকী থাকতে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে বরিশাল।
ম্যাচে নামার আগে ফরচুন বরিশালের দরকার ছিল দুই পয়েন্ট। হারলে মুখোমুখি হতে হত সমীকরণের। প্লে-অফের দৌড়ে খুলনার টাইগার্সও টিকে ছিল। তবে রানরেটেও এগিয়ে ছিল তামিম-মুশফিকরা।
কুমিল্লার বিপক্ষে জয়ে সমীকরণ ছাড়াই প্লে-অফ খেলবে বরিশাল। ১২ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট এখন ১৪। রানরেটে এগিয়ে থাকায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ঠেলে তিনে এসেছে তারা। অন্যদিকে আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়েছিল কুমিল্লার। ১২ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৬। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে লিটন দাসের দল। ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে আছে রংপুর। আর বরিশালের সমান পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে পিছিয়ে চারে চট্টগ্রাম। এলিমেনেটর ম্যাচে সোমবার চট্টগ্রামের মুখোমুখি হবে তামিম-সৌম্যরা।
বরিশালের জয়ে প্লে-অফের আশা শেষ খুলনা টাইগার্সের। ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট তাদের। লিগপর্বের শেষ ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে খেলবে তারা। নিয়মরক্ষার ম্যাচে রাতেই নামবে দুদল।
রান তাড়ায় নেমে ঝলক দেখিয়েছেন তামিম ইকবাল। তিনটি ছক্কা ও ছয়টি চারে ৪৮ বলে ৬৬ রান করেন বরিশাল অধিনায়ক। কাইল মায়ার্স করেছেন ২৫ বলে ২৫ রান। মুশফিকুর রহিম করেছেন ২৪ বলে ১৭ রান। শেষের দিকে সৌম্য সরকার ও মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন। ৩ বলে ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন সৌম্য। ১১ বলে ১২ রান করেন রিয়াদ।
কুমিল্লার হয়ে মুশফিক হাসান নেন দুটি উইকেট। মোহাম্মদ এনামুল ও আন্দ্রে রাসেল নেন একটি করে উইকেট।
এর আগে প্রচুর সমর্থন থাকলেও লালরঙা গ্যালারি অবশ্য খুব একটা মাতাতে পারেননি কুমিল্লা ব্যাটাররা। উইকেটে দেখা যায় হালকা ঘাস। ভালো স্কোর না হওয়ার পেছনে ২২ গজের পাশাপাশি কুমিল্লার ব্যাটারদেরও দায় আছে। কেননা উইকেট বিলিয়ে এসেছেন লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, আন্দ্রে রাসেলরা। খেলতে পারেননি নিজেদের সেরাটা।
মিরপুরে শুরু থেকেই চলছে রানখরা। আগের দুই পর্বের ম্যাচগুলোতেও দেখা গেছে অসংখ্য লো-স্কোর। দেড়শ রান তুলতে পারলেও তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন খেলোয়াড়রা। প্লে-অফের লড়াই শুরুর আগে লিগপর্বের শেষ দিনের দুপুরের ম্যাচে প্রাথমিক সে লক্ষ্যও পূরণ করতে পারল না কুমিল্লা। শেষদিকে নামা জাকের আলির ১৬ বলে ৩৮ রানের ক্যামিও দলকে নিয়ে যান দেড়শর কাছে।
গত আসরের চ্যাম্পিয়নদের অল্পরানে আটকে রাখার কৃতিত্ব তাইজুল-ম্যাকয়-সাইফউদ্দিনদের। বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে শুরু থেকেই রানের লাগাম টেনে রাখে তারা। পাওয়া প্লে’র ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রানের বেশি তুলতে পারেনি কুমিল্লা। দলীয় একশ ছুঁতে লেগে যায় ১৭.২ ওভার। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলেই প্রতিপক্ষকে নাগালের মধ্যে আটকে রাখতে পেরেছে বরিশাল। কুমিল্লার ৮ উইকেট তুলে নেয় তারা।
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন দুই স্পেলেই করেছেন দুর্দান্ত বোলিং। প্রথম ২ ওভারে দেন মাত্র ৩ রান। স্লগে এসে শেষে দুই ওভারে তুলে নেন দুটি উইকেট। ৪ ওভারে মোট খরচ করেন ১৮ রান।
ক্যারিবিয়ান পিঞ্চ হিটার আন্দে রাসেলকে দ্রুত সাজঘরে পাঠিয়ে ম্যাচ ঘোরাতে দেননি তাইজুল ইসলাম। এ বাঁহাতি স্পিনার ৩ ওভারে ২০ রানে নেন তিনটি উইকেট।