দাদীর সাথে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ ৬ বছরের শিশুর মরদেহ গোপালগঞ্জের মধুমতি নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের একটি গর্তের ভিতর থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। শিশু নিখোঁজের প্রায় ৫ ঘণ্টা পর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার ৯ মার্চ সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের তালা এলাকা থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের চর তালা গ্রামের মোঃ মুসা শেখের শিশু কন্যা মারিয়া চর তালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মারিয়ার পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, শনিবার দুপুরের পর দুই নাতনি মারিয়া ও ফারিয়াকে সঙ্গেঁ নিয়ে বাড়ির পাশে মধুমতি নদীতে গোসল করতে যান দাদি তাসলিমা বেগম। দাদি, নদীর পাড়ে বসে কাপড় ধোয়ার কোন এক ফাঁকে দুই নাতনি মারিয়া ও ফারিয়া নদীতে গোসল করতে নেমে পানির নিচে তলিয়ে যায়। হঠাৎ করে দুই নাতনিকে নদীতে তলিয়ে যেতে দেখে দাদী তাসলিমা বেগম নিজের জীবন বাজি রেখে ছোট নাতনি ফারিয়াকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও মারিয়াকে উদ্ধার করতে পারেননি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রায় ৫ ঘণ্টা পর মধুমতি নদীর একটি গর্তের ভিতর থেকে মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে।
গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের ওয়ার হাউজ পরিদর্শক মোঃ রাজীব হোসেন রাত ৯টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে আমাদের এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, খবর পেয়ে আমাদের (ফায়ার সার্ভিসের) একটি ডুবুরি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় প্রায় ৫ঘন্টা পর মারিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারে কাছে হস্তান্তর করেছি।
শুকতাইল ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার সোলেমান সিকদার অভিযোগ করে বলেছেন, মারিয়া মধুমতি নদীর যে স্থানটিতে ডুবে মারা গেছে সে স্থানটি মূলত বালুর চর। অত্র এলাকার শত শত শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ নারী- পুরুষ প্রতিদিন ওইখানে গোসল করেন। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে প্রতিদিন রাতে বালু ব্যবসায়ীরা ওই স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর ভিতর নানা জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পানির নিচের সেই অচেনা-অজানা গর্তের ভিতরে পড়েই শিশু মারিয়ার মৃত্যু হয়েছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিষয় স্থানীয় প্রশাসনকে বলেও কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে স্থানীয়রা বলেন, মারিয়ার অকাল মৃত্যুর জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালী মহল দায়ী।