চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

জন্মদিনের নামে বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গোপন রাজনৈতিক বৈঠক’!

জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের কথা বলে রাজধানীর বনানী ক্লাবে বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মী একত্রিত হয়েছিলেন। গত রোববার মধ্যরাতে ডিবির অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে ৫৩ জনের দুই দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার সবাই মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়নের নেতাকর্মী। 

রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা হয়ে থাকতে পারে জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বলছে: তারা কোনো জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালন করছিলেন না। বরং তারা মিলিত হয়েছিলেন ‘গোপন রাজনৈতিক বৈঠক’ করার জন্য।

ডিবি পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ডিএমপির বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আসামিদের দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ডিবি আসামিদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করবে গোপন মিটিংয়ে তারা কী পরিকল্পনা করছিলেন। এছাড়া রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা কোনো পরিকল্পনা করছিলেন কি না-তাও জানার চেষ্টা করবে ডিবি।

জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া ৫৪ জন মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান ও শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী।

তারা হলেন- মো. মমিন আলী, মো. তৈয়ব আলী, মো. কামাল উদ্দিন চৌধুরী ওরফে সেলিম, রাজু আহাম্মাদ, আব্দুল খালেক সিকদার, মো. আলতাফ হোসেন ওরফে মন্টু, মো. মঞ্জুর হোসেন, মো. আব্দুল কুদ্দুস ওরফে ধীরন, মো. দেলোয়ার মোল্লা, মো. মহিউদ্দিন আহম্মেদ, মো. ফরহাদ হোসেন, মো. মাইনুল ভুইয়া, মো. মনির হোসাইন, মো. নাফিজ খান, মো.আব্দুল কাদের খান, মো. দেলোয়ার হোসেন, মাসুদ সিদ্দিকী, কাজী কামরুজ্জামান, মো. শাহ আলম, ফাইজুল ইসলাম লিটন, আবুল কালাম আজাদ, খলিলুর রহমান, পিয়ার আলী মোল্লা, মো. হামিদুল হক, মো. জহির উদ্দিন বাবুল মাঝি, আব্দুল হাই তালুকদার, মো. মহি উদ্দিন, আল আমিন চৌধুরী প্রিন্স, মো. সেলিম ভূইয়া, মোজাহিদুল ইসলাম, মো. জসিম উদ্দিন খাঁন, শেখ আলাউদ্দিন, মো. মজিবুর রহমান খাঁন, খায়রুল আলম, মো. কামরুল হাসান, মো.ওমর ফারুক, আব্দুল্লাহ চৌধুরী অদিত্য, মো. সাইফুল ইসলাম, এইচএম রিয়াজুল ইসলাম, মো. গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, আসাদুজ্জামান ভূইয়া, মো. হিমেল মল্লিক, মো. রাকিব মোল্লা, মো. আওলাদ হোসেন মোল্লা, মো. মাহমুদুল হাসান টিটু, আব্দুল মান্নান, মো. দেলোয়ার হোসেনে ভূইয়া, মোজ্জামেল হাওলাদার, মো. আব্দুল মতিন আজাহারী, মো.আলী আনসার মোল্লা, মো. জায়েদুল ইসলাম, মো. ফজলুর রহমান ভুইয়া, আজিজুল হক খান ও ওমর ফারুক মৃধা।

ডিবি বলছে, বৈঠকে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাষ্ট্রবিরোধী পরিকল্পনা করছেন বলে গোপন সংবাদ পায় তারা। সেই সংবাদের ভিত্তিতে রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে বনানী ক্লাব থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবির গুলশান বিভাগ।

পুলিশের করা মামলায় বলা হয়েছে, সরকারের পতন ঘটানোর লক্ষ্যে সরকারি স্থাপনা ও যানবাহনে নাশকতা এবং ত্রাস সৃষ্টির জন্য যড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এজাহারে ১ নম্বর আসামি হিসেবে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোমিন আলী রয়েছেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী বলে জানা গেছে। ২ নম্বর আসামি তৈয়ব আলী শ্রীনগর বিএনপির সদস্য। অপর আসামিদের পরিচয় হিসেবে সক্রিয় সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে হলেও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তারা ব্যবসা ও বসবাস করেন।

এ বিষয়ে ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম জানান, জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে তারা ক্লাবে যান। কিন্তু আসলে সেখানে জন্মদিনের কোনো অনুষ্ঠান ছিল না। মিথ্যা কথা বলে তারা রাজনৈতিক বৈঠক করছিলেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। আমরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করব যে তারা কী নিয়ে আলোচনা করছিলেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে কী ছিল?

রোববার ১৯ মার্চ দিবাগত রাত ১টার দিকে রাজধানীর বনানী ক্লাব থেকে মুন্সীগঞ্জ বিএনপির ৫৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি গুলশান বিভাগ।

গ্রেপ্তারের পর সোমবার ২০ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে বনানী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়। সোমবার ৫৪ জনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ। তবে আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে এক আইনজীবীকে জামিন দেন। অপর ৫৩ জনকে দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View