চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

আকলিমা-স্বপ্নার জোড়া গোলে জিতল বাংলাদেশ

খেলতেই নামলেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক সামসুন্নাহার জুনিয়র। চোট না থাকার পরও তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন কোচ গোলাম রব্বানি ছোটন। অধিনায়ককে ছাড়াই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয় তুলে মাঠ ছেড়েছে জুনিয়র টাইগ্রেস দল। আকলিমা খাতুন ও স্বপ্না রাণী করেছেন দুটি করে গোল।

শুক্রবার বিকেলে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে হওয়া ‘এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ-২০২৪’র কোয়ালিফায়ার ম্যাচে পঞ্চম মিনিটেই লাল-সবুজের দল গোলের সুযোগ পেয়েছিল। স্বপ্নার বাড়ানো বল নিয়ে ডানপ্রান্ত দিয়ে অনেকখানি দৌড়ে বক্সেও ঢুকে পড়েন শাহেদা আক্তার রিপা। তার ক্রসে গোলমুখে হেড নিতে ব্যর্থ হন মিডফিল্ডার মাহফুজা খাতুন।

মাঝমাঠ ও আক্রমণে খেলার শুরু থেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম হয় ছোটনের শিষ্যরা। নিয়মিতভাবে আদায় করতে থাকে কর্নার কিক। ১৩ মিনিটে স্বপ্নার নেয়া কর্নার কিকে বল ফিস্ট করে প্রতিহত করেন তুর্কমেনিস্তান গোলরক্ষক আমানবেরদিয়েভা আয়েশা।

মিনিট দুয়েক পর আইরিন খাতুনের মাটি কামড়ানো শট বক্সের ভেতর প্রতিহত করেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মিনগাজোভা কামিলা। ২০ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন আকলিমা খাতুন। প্রতিপক্ষের দুজনকে কাটিয়ে পোস্টের সামনে দুর্বল শট নেয়ায় সেদফাও লিড পাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের।

ম্যাচের ৩০ মিনিটে রিপার দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য নিশানাভেদ করেনি, পোস্টের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পর সোহাগি কিসকুর বক্সে বাড়ানো বলে ভলি করেন মাহফুজা। শূন্যে ভাসা বল সহজে গ্লাভসবন্দি করেন অতিথিদের আয়েশা।

একের পর এক আক্রমণ করে যেতে থাকে বাংলাদেশ। ফিনিশিংয়ের দুর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মতো। ৩৫ মিনিটে বিপক্ষ দলের একজনকে ড্রিবল করে বক্সে ঢুকে কিক নেন আকলিমা। আয়েশা ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বল ঠেকান।

তুর্কমেনিস্তান ৩৭ মিনিটে প্রথম আক্রমণ গড়েই গোল দিতে বসেছিল। ভুল পাসের সুযোগে বল পেয়ে এগিয়ে যান স্ট্রাইকার তাগানোভা শাসেনেম। ঝুঁকি নিয়ে পোস্ট থেকে অনেকটা বেরিয়ে আসেন গোলরক্ষক রুপনা চাকমা। তাকে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেননি তাগানোভা। তার কিক ডান পায়ে বিপদমুক্ত করে নিশ্চিত গোল হজম থেকে রক্ষা করেন ম্যাচে অধিনায়কত্ব পাওয়া রুপনা।

ম্যাচের ৪২ মিনিটে মিডফিল্ডার স্বপ্না নেন দুর্বল কিক। খানিক পর আফিদা খন্দকার মাঝমাঠের কাছাকাছি জায়গা থেকে লম্বা শট নিলে জায়গায় দাঁড়িয়ে বল ধরেন আয়েশা।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আসে স্বস্তির গোল। স্বপ্নার কর্নার কিকে আয়েশা বল ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। বক্সের ভেতর তৈরি হয় জটলা। সতীর্থের পাসে বল নিয়েই বাঁ-পায়ের ভলিতে নিশানাভেদ করে টাইগ্রেসদের লিড এনে দেন আকলিমা। তুর্কমেনিস্তানের ফুটবলাররা হ্যান্ডবলের অভিযোগ করলেও রেফারি গোলের সংকেত দেন।

বিরতির বাঁশি বাজার আগে যোগ করা সময়ে পাল্টা আক্রমণে বল ঠেকাতে ব্যর্থ হন তুর্কমেনিস্তানের এক ডিফেন্ডার। মাহফুজার গায়ে বল লাগলেও সামান্যের জন্য জালে জড়ায়নি। এক গোলের লিড নিয়ে স্বাগতিকরা প্রথমার্ধ শেষ করে।

বিরতির পর খেলা শুরুর ১৮ সেকেন্ডের মাথায় দূর থেকে নেয়া শটে ব্যবধান দ্বিগুণের চেষ্টা করেন আকলিমা। শট দুর্বল হওয়ায় আয়েশার বল ধরতে সমস্যা হয়নি। ৫৪ মিনিটে প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক হয়ে ওঠা আকলিমার হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

ছয় মিনিট পর আকলিমাকে পাস না দিয়ে নিজেই দূরপাল্লার শট নেন স্বপ্না। ডান পায়ের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়ানোর কারণে ৬৫ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন তুর্কমেনিস্তানের কোচ মিনগাজোভ কামিল।

ম্যাচের ৭১ মিনিটে ইতির ক্রসে বল শূন্যে থাকা অবস্থায় ডান পায়ের ভলিতে আবারও গোল করেন আকলিমা। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। মাহফুজার পরিবর্তে ৭৪ মিনিটে মিডফিল্ডার হালিমা আক্তারকে মাঠে নামান কোচ।

বাকি সময়েও একচেটিয়া প্রাধান্য বিস্তার করে বাংলাদেশ। ৮১ মিনিটে ইতির ক্রসে আসা বলে স্বপ্না হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। পরের মিনিটেই স্বপ্নার ডান পায়ের দুরন্ত শট জালে জড়ালে বড় জয়ের প্রহর গুণতে থাকে লাল-সবুজের দল। ৮৭ মিনিটে আকলিমার পরিবর্তে মাঠে নামেন আনিকা তানজুম। নাসরিনের জায়গায় খেলতে নামেন উন্নতি খাতুন।

সোহাগি কিসকুর শট ৮৯ মিনিটে পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বের না হলে ব্যবধান আরও বড় হতে পারতো। শেষদিকে আরও দুটি সুযোগ কাজে না লাগানো গেলেও ৪-০ গোলের উড়ন্ত জয়ই তোলে ছোটনের দল।