শ্রীলঙ্কা সিরিজের আগে বাংলাদেশের টেস্টর তিন পেসার ইবাদত হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম ইনজুরিতে পড়েন। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজে ইবাদত ফিরলেও নেই তাসকিন ও শরিফুল। অনেকটা বাধ্য হয়েই তাই লাল বলের ক্রিকেটে মোস্তাফিজুর রহমানকে লাল বলের ক্রিকেটে নিতে বাধ্য হয় বিসিবি।
টেস্ট খেলতে মোস্তাফিজের অনাগ্রহের ব্যাপারটি কারো অজানা নয়। বিসিবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তিপত্রে লাল বলের সংস্করণে নেই এ বাঁহাতি পেসার। তবে দলের প্রয়োজনে কাটার মাস্টারকে টেস্ট খেলানোর ব্যাপারে জোর দিয়ে গত এপ্রিলে কথা বলেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
পরে বিসিবি পরিচালক ও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বিষয়টি নিয়ে দিয়েছিলেন নিজের অভিমত, ‘আমি তো চাই মোস্তাফিজ টেস্ট খেলুক।’
শেষ পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর পর সাদা পোশাকের টেস্ট ক্রিকেটে ফিরছেন মোস্তাফিজুর রহমান। অ্যান্টিগা টেস্টে পেস আক্রমণের নেতৃত্বে তিনি থাকছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজ প্রসঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। কাটার মাস্টার লাল বলের ক্রিকেট খেলার জন্য উজ্জিবিত আছেন বলেই তিনি জানালেন।
‘‘ও এই (টেস্ট) সিরিজে আছে। আমি নিশ্চিত এই দুইটা ম্যাচ খেলার জন্য সে উজ্জীবিত। আমাদের জন্য সেটিই গুরুত্বপূর্ণ। অধিনায়ক হিসেবে এ দুই ম্যাচের দিকেই নজর দিচ্ছি আমি। আমি নিশ্চিত, ওর সঙ্গে কথা বলেছি, ও খুবই উজ্জীবিত।’’
তবে দীর্ঘমেয়াদে মোস্তাফিজ টেস্ট খেলবেন কি না- এ বিষয়ে সাকিব নিজেও সন্দিহান। তার মতে প্রত্যেকের নিজস্ব অগ্রাধিকারকেই সম্মান জানানো উচিৎ।
‘‘একেকজনের অগ্রাধিকার একেক রকম থাকতেই পারে। মোস্তাফিজ যদি প্রেফার করে ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি খেলতে চায়, তাহলে আমাদের সেটাই প্রত্যাশা করা উচিৎ।
দীর্ঘমেয়াদে কী আছে ওর মনে, সেটি আমি জানি না। তবে প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই কিছু প্রাধান্য থাকে, পছন্দ থাকে, কমফোর্ট জোন থাকে, সেটিকে সম্মান করা উচিৎ।’’
‘চতুর্থ ইনিংসে স্পিনাররা ভূমিকা রাখবে’
২০১৮ সালের সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। অ্যান্টিগায় হওয়া প্রথম টেস্টে ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জায় পড়েছিল অতিথিরা। চার বছর পর এবারো প্রথম টেস্ট অ্যান্টিগাতেই হচ্ছে। তবে আগের মতো ভরাডুবি নয়, বরং ভালো ফলাফলের আশাই করছেন আবারো টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার মতে এখনকার উইকেট পেস বান্ধব নয়, ব্যাটিং সহায়ক।
ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা একেবারে ভিন্ন উইকেট। আপনি যেমনটা বললেন ৪ বছর আগের মতো নয়। আমার দৃষ্টিতে ব্যাটিংয়ের জন্য এটা ভালো উইকেট । চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা কঠিন হবে, স্পিনাররা ভূমিকা রাখবে।
‘‘প্রথম ইনিংসে আমরা কতটা ভালো ব্যাটিং করতে পারি সেটা দেখার বিষয়। আমাদের সব কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমার মনে হয়, ছেলেরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। প্রত্যেকে কঠোর পরিশ্রম করছে। কালকের (আজ) ম্যাচের জন্য সবাই রোমাঞ্চিত।’’
ইনজুরির কারণে আগে থেকে টেস্ট দলে নেই তাসকিন আহমেদ। আকস্মিকভাবে প্রস্তুতি ম্যাচে পিঠের ডিস্কে চোট পাওয়া ইয়াসির আলী রাব্বি সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন। তবে সাকিব বিষয়টিকে নতুনদের জন্য সুযোগের সৎ ব্যবহার করার উপলক্ষ হিসেবেই দেখছেন মি.অলরাউন্ডার।
‘‘তিন ফরম্যাটে আমরা প্রচুর ক্রিকেট খেলছি। ছেলেরা ইনজুরিতেও পড়ছে। এটা অবশ্য নতুনদের ম্যাচ খেলার সুযোগ দিচ্ছে। দুই বছরের মধ্যে ফলাফল দেখতে পাব। সব ফরম্যাটে ২৫-৩০ জনের দল তখন আমরা গড়তে পারবো। এটা বাংলাদেশের জন্য খুব ভালো হবে।
অনেক খেলোয়াড় ছাড়াই আমরা বহু ম্যাচ খেলছি। দেড় থেকে দুই বছর পর আমরা সুফল পাব। নতুন খেলোয়াড়রা পারফর্ম করতে পারলে সুস্থ প্রতিযোগিতা হবে।’’
তরুণ ক্রিকেটারদের উপর ভর করেই দল এগিয়ে যাবে, টাইগার টেস্ট অধিনায়ক এমন প্রত্যাশাই করছেন। কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সেটি জানিয়েও দিলেন।
‘‘তরুণ ক্রিকেটার জয় সাউথ আফ্রিকায় ভালো করেছে, নিউজিল্যান্ডে ভালো করেছে। এটা তার জন্য আরেকটা চ্যালেঞ্জ। আপনি জানেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য তার ভালো করার সামর্থ্য আছে।
রাজা নতুন ফাস্ট বোলার। মেহেদী মিরাজ দলে ফিরেছে। এটা আমাদের জন্য বড় প্রাপ্তি। সোহান যাওয়া আসার মধ্যে আছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করছে। আশা করি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেটা ধরে রাখবে।’’