টি-টুয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের পর দারুণভাবেই আয়ারল্যান্ড সিরিজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই বড় জয় পেয়েছে টাইগার বাহিনী। ১৮৩ রানের জয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে তামিম ইকবালের দল। এটিই সবচেয়ে বেশি রানের জয়ের রেকর্ড টাইগারদের। এরআগে বড় জয় ছিল সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১৬৯ রানে।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান তুলেছে। ওয়ানডেতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ২০১৯ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৩৩ ছিল আগের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও টাইগার বোলারদের দাপটে ১৫৫ রানে থামে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংসের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল। ডানহাতি পেসার মার্ক অ্যাডায়ারের আউটসুইংয়ের মুখে আলতো করে ব্যাট ছোঁয়ান বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা পল স্ট্রিলিং তা লুফে নেন।
দশম ওভারে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাসও। ৩১ বলে ২৬ রান করেন তিনি। কার্টিস ক্যামফারের বলে স্ট্রিলিংয়ের হাতেই ক্যাচ দেন এ ওপেনার। উইকেটে পুরোপুরি থিতু হয়ে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৩৪ বলে ২৫ রান করে শান্ত বোল্ড হন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের অফস্পিনে লাইন মিস করে।

৮১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকেই শুরু হয় বড় লক্ষ্যের পথে ছোটা। সাকিব-হৃদয়ের সাবলীয় ব্যাটিং জাগায় তিনশর আশা। মুশফিকুর রহিমের ২৬ বলে ৪৪ রানের ক্যামিও বড় সংগ্রহের পথে রেখেছে দারুণ অবদান। সেটি আরও বড় হয় টেলএন্ডারদের দাপুটে ব্যাটিংয়ে। ইয়াসির আলি চৌধুরী ১০ বলে ১৭, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ ৭ বলে ১১ রান করেন।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন হৃদয়। অল্পের জন্য ইতিহাসগড়া হয়নি এ তরুণের। গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হতেই থমকে যায় সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি। দর্শকদের সেঞ্চুরি উদযাপনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। ৮৫ বলে ৯২ ইনিংসে ছিল আটটি চার ও দুটি ছক্কা। তার আগে সাকিব ৯৩ রান করে ফেরেন। নার্ভাস নাইনটিজে ফেরেন দুজনই।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল আয়ারল্যান্ড। দশ ওভারে বাংলাদেশ পায় প্রথম সাফল্য। ৩৮ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন ডোহেনি। মারেন ৪টি চার ও ১টি ছক্কা। দলীয় ৬০ রানে আইরিশদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে। এরপর ধস নামে আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে। ৬০ থেকে ৭৬ রানে পড়েছে ৫ উইকেট।
স্টিফেন ডোহেনিকে কিপার মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন সাকিব আল হাসান। পরে জোড়া শিকার করেন ইবাদত হোসেন। তাসকিন আহমেদ দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে পান সাফল্য। পরে আরেকটি উইকেট নেন এক্সপ্রেস পেসার। লরকান টাকার স্লিপে ক্যাচ তুললে দারুনভাবে সেটি তালুবন্দী করেন ইয়াসির।
পরের ওভারে ইবাদত হোসেন ফেরান আরেক ওপেনার পল স্ট্রিলিংকে। উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতেই ক্যাচ দেন তিনি। ২ রানের ব্যবধানে পড়ে আয়ারল্যান্ডের দুই উইকেট। পরের ওভারে ইবাদত আবারও মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান হ্যারি টেকটরকে (৪)। আইরিশ অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নিকে (৫) বোল্ড করেন তাসকিন।
১০৯ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারায় সফরকারী দল। ১১৮ রানে ফেরেন আরও দুই ব্যাটার। ৯ম উইকেট জুটিতে ২৬ রান পায় আইরিশরা। এরপর ১৫৫ রানে থামে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন ইবাদত। নাসুম নিয়েছেন ৩টি, তাসকিন ২টি, সাকিব ১টি।