চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

মিয়ানমারকে থামাতে জাতিসংঘ কেন ব্যর্থ?

রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই জাতিসংঘ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে। তবে সেই কথা কথার কথাই রয়ে গেছে। বর্মী জেনারেলদের অমানবিক কর্মকাণ্ড থামাতে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি আন্তর্জাতিক এ সংস্থা। মিয়ানমারে জনগণকে নিপীড়নের পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনীর কাছে রাজস্ব ও অস্ত্র পৌঁছানো থামাতে বিশ্বের দেশগুলোর আরও বেশি ‍কিছু করা উচিত বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নির্বিচারে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বলে অভিযোগ জাতিসংঘের। এমনকি বাংলাদেশ সীমান্তের কাছেও তারা যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যাচ্ছে। সেখানে ছোড়া মর্টারশেল ও ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে বান্দরবান সীমান্তে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। দেশটির সামরিক জান্তা বলছে, তারা দেশের ক্ষতি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

Bkash July

মিয়ানমার যাই বলুক না কেন, তাদের এ ধরনের উস্কানি অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের বহিঃপ্রকাশ। নিজ দেশের অভ্যন্তরে যাই ঘটুক না কেন, বাংলাদেশের তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। কিন্তু তাদের সেই যুদ্ধ মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এর বদলে সেসব মর্টারশেল ও গুলি বাংলাদেশের ভেতরে আসা আন্তর্জাতিক সব ধরনের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে এখনও চরম ধৈর্য্যের পরিচয় দিচ্ছে।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী প্রতিবেশি বা অন্য যেকোন দেশের সাথে শত্রুতা পোষণ করে না। সেজন্যই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ যুদ্ধ চায় না, শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান চায়, প্রয়োজনে জাতিসংঘের কাছে জানানো হবে। মিয়ানমারের গুলি তাদের সীমানায় থাকা উচিত। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। কোনো উস্কানিতেই বাংলাদেশ যুদ্ধে জড়াবে না।

Reneta June

জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের ভাষায় আমরা বলতে চাই, বর্মী জেনারেলরা অর্থবহ ও টেকসই উপায়ে দেশ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে আরও বিচ্ছিন্ন করতে হবে। মিয়ানমারের জনগণকে সমর্থন জানাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং দেশটির সামরিক বাহিনীকে আর্থিকভাবে বিচ্ছিন্ন করতে জানানো আহ্বানের জবাব দেওয়া।

তবে মিয়ানমারকে একঘরে করার ক্ষেত্রে বড় বাধা হচ্ছে চীন, রাশিয়া ও ভারতের সখ্যতা। জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর বলছে, মিয়ানমারকে যুদ্ধবিমান ও সাঁজোয়া যান দিয়েছে রাশিয়া, চীন যুদ্ধ ও পরিবহন বিমান সরবরাহ করেছে, সার্বিয়া রকেট ও গোলাগুলি দিয়েছে এবং ভারত একটি দূরবর্তী বিমান প্রতিরক্ষা স্টেশন তৈরিতে সহায়তা করেছে। এছাড়া এর আগে দেশগুলোর ভেটোর কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি জাতিসংঘ।

আমরা মনে করি, উল্লেখিত তিনটি দেশই বাংলাদেশের ঘনিষ্ট মিত্র। মিয়ানমারের সাথে তাদের সখ্যতায় বাংলাদেশের মাথাব্যথা নেই। তবে তাদের সমর্থনের অপব্যবহার করে দেশটি রোহিঙ্গা সংকট তৈরি এবং সম্প্রতি যুদ্ধের উস্কানি কোনভাবেই বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। যেহেতু চীন, ভারত ও রাশিয়ার সাথে এদেশের জনগণের সুসম্পর্ক রয়েছে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইস্যুতে মিয়ানমারকে কড়া বার্তা তাদের দিতেই হবে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সেজন্য প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাই।

ISCREEN
BSH
Bellow Post-Green View