কৃষিমন্ত্রী ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, একদা আমেরিকার এক মন্ত্রী যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে তামাশা করেছিলেন, তারাই আজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘অনুকরণীয় দেশ’ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরছে। সেই বাংলাদেশ এখন খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে কৃষি সামগ্রী এখন রপ্তানির বাজার দখলের লড়াইয়ে নেমেছে।
সম্প্রতি কলকাতা সফরে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী একথা বলেন।
মন্ত্রী জানান, উন্নত দেশে বাংলাদেশের খাদ্যশস্য ও ফলের ভাল চাহিদা রয়েছে। তবে রপ্তানির জন্য গুণমান ছাড়াও দরকার আধুনিক ও স্বাস্থ্যসম্মত চাষাবাদের অভ্যাস। সেটাই করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, জাপানে বাংলাদেশের আমের খুব কদর। কিন্তু গায়ে আঠার দাগ থাকা চলবে না। কী ভাবে আম পাড়লে দাগ এড়ানো যায়, তা কৃষকদের শেখানো হচ্ছে। চাষে জৈব সার ব্যবহারে জোর দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। উন্নত কৃষিযন্ত্র কেনায় মিলছে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ সরকারি ভর্তুকি। জোর দেওয়া হচ্ছে বিশ্বমানের প্যাকেজিংয়েও। এ জন্য ঢাকার অদূরে শ্যামনগরে তৈরি হয়েছে প্যাকেজিং হাউস। সেখান থেকে মোড়কবন্দি শস্য ও ফল যাচ্ছে বিমানবন্দরে। পূর্বাচলে আরও একটির নির্মাণ শুরু হয়েছে দু’একর জায়গায়।
শ্রীনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগ ঘুরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ বাংলার কৃষিক্ষেত্রের উন্নতির জন্য যে গভীর চিন্তাভাবনা করেছিলেন, তা অনেকে জানেনই না।
তিনি বলেন, দশকের পর দশক শরতের কাশফুল ফুটলেই বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল জুড়ে তীব্র খাদ্যাভাব দেখা যেত। একে বলা হত ‘মঙ্গা’।এই সঙ্কটকে জয় করা গিয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণের যশোর, সাতক্ষীরা, বরিশাল, খুলনার উর্বর জমিতে উৎপন্ন শাক, ফলমূল এখন তাজা থাকতেই গোটা দেশে পৌঁছাচ্ছে। ফলে চাষিদের সামনে বাজার উন্মুক্ত।
মন্ত্রী জানান, তার স্বপ্ন দেশের কৃষিক্ষেত্রকে বিশ্বমানে উন্নীত করা।