চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজে বড় বাধা বাজেট স্বল্পতা

দুই বছর আগে প্রায় ৯৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রেখে শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ। চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বাজেট স্বল্পতার কারণে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

মাঠ উন্নয়ন, গ্যালারিতে শেড নির্মাণ, গ্যালারিতে চেয়ার স্থাপন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় খেলোয়াড়দের সাজঘর আধুনিকায়ন, ফ্লাডলাইট, সিসিটিভি ক্যামেরা, জেনারেটর, এলইডি জায়ান্ট স্ক্রিন, নতুন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ড, মিডিয়া সেন্টার, টিকিট কাউন্টার, ডোপ টেস্ট রুম, চিকিৎসা কক্ষ, ভিআইপি বক্স, প্রেসিডেন্ট বক্স, টয়লেট উন্নয়ন, চিকিৎসা সরঞ্জাম, সাব-স্টেশন সরঞ্জাম, এসি ও সৌর প্যানেল সরবরাহের তালিকা আছে স্টেডিয়াম সংস্কারের প্রস্তাবনার মধ্যে।

বৃহস্পতিবার স্টেডিয়ামে ঢুকে মাঠে চোখ রাখলে অধিকাংশ জায়গায় মরা ঘাসের দেখা মেলে। ঘাস বুননের কাজ পুরোদমে চলছে। মাঠকে সবুজে ভরা বানাতে নিয়মিত পানি ঢালা হচ্ছে।

চারপাশের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক বসানো না হলেও শেষ হয়েছে পিচ ঢালাই। গ্যালারির পুরনো আসনগুলো উপড়ে ফেলার কাজ অনেকাংশে শেষ। প্রেসবক্স এবং টয়লেটের কাজ এখনো বাকি। এখানে-ওখানে মাটির স্তূপ। চারিদিকে তাকালে বোঝা যায় বহুকিছু হতে বাকি এখনও।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা চ্যানেল আই অনলাইনকে বললেন, ‘নির্ধারিত সময়ের ভেতর কোনোভাবেই স্টেডিয়াম সংস্কার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। বরাদ্দকৃত বাজেটের ভেতর ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৪ কোটি টাকা ছাড় দেয়া হয়েছিল। চলতি অর্থবছরে ১০ কোটি টাকা দেয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে সাড়ে ৪ কোটি টাকা পাওয়ার অপেক্ষা। অর্থাৎ, ৩৪ কোটি টাকায় পুরো কাজ শেষ করা যাবে না।’

‘মাঠ এবং ড্রেসিংরুমের কাজ সম্পন্ন হলেই আমরা বাফুফেকে তা হস্তান্তর করব। তবে বাকি যেসব অংশে কাজ অবশিষ্ট থেকে যাবে, সেগুলো আমাদের অধীনে থাকবে।’

দেশের প্রধান এই ক্রীড়াভেন্যুটির অর্থ ছাড়ে কেনো এত বিলম্ব, সেটিও জানালেন সুকুমার সাহা। বললেন, ‘আমরা তাদের সাথে মিটিং করেছি। ওনারা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছেন। সীমাবদ্ধতার জায়গা আছে বলেই এমনটি হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা কমিশনেও বিস্তারিত জানানো হয়েছে।’

৯৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ থাকলেও এই পরিমাণ অর্থে সংস্কার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক। তার মতে, ‘বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি এবং টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াতেই বাজেট বাড়াতে হবে। সবমিলিয়ে সংস্কার কাজে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।’

‘গ্যালারিতে শেড এবং ফ্লাডলাইটে অনেক অর্থ ব্যয় হবে। ফুটবল ফেডারেশন আগের পুরনো মডেলের ফ্লাডলাইটের বদলে এলইডি প্রযুক্তির ফ্লাডলাইট চাইছে। টাকার স্বল্পতার কারণে শেড আর ফ্লাডলাইটের জন্য আমরা দরপত্র আহ্বান করছি না। ফ্লাডলাইটের জন্য ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এখন তা বেড়ে ৪০ কোটিতে দাঁড়াবে। হাতলযুক্ত চেয়ারগুলো বিদেশ থেকে চলে এসেছে। আর গ্যালারিতে যেসব চেয়ার স্থাপন হওয়ার কথা, তাতে সময় লাগবে।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ মোবারক করিম লিটন চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন, ‘স্টেডিয়ামের শেড জার্মানি থেকে কেনার পর ব্যাংককে সেলাই কাজ চলবে। সেলাই শেষে শেডগুলো দেশে আনা হবে।’

সংশোধিত বাজেট মিললেও প্রস্তাবিত সময়ে সংস্কার কাজ শেষ হবে কিনা সেটা নিয়েও আছে প্রশ্ন।