‘দূর করো আত্মকেন্দ্রিকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো’- এই মন্ত্রে এবার বর্ষবরণের আয়োজন করবে ছায়ানট। শনিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকার ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানায় দেশের ঐতিহ্যবাহী এই সাংস্কৃতিক সংগঠন।
ষাটের দশকে পাকিস্তানিদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রমনার বটমূলে যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট, এখন তা বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ।
সংবাদ সম্মেলনে এবারের আয়োজনের নানা দিক তুলে ধরেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা। তিনি বলেন,“এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, আমরা মানুষের জয়গান করব, ভোগবাদ নয়, স্বার্থপরতা নয় মনুষ্যত্বকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, স্বাভাবিকতার সাধনা এবং সম্প্রীতির ধ্যান ‘দূর করো আত্মকেন্দ্রিকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো’।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৈশাখের প্রথম দিন ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছর আবাহনের শুরু করা হবে।
পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। যোগ হয়েছে, জাতীয় কবির কালজয়ী সৃষ্টির বিজাতীয় অবমাননার প্রতিবাদ এবং লেখনীর দুর্দম শক্তিতে বাঙালির গণজাগরণে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে চলা আবু বকর সিদ্দিককে স্মরণ।
ছায়ানটের আয়োজন নিয়ে সংগঠনটির যুগ্ম সম্পাদক জয়ন্ত রায় বলেন, এবার আয়োজনে সম্মেলক গান থাকবে ১১টি, একক গান থাকবে ১৫টি এবং পাঠ ও আবৃত্তি থাকবে। শুরুতেই একটি রাগসংগীত থাকবে। একক গান শোনাবেন শাহীন সামাদ, খাইরুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, লাইসা আহমেদ লিসাসহ অনেকে। পাঠ ও আবৃত্তিতে অংশ নেবেন রামেন্দু মজুমদার ও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়।
জয়ন্ত বলেন, “বর্ষবরণ সার্থক করতে আন্তরিক নিষ্ঠায় প্রায় আড়াই মাস আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী।”
ছায়ানট সাধারণ সম্পাদক লিসা বলেন, সকলকে নিয়ে শুভ কর্মপথে চলবার, কণ্ঠে নির্ভয় গান তুলে নেবার ছায়ানটের এই আয়োজন সার্থক হবে সর্বজনের সমর্থন, অংশগ্রহণ এবং উপলব্ধিতে।
ঢাকার রমনা উদ্যানে দু’ঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও (www.chhayanaut.com ও digitalplatformchhayanaut)।