চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ওসি বদলির বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতার বক্তব্য ভাইরাল

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ওই ভিডিওতে নেতা বলেছেন, ‘আমি জেল থেকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠানোর পর গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মতিনকে বদলি করা হয়েছে।’

গতকাল মঙ্গলবার উপজেলা আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের এমন বক্তব্য ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।

জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ আত্মসাতের মামলায় ১৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি। সভা চলাকালে তিনি এই মন্তব্য করেন, যা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

এসময় ওসি আব্দুল মতিনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আজকে আওয়ামী লীগের স্ট্যান্ডিং সেক্রেটারি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজতে যাবে কেন? আমি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জেলে বসে আবেদন পাঠিয়েছিলাম।’

বদলি হওয়া ওসি জামায়াত-বিএনপির মূখপাত্র ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে বুঝে উঠতে না পেরে তার সাথে বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত হয়েছিল। আমিও তাদের মতো ভুল করে তার সাথে নানা কাজে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। যখন বুঝতে পারি এই ওসি আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার এজেন্ডা নিয়ে কাজ করছে, তখন থেকে তার সাথে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করি। এজন্য ওসি আমাকে তার ব্যক্তিগত শত্রুর তালিকায় নাম দিয়ে মিথ্যা মামলা করার প্ররোচনা দিয়েছে।’ ৬ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে তিনি সংগঠন নিয়েও বক্তব্য রাখেন।

নাজিরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান হিরা জানান, নজরুল ইসলামের দেয়া বক্তব্য নিয়ে তারা প্রতিবাদ জানান। তিনি কোন উত্তর না দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বিষয়টি উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে অবগত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গুরুদাসপুর থানার বিদায়ী ওসি আবদুল মতিন জানান, তার বদলির বিষয়টি রুটিন অনুযায়ী হয়েছে।

গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে আশ্রয়ণপ্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় তাকে দলের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অর্থ আত্মাসাত মামলায় তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ভাইরাল হওয়া বক্তব্য সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলেও জানান। যদি তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে থাকেন তা গ্রহণযোগ্য নয়। বিষয়টি দুঃখজনক। দলীয় ফোরামে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, নাটোর জেলা পুলিশ সুপারের অফিস আদেশে গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মতিনকে ওয়ার হেডকোয়ার্টার্স নাটোর এ বদলি করা হয়। অন্যদিকে সম্প্রতি অব্যাহতি প্রাপ্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলামের নামে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নামে পাঁচটি অর্থ আত্মসাৎ মামলা ও একটি নিয়োগ জালিয়াতি মামলা দায়ের করা হয়। গত ২ এপ্রিল আদালতে তিনি একটি আত্মসাৎ মামলার হাজিরা দিতে গেলে আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। পরে ১৬ দিন পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন তিনি।