পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও তাদের ধর্মীয় সমাবেশে বাধা দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ‘আর্টিকেল নাইনটিন’।
আজ সংস্থাটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
বলা হয়, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে পৌনঃপুনিকভাবে ঘটে চলা ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ভিন্ন বিশ্বাসের মানুষের ওপর হামলার ঘটনা ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা-বিদ্বেষেরই বহিঃপ্রকাশ।
আর্টিকেল নাইনটিন এর দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র প্রত্যেক নাগরিকের যে কোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। পাশাপাশি সংবিধান প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ-সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার দিয়েছে। দেশের সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ও নির্ভয়ে যার যার ধর্ম পালন করতে পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষদেরও সহনশীল এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করায় ব্যাপক ভূমিকা আছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড়ের আহম্মদনগরে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ৩ দিনের সালানা জলসার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন ও সমমনা ধর্মীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা জুমার নামাজের পর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে ২ জন নিহত এবং ৭ পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ৫০ জন আহত হন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ১৫০টি বাড়িতে ভাঙচুর, আগুন ও লুটপাট চালানো হয়।
আর্টিকেল নাইনটিন সরকারের প্রতি আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষের উপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানায় এবং এই ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন অবহেলা আছে কিনা তা স্বচ্ছতার সাথে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়। পাশাপাশি সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে নির্ভয়ে ও বিনাবাধায় তাদের ধর্ম পালন করতে পারে তার জন্য জাতিসংঘের সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের নীতি প্রতিষ্ঠিত করে একটি সহনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবি জানায়।
উল্লেখ্য, আর্টিকেল নাইনটিন একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত এই সংস্থাটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তা নিশ্চিতে কাজ করে আসছে। সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় এর কার্যক্রম শুরু করে।