রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গাড়ি চালকের বস্তাবন্দী লাশ পাবনা পদ্মাপাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সকালে এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে পাবনা পুলিশ সদর উপজেলার কোমরপুর পদ্মাঘাটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি অভিজাত গাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত গাড়ি চালকের নাম সম্রাট (২৭)। তিনি ঈশ্বরদী পৌরসভার অরোনখোলা গ্রামের মো. শহিদুলের ছেলে। এ ঘটনায় প্রকল্পের আরেক গাড়ি চালকের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনদিন ধরে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের একটি ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৪৭৪৮) সদর উপজেলার কোমরপুর পদ্মা ঘাটে দাঁড় করানো ছিল। এটি একটি নৌরুট এবং পাবনা-কুষ্টিয়ার বিনোদন স্পট হওয়ায় এলাকাবাসি কেউ বেড়াতে এসেছে মনে করে গাড়ির কাছে যাননি। কিন্তু তিনদিন ধরে গাড়িটি একইস্থানে দাঁড় করানো দেখে এলাকাবাসির সন্দেহ হলে শনিবার সকালে তারা গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে পেছনের সিটে একটি বস্তাবন্দি লাশ দেখতে পান।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, গাড়িটি বেসরকারি মালিকানাধীন এবং রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের নিকিমত নামক একটি কোম্পানি ভাড়া নিয়েছিল। গাড়িটি ওই কোম্পানির পরিচালক ব্যবহার করতেন। গাড়ির চালক ছিলেন সম্রাট। গত তিন দিন ধরে গাড়িসহ সম্রাট নিখোঁজ ছিলেন এবং শুক্রবার তার স্বজনরা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, ঈশ্বরদী থানা পুলিশের সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার আমরা অনেক স্থানে ডায়েরির সূত্র ধরে অভিযান চালাই।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পদ্মার ওপারের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তিন থানার পুলিশ একযোগে কাজ করছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সম্রাট বৃহস্পতিবার রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে ঈশ্বরদী উপজেলার বাঁশেরবাদা এলাকায় কোম্পানির আরেক গাড়ি চালক আব্দুল মমিনের বাড়িতে যান। এজন্য পুলিশ আব্দুল মমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আব্দুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে আটক করে। সীমা খাতুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, সম্রাটকে হত্যা করা হয়েছে এবং মমিন গাড়িতে করে তার লাশ নিয়ে গেছে। মমিন পলাতক রয়েছেন বলে পুলিশও জানায়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, আটক সীমা খাতুন বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
অন্যদিকে শনিবার সকালে ঈশ্বরদী থেকে নিহত গাড়ি চালক সম্রাটের বাবাসহ স্বজনরা পদ্মাপাড়ে এসে তার লাশ শনাক্ত করেন। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে পদ্মাপাড়ে এক বেদনাময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।