চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বাস ড্রাইভার আফিফ, সাকিব মোবাইল জার্নালিস্ট!

ব্রিসবেন থেকে: সিডনি ছেড়ে আসা কোয়ান্টাস এয়ারওয়েজের বিমান ১৬ মিনিট দেরিতে নামল ব্রিসবেন ডোমেস্টিক এয়ারপোর্টে। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কনভেয়ার ভেল্টের সামনে এলেন সবার পরে। কোনো তাড়াহুড়া নেই, খুব রিল্যাক্সড!

লাগেজ বুঝে নিয়ে চিপস কিনে খেতে খেতে ছুটলেন বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের দিকে। পথেই বায়না ধরলেন কফির। সঙ্গে সঙ্গে এয়ারপোর্ট শপে দলের একজন ছুটে গেলেন।

মিনিট দুয়েক পর সাকিব বাস থেকে বেরিয়ে এলেন। দলের সঙ্গে থাকা বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস খানিকটা দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে। বিসিবি পরিচালকের ব্রিফিং মোবাইলে ঘুরে ঘুরে ভিডিও করছিলেন সাকিব। নাসুম আহমেদকে বলছিলেন, এটা ভাইরাল করে দেই!

সাংবাদিকদের ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে সাকিবের দুষ্টুমি চলতে থাকলেও জালাল ইউনুস ছিলেন স্বাভাবিক। পরে দুজনই হাসতে হাসতে উঠে গেছেন টিম বাসে।

এয়ারপোর্ট থেকে ২০ মিনিটের দূরত্ব সফিটেল হোটেলে টিম বাংলাদেশকে যিনি ড্রাইভ করে পৌঁছে দিয়েছেন, তার নাম এমা। ৫৫ বছর বয়সী ভদ্রমহিলা একাই ক্রিকেটারদের ভারী ভারী ব্যাগ বাসের ড্রপ বক্সে তুলেছেন। এখানকার নিয়মটাই এমন, যিনি বাস ড্রাইভার তাকেই সব কাজ করতে হয়। হেলপার বলতে কিছু নেই এখানে। চালকেরই সব দায়িত্ব। সহযোগিতার জন্য বাড়তি কেউ থাকেও না বাসে।

এমা যখন একে একে ক্রিকেটারদের লাগেজ গুছিয়ে দিচ্ছিলেন। ড্রাইভিং সিটে বসেছিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। সতীর্থরা ড্রাইভার বলে টিপ্পনী কেটেছেন। আফিফও তাতে বেশ মজা পেয়েছেন। স্টিয়ারিং ধরে বাস চালানোর অভিনয়টা ভালোই করেছেন।

সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয়ে সিডনি থেকে ফেরা জাতীয় দলকে ব্রিসবেন এয়ারপোর্টে এমন মুডে পাওয়া যাবে সেটি ছিল ভাবনারও বাইরে। অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য রাজ্যের মধ্যে ব্রিসবেনেই সবচেয়ে বেশি গরম। গ্রীষ্মের শুরুতেই ২৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল এখানে। নীল আকাশের নিচে সাকিব-আফিফরা অভ্যস্ত আবহাওয়া পেয়েই হয়ত আরও বেশি চঞ্চল হয়ে উঠেছিলেন।

এমন চনমনে বাংলাদেশকে মাঠেও দেখতে চায় সবাই। কোচরা পরিকল্পনা করছেন বিসিবি থেকেও উজ্জীবিত করা হচ্ছে দলকে। তারপরও কিছুতেই কেন প্রত্যাশা মেটাতে পারছে না দল, সেটি নিয়ে ভাবনায় টিম ম্যানেজমেন্ট।

বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস এয়ারপোর্ট ছাড়ার আগে বললেন, ‘তিনটা থেকে চারটা উইকেট খুব দ্রুত পড়ে যাওয়াতে..! কিন্তু এটাকে কীভাবে থামানো যায় এটা নিয়ে পরিকল্পনা হচ্ছে। সামনে আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিম্বাবুয়ের সাথে। সামনের তিনটা ম্যাচ নিয়েই আমরা সিরিয়াস। আশা করি যে আগের ম্যাচের ভুলভ্রান্তি কী হয়েছে সেটি ঠিক করে মাঠে নামব।’

‘ঢাকায় যাওয়ার পর আমরা বসব। এই ফরম্যাটটা নিয়ে আরও সিরিয়াসলি চিন্তা করতে হবে। খেলোয়াড়রা যেন বাইরে আরও বেশি টি-টুয়েন্টি সিরিজ, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে পারে সে সুযোগ আমরা করে দেব।’

রোববার গ্যাবায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যাদের সঙ্গে জিতলে বাড়তি গৌরব নেই, তবে হারলে ছিঃ ছিঃ রব উঠবে। সেটি ভালো করেই মাথায় থাকার কথা সাকিব-আফিফদের!