সম্প্রতি গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন আর্থিক গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ। যার জেরে শেয়ার বাজারে বিপর্যয়ের মুখে একের পর এক সামনে আসছে আদানিকে ঘিরে থাকা বিতর্ক।
গত কয়েক দিনে তার বিপুল পরিমান সম্পদের ঘাটতি ঘটেছে। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা এই ভারতীয় ধনকুবের এক ধাক্কায় ২২ নম্বর স্থানে নেমে গিয়েছেন।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে কারচুপির অভিযোগ তুলে হিন্ডেনবার্গের একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হবার পর আদানিদের শেয়ারের দামে ধস নেমেছে। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে আদানির পরিবারের সদস্যদের নামে বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসার পর থেকে তা নানা আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গৌতম আদানির পুত্র কর্ণ আদানির শ্বশুর সিরিল শ্রফের নাম সম্প্রতি আলোচনায়। সিরিলের কন্যা পরিধির সঙ্গে কর্ণের বিয়ে হয় ২০১৩ সালে। সেই থেকেই আদানিদের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন সিরিল। ভারতের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির কমিটির সক্রিয় সদস্য তিনি। সিরিল আদানি গোষ্ঠীকে বিভিন্ন বিষয়ে আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেবির সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকায় ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগ জোরালো হয়েছে।
রিপোর্টের ১০৬ পাতার রিপোর্টে গৌতম আদানির বড় ভাই বিনোদ আদানির নাম রয়েছে। তিনি আদানি গোষ্ঠীর একটি ফ্রড সংস্থার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া, ২০১৬ সালে পানামা দুর্নীতি এবং ২০২১ সালে প্যান্ডোরা পেপার দুর্নীতিতেও নাম জড়িয়েছিল তাঁর।
আদানির আরেক ভাই রাজেশ আদানির বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে হিরার ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ভারত সরকারের ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই তাঁকে এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত করেছিল। ১৯৯৯ এবং ২০১০ সালে দুই বার রাজেশকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
হিন্ডেনবার্গের প্রকাশিত দুর্নীতির অভিযোগের তালিকায় আছেন গৌতমের শ্যালক সমীর ভোরাও। অভিযোগ আছে হিরে দুর্নীতির অন্যতম হোতা ছিলেন তিনি। আরও অভিযোগ, দুর্নীতি ঢাকার জন্য একাধিক মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
রিপোর্টে হিরার দুর্নীতির আর এক কাণ্ডারি হিসাবে যতীন মেটার নাম উল্লেখ করা হয়েছে যার ছেলে আদানির ভাইয়ের মেয়ের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ।
এ ছাড়াও হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে গৌতম আদানির স্ত্রী প্রীতি আদানির নামও উঠে এসেছে। তিনি পেশায় একজন দাঁতের চিকিৎসক এবং আদানি ফাউন্ডেশনের চেয়ারওম্যান। অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির সঙ্গে তিনিও জড়িত।