আদানি গ্রুপের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম গত কয়েকদিনে মারাত্মক হারে পড়ে গেছে। হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনের পর ভারতের আদানি গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারমূল্য তিন দিনে প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলার (৬ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা) কমেছে৷
নিউইয়র্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান শর্ট-সেলার হিনডেনবার্গ গত সপ্তাহে এশিয়ার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে৷ এতে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির’ অভিযোগ আনা হয়৷ তাদের বিরুদ্ধে শেয়ারবাজার জালিয়াতি, কারসাজি করে শেয়ারের দাম বৃদ্ধিসহ তাদের ঋণের পরিমাণ ও তাদের ট্যাক্স হেভেন ব্যবহার নিয়েও তথ্য প্রকাশ করা হয়৷
প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে তাদের কাছে ৮৮টি প্রশ্ন রাখা হয়। জবাবে আদানি গ্রুপ ৪১৩ পৃষ্ঠার এক উত্তর পাঠায়, যেখানে ৬২টি প্রশ্নেরই উত্তর এড়িয়ে গেছে আদানি গ্রুপ। এবিষয়ে হিনডেনবার্গ বলছে, ৪১৩ পৃষ্ঠার জবাবের মধ্যে মাত্র ৩০টি পৃষ্ঠায় ছিল বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর, আর বাকি পৃষ্ঠাগুলো অহেতুক আলাপ দিয়ে ভরা।
আদানি গ্রুপ অভিযোগ করেছে, হিনডেনবার্গ ভারতের ব্যবসায়িক নিয়ম বা আইনগুলো ভালোমত জানেনা। তাই তারা বিষয়গুলো বুঝতে পারছেনা। জবাবে হিনডেনবার্গ বলেছে, “আমাদের কাছে প্রতারণা মানে প্রতারণাই, এটাকে জাস্টিফাই করার সুযোগ নাই”।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপ গত কয়েক বছরে অস্বাভাবিকভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে। পৃথিবীর শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ৩ নম্বরে উঠে আসেন গৌতম আদানি। হিনডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর আদানি গ্রুপে শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় তিনি শীর্ষ ধনীর তালিকায় ৩ নম্বর অবস্থান থেকে ৭ নম্বরে নেমে গেছেন।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতি ও শুক্রবারের পর সোমবারও আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর কমেছে। আদানি ট্রান্সমিশন ও আদানি টোটাল গ্যাসের শেয়ারের দাম আজ ২০ শতাংশ কমেছে। আদানি গ্রিন এনার্জি শেয়ারের দাম পড়েছে ১৮ শতাংশ। আদানি পাওয়ার ও আদানি উইলমারের দাম পড়েছে ৫ শতাংশ করে। শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ দাম পড়েছে আদানি পোর্টস ও স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ারের।