জ্বালানি নিরাপত্তা এবং ডিকার্বনাইজেশন খাতের অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পের সর্বাধুনিক সল্যুশন ও সার্ভিসকে সামনে রেখে ‘২০২২ গ্যাস টারবাইন টেকনিক্যাল সেমিনার ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেমিনারের আয়োজন করেছে মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের পাওয়ার সল্যুশন ব্র্যান্ড মিৎসুবিশি পাওয়ার।
রোববার ১১ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে দুই দিনব্যাপী এই সেমিনারের উদ্বোধন হয়।
সেমিনারের প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রতিনিধি, মিৎসুবিশির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং স্থানীয় অংশীদাররা অংশগ্রহণ করেন।
স্বগত বক্তব্যে মিৎসুবিশি পাওয়ার এশিয়া প্যাসিফিকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ওসামু ওনো বলেন, এশিয়া প্যাসিফিকের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম, যেখানে মিৎসুবিশি পাওয়ার ১৯৬০ সালে সফলভাবে একটি স্টিম টারবাইন সরবরাহ করেছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতিতে অবিচল রয়েছি এবং দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ২০% এর দায়বদ্ধতা বহন করছি।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য অগ্রগতি ধরে রাখতে পারলে এ দেশের বিদ্যুৎ খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মূল্যবান অংশীদার ও গ্রাহকদের সাথে নিয়ে আমরা বাংলাদেশের জ্বালানির চাহিদা বিবেচনায় জিরো কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা ক্লিন ও গ্রিন এনার্জির দিকে এগোচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে একটি হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট করেছি। এছাড়া জাপানসহ বেশ কিছু দেশের সঙ্গে রিনিউয়েবল এনার্জি নিয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগিত হয়েছে। জাপান আমাদের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন সহযোগী, তাদের কাছে আমরা সামনের দিনে আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
সারা দেশে ১০০% বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পর, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্য হল সকলের জন্য সাশ্রয়ী, উন্নত মানের এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে মিৎসুবিশি পাওয়ার বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
তিনি ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ এর কথা উল্লেখ করে হাইড্রোজেন প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ও ব্লু হাইড্রোজেনের মতো পরিষ্কার ও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহারের উপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা চট্টগ্রামে একটি হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট করেছি। এছাড়া জাপানসহ বেশ কিছু দেশের সঙ্গে রিনিউয়েবল এনার্জি নিয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগিত হয়েছে। জাপান আমাদের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন সহযোগী, তাদের কাছে আমরা সামনের দিনে আরও সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান দেশের জ্বালানি খাতের চাহিদা পূরণে প্রধান প্রধান সহযোগিতামূলক প্রকল্পসমূহ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা জ্বালানি খাতে গত এক দশকে অনেক উন্নতি করেছি, জ্বালানি খাতে উন্নয়নে আমাদের সঙ্গে মিৎসুবিশি সহযোগী হিসেবে আগে থেকেই সম্পৃক্ত ছিল। ভবিষ্যতে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
মিৎসুবিশি পাওয়ারের গ্যাস টারবাইনগুলি সারা দেশে পাঁচটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিডকে সহযোগিতা করছে। এর এম৭০১এফ গ্যাস টারবাইনটি হরিপুরে বাংলাদেশের প্রথম বৃহৎ-শ্রেণীর গ্যাস টারবাইন হিসেবে ইনস্টল করা হয়েছিল এবং ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটি দেশের সবচেয়ে দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য টারবাইনগুলোর একটি। সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্ল্যান্টগুলো কার্যকর রাখতে বিক্রয়োত্তর এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ সার্ভিসে স্বয়ংসম্পূর্ণ রাখা হয়।