স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় জেলার লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রহিমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে রাঙ্গামাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই এম ইসমাইল হোসেন আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় এ রায় প্রদান করেন।
আদালতে রায়ের বিচারক এই এম ইসমাইল হোসেন মামলার রায়ে বলেন, আসামী করল্যাছড়ি আর, এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বিদ্যালয়ের ছাত্র বাসের ভিতরে তার ছাত্রী ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন মর্মে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং আসামী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আসামী মো. আব্দুর রহিমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১) ধারা মোতাবেক যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হলো।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট রাজীব চাকমা আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রাঙ্গামাটির জন্য এটি একটি যুগান্তকারী রায় হযেছে। এই রায়ে আমরা সন্তুোষ প্রকাশ করছি। আশা করছি এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ কার্যক্রম কমে আসবে।
আসামী পক্ষের আইনজীবি বারের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোক্তার আহমেদ বলেন, এই রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পায়নি। আমরা উচ্চ আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবো।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি সাইফুল ইসলাম অভি বলেন, আদালতের রায়ে আমরা খুবই সন্তুষ্ট, আশা করছি এ রায় দ্রুত কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য গত ২৫ সেপ্টম্বর ২০২০ তারিখে ভিকমিটকে আসামী জোর পূর্বক লংগদু উপজেলার করল্যাছড়ি আর এস উচ্চ বিদ্যালয়ের কক্ষে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে আসামি এই ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য ভিকটিমকে হুমকী দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন। ভিকটিম ভয়ে এই ঘটনা কাউকে প্রকাশ করেনি। দুদিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে তার শাররিক অবস্থার অবনতি হলে ভিকটিম তার মাকে বিষয়টি জানান।
পরে তার মা বিষয়টি স্থানীয় কার্বারী বীর মোহন চাকমা, ইউপি চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি মঙ্গল কান্তি চাকমাকে অবহিত করেন। বিষয়টি তারা দেখবেন বললেও ৯ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর গত ৫ অক্টোবর ২০২০ লংগদু থানায় মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের মা।
পরে লংগদু থানার পুলিশ পরিদর্শক সুজন হালদার ও পুলিশ পরিদর্শক মোঃ জাকির হোসেন তদন্ত শেষে গত ২৮ অক্টোবর আসামীর রিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা থাকায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ এহাজারকারী ভিকটিমের ডাক্তারী পরক্ষা সম্পন্নকারী দুইজন চিকিৎসক, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও স্থানীয় স্বাক্ষী বীর মোহান কার্বারী ও ইউপি চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমা সহ মোট ১৩ জনের স্বাক্ষী উপস্থাপন করেন। অন্যদিকে আসামী পক্ষ আসামী সহ মোট ৬ জনের স্বাক্ষী উপসস্থাপন করেন।
উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত আজ এ মামলার রায় প্রদান করেন।