অপসংস্কৃতি রোধ করে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিক।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে প্যারিস রোডে বিজ্ঞানমনস্ক ও সাংস্কৃতিকবোধ সম্পন্ন জাতি গঠনে সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার দরজা অবারিত করার লক্ষে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞান মনস্ক হতে হবে, অপসংস্কৃতি রোধ করে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করতে হবে। জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করতে হবে।
অধ্যাপক মলয় ভৌমিক আরও বলেন, আমাদের নিজেকে আগে অসাম্প্রদাকিতা ও সাম্প্রদায়িকতা বিষয় দুটি বুঝতে হবে। তারপর অসাম্প্রদায়িক হয়ে উঠতে হবে। যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানমনস্ক, মানবিক চেতনা কী, সেটি আগে বুঝতে হবে। আজকের তরুণদের অসাম্প্রদায়িক হওয়ার ইচ্ছা আছে কিন্তু বিষয়টি সে বুঝে না। আর বুঝে না বলেই গুজব রটনাকারীরা অথবা ওঁৎ পেতে থাকা শক্তি অতিদ্রুত তথ্য প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তাদেরকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ পাচ্ছে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের চারটি বাহু আছে। সেই চারটি বাহু হলো জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। একটা সময় ছিলো যখন এদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ একটি সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক বীজ বপণ হচ্ছে। বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে। আজকে আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে সিলেবাস ও কারিকুলামে পরিবর্তন আনা দরকার। সরকার সেটির চেষ্টাও করছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শক্তি সোচ্চার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ তারা আদৌ জানেন না এই সিলেবাসের ভেতরে কী আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিনের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অমিত কুমার দত্ত, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এসএম আবু বকর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।