কেক কাটা, অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তৃতা আর সঙ্গীতানুষ্ঠানসহ নানা আয়োজনে উদযাপিত হল নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত অনলাইন পত্রিকা বিডিইয়র্কের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
সোমবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন নিউইয়র্কের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। ছোট, বড় সব বয়েসী মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানস্থলে এক আনন্দঘন পরিবেশের তৈরি হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় স্বনামধন্য সাংবাদিক আদিত্য শাহিনের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। তিনি উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বিডিইয়র্কের যাত্রার প্রেক্ষাপট সাবলীলভাবে, শ্রুতিমধুর করে তুলে ধরেন।
এরপর বহ্নিশিখা সঙ্গীত একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট সবিতা দাসের নেতৃত্বে শিল্পীরা পরিবেশন করেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত। জাতীয় সঙ্গীত শেষে তারা পরিবেশন করেন সুর্যোদয়ে তুমি, সুর্যাস্তেও তুমি গানটি। এরপর অনিন্দিতা ভট্টাচার্যের নৃত্য অতিথি ও দর্শকরা প্রাণভরে উপভোগ করেন। বহ্নিশিখার সঙ্গীত একাডেমীর পরিবেশনাকে সবাই করতালিতে অভিনন্দন জানান।

এরপর অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিডিইয়র্কের সম্পাদক শাহ ফারুক রহমান। উপস্থিত সুধীকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা মহামারি ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ক্রান্তিকালে ২০২০ সালের নভেম্বরে আত্মপ্রকাশ করে বিডিইয়র্ক অনলাইন পত্রিকা। আপনাদের সমর্থনে এটি আজ ৩য় বর্ষে পা ফেলেছে। শাহ ফারুক বলেন, আমি আশা করি সামনের দিনগুলোতে ও আপনাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
এরপর শুভেচ্ছা বক্তৃতায় অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এই পর্ব পরিচালনা করেন বিডিইয়র্ক সম্পাদক শাহ ফারুক রহমান। এ সময় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. এম মনিরুল ইসলাম সত্য ও বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, আপনাদের সংবাদ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বিডিইয়র্ক’র সাফল্য কামনা করেন। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রবাসী বাংলাদেশীদের সব ধরণের সেবা দিতে প্রস্তুত।
অনুষ্ঠানের সম্মানীত অতিথি প্রবীণ ডেমোক্রেট নেতা মোর্শেদ আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ করতে আপনারা ভোটার হিসেবে নিজের নাম রেজিষ্ট্রেশন করুন ও ভোট দিতে কেন্দ্রে যান। তিনি বলেন, আমি আশা করি বিডিইয়র্ক এক সময় এর ৫০বছর পূ্র্তি উদযাপন করবে।
স্টেট সিনেটর জন ল্যু বলেন, মিডিয়া গণতন্ত্রের ভিত্তি। প্রতিটি সংবাদ সমাজে গুকত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ সময় সংবাদ প্রদানে দায়িত্বশীল ভূমিকার উপর গুরুত্বারোপ করেন জন ল্যু। তিনি বলেন, বিডিইয়র্ক ২য়, ১০ম, ২০তম, ৩০ তম নয়, এটি ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করুক, আজকের দিনে সেই কামনা করছি।
এরপর বিডিইয়র্ককে স্বাগত জানান অনুষ্ঠানের সম্মানীত অতিথি ও বিডিইয়র্ক’র প্রতিষ্ঠাকালীণ উদ্বোধক স্টেট এসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার। তিনি তার ভাষণে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, আমি জেনেছি ১৯৭১ সালে সেখানে কী ঘটেছিল। বাংলাদেশ কমিউনিটি নিয়ে তার উচ্ছাস প্রকাশ করেন জেনিফার রাজকুমার।
উল্লেখ্য, অনলাইন পত্রিকা বিডিইয়র্কের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেছিলেন এসেম্বলিওম্যান জেনিফার রাজকুমার।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির পক্ষে ফার্স্ট সেক্রেটারি নূরে এলাহী মিনা বলেন,মিডিয়া সমাজের দর্পন। আর মিডিয়াই পারে সত্য প্রকাশ করতে। আমাদের জীবনে এর গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেন,এই প্রবাস জীবনের বাস্তবতায় একটি গণমাধ্যম চালানো এত সহজ কাজ নয়। কিন্তু আমাদের কমিউনিটির সাংবাদিকরা এই কঠিন কাজটি করে যাচ্ছেন। তিনি বিডিইয়র্ক কে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, সব রাজনৈতিক দল ও কমিউনিটির অধিকাংশ সংগঠনের খবর পরিবেশন করে বিডিইয়র্ক এর আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। আমি এই অনলাইন পত্রিকার শুভ কামনা করছি।
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামসের এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ফাহাদ সোলায়মান বলেন, বিডিইয়র্ক সম্পাদক প্রতিটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সংবাদ প্রকাশ করে কমিউনিটির প্রতি তাঁর দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছেন। আমরা সব সময় তার সঙ্গে আছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও মুক্তিযুদ্ধ-৭১’র সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রতিদিন ইউএসএ’র নির্বাহী সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার বলেন,বিডিইয়র্ক সম্পাদক শাহ ফারুক প্রতিটি সংবাদই আপডেট করছেন। এতে বাংলাদেশ কমিউনিটি উপকৃত হচ্ছে। এ সময় তিনি উপস্থিত সবার সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রবীণ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী বলেন, বিডিইয়র্কের জন্মদিনে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা এর সম্পাদক শাহ ফারুকের শুভ কামনা করছি।
ডেমোক্রেট ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ এটর্নী মঈন চৌধুরী বলেন, মাত্র ২ বছরে বিডিইয়র্ক সব দল, মতের মানুষের মন জয় করেছে। আজকে এখানে সবার উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করে। আমি এই অনলাইন পত্রিকার শুভ কামনা করছি।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শাহ মাহবুব, তৃনিয়া হাসান, মার্শালসহ অনেকে। সবশেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।