দুই দিনব্যাপী একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি (আইআরসি)।
১৯ এবং ২০ ফেব্রুয়ারি প্রদর্শনীটি রাজধানীর গুলশান-২ এ অবস্থিত ‘বে এজওয়াটার’ এর এজ গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হবে। সবার জন্য উন্মুক্ত এই প্রদর্শনী চলবে ১৯ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
মূলত ছবির মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় জনগণের সংগ্রাম ও সমস্যাগুলো নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার মাধ্যমে দাতা সংস্থা, বিশ্ব নেতা এবং নীতিনির্ধারকদের নজরে পুনরায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে আইআরসি এই আয়োজন করেছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সমস্যাটি সময়ের সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বের তালিকায় পিছিয়ে গেছে, ফলে তৈরি হয়েছে তহবিল সংকট, পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার আশা নিয়ে প্রতিনিয়ত অপেক্ষা করছে। রোহিঙ্গা আগমন এবং অবস্থান শুধু তাদের জন্যই নয় বরং বাংলাদেশের স্থানীয় জনগণের জন্যও নানাবিধ প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। যা উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং অবকাঠামোগত পরিস্থিতির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।
দীর্ঘদিন ক্যাম্পের পরিবেশে অবস্থানের কারণে রোহিঙ্গাদের খাদ্য সংকট নিরসনে নির্ভর করতে হচ্ছে দাতা সংস্থাগুলোর ওপর। সাম্প্রতিক সময়ে তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর খাবারের জন্য বরাদ্দ অর্থের পরিমাণ কমে যাওয়া ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও এই জনগোষ্ঠীর জন্য নেই কোন জীবিকার সুযোগ, শিশুদের জন্য নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা, এমনকি মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে প্রদান করা চিকিৎসা সেবাও জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। যার ফলে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা (যেমন স্ক্যাবিস) এই জনগোষ্ঠিতে বিদ্যমান রয়েছে।
এর পাশাপাশি দুর্গম পরিবেশে ক্ষুদ্র পরিসরে বাঁশের তৈরি ভঙ্গুর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে একই সাথে অনেকগুলো মানুষের বসবাস প্রতিনিয়ত বন্যা, ভারী বর্ষণ, পাহাড়ধস এবং অগ্নিকাণ্ডের মত দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রেখেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে।
এই প্রদর্শনীতে উঠে আসবে তাদের সংগ্রাম, নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ, সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার শক্তি এবং সবকিছু নিয়ে টিকে থাকার লড়াইয়ের গল্পগুলো।
‘থ্রু দ্য লেন্স অফ হোপ: আনফোলডিং দ্য রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ নামের এই দুইদিন ব্যাপী প্রদর্শনীটির প্রথম দিনে শুভ উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মহিব্বুর রহমান, এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউএসএইড বাংলাদেশ মিশন ডিরেক্টর রিড জে এইকিলম্যান এবং ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ প্রতিনিধি সুমবুল রিজভি।
প্রদর্শনীর দ্বিতীয় দিনে আয়োজন করা হয়েছে আলোচনা সভা। এতে অংশ নিবেন দাতা সংস্থার প্রতিনিধিসহ মিডিয়া এবং শিক্ষা অঙ্গনের ব্যক্তিগণ, যেখানে মূল বিষয় থাকবে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অবস্থান এবং সমস্যা। প্রশ্নোত্তর এবং সাক্ষাতকারের জন্য উপস্থিত থাকবেন আইআরসির কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিনা রহমান এবং এডভোকেসি অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান সাবিরা সুলতানা নুপুর।