জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মওলানা ভাসানী হলে সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতার মারধরের শিকার হয়ে আবাসিক হল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ১৫জন শিক্ষার্থী । ভুক্তভোগীরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।
সোমবার ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, হলটির দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ওই ১৫ জন শিক্ষার্থীর ২১১, ২১২, ২১৩ ও ২১৭ নম্বর কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে। এছাড়া কক্ষগুলোর চেয়ার টেবিল অগোছালো অবস্থায় রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট রাতে একটি অটোরিকশা মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের দুই কর্মীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলে থাকা একজন মাথায় আঘাত পান এবং মোটরসাইকেলটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেসময় ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলের বন্ধুদের ডেকে অটোরিকশাটি আটক করে চালকের কাছে চিকিৎসার ব্যয়ভার এবং মোটরসাইকেলের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পরে অটোরিকশার মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের কর্মকর্তা মো. খাইরুল ঘটনাটি মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগের নেতাদের জানান।
এ ঘটনায় সিনিয়র নেতা (হলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী) নিহান নিবিড় পলিটিকাল ব্লকে জুনিয়র কর্মীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে তিনি এক কর্মীকে মারধর করেন। পরে এ ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের ১৫ জন কর্মী তাদের কক্ষ ছেড়ে দেন। এরপর থেকে তারা আর ওই হলের কোন কক্ষে ওঠেননি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, এর আগেও হলের এক নেতা তাদের একজনকে মারধর করেন। তখনও পলিটিক্যাল ব্লক ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন আমরা সবাই তৃতীয় বর্ষে পড়ি। এ বয়সে এসে যদি রাজনীতি করে নেতাদের কাছে মার খেতে হয়, তাহলে রাজনীতি করে কী লাভ? তাই আমরা হল ছেড়েছি।
মো. খাইরুল বলেন, ওইদিন অটোরিকশা চালক বিষয়টি আমাকে জানালে আমি ভাসানী হলে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে দুর্ঘটনার জন্য ক্ষমা করে দিতে বলি। এরপর আর কোনো কিছু জানি না।’
অভিযোগ অস্বীকার করে নিহান নিবিড় বলেন, জুনিয়রদের মারধরের কোন ঘটনা ঘটেনি। হলে অনেক সময় সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে মান-অভিমান হয়ে থাকে। হয়ত সেই অভিমান থেকে তারা কক্ষ ছেড়ে দিয়েছে। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।
বিজ্ঞাপন
মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হোসাইন মোহাম্মদ সায়েম বলেন, হলে ছাত্রলীগ কাউকে মারধর করেছে কিনা তা তার জানা নেই। আর কোন কক্ষ ফাঁকা থাকলে সেখানে দ্রুত গণরুম থেকে শিক্ষার্থীদের উঠানো হবে।
বিজ্ঞাপন